মুম্বই : একমাত্র ছেলে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত। ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ২.১ মিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১৬ কোটি টাকার কাছে। একজন গরিব মানুষের কাছে সারাজীবন পরিশ্রম করেও যা যোগাড় করা অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু নিজের দুধের শিশুকে বাঁচাতে সেই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন হায়দরাবাদের দম্পতি যোগেশ গুপা এবং তাঁর স্ত্রী ।

জানা গিয়েছে, যোগেশ গুপ্তার একমাত্র ছেলে ২ বছরের অয়ান্নাস বিরল জেনেটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছে। চিকিৎসার জন্য ভরতি রয়েছে হাসপাতালে। বিরল এই রোগের চিকিৎসার জন্য একটি ইঞ্জেকশনের দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকার কাছে। ডাক্তার মুখে যা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে হায়দরাবাদের ওই দম্পতির। কিন্তু নিজেদের একমাত্র সন্তানকে বাঁচাতে সর্বস্ব উজাড় করে দিলেও ১৬ কোটি তো দূরে থাক ১ কোটি টাকাও জোগার করা অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা হাল ছেঁড়ে দেননি। সেই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন ওই দম্পতি।

জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের এক দম্পতিদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ছেলের চিকিৎসার জন্য লোকজনের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে যোগার করে ফেলেছেন বিশাল অঙ্কের ওই টাকা। গুপ্তা দুঃখে সমব্যথী হয়ে যে যেভাবে পেরেছেন তাঁদের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। আর তাতেই নিজেদের সন্তানকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিতে আশার আলো দেখছেন ওই দম্পতি।

জানা গিয়েছে, দু বছরেরর ছোট্ট অয়ান্নাস জন্মের সময় থেকেই জিনগত রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারি পরিভাষায় যে রোগের নাম (SMA)। গোটা বিশ্বেই এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বিরল। এটি শিশুদের জিনকে আক্রমণ করে। পেশীর কার্যক্ষমতা হ্রাস করে। বাচ্চাদের দুর্বল করে দেয়। সারা পৃথিবীতে প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ১ জনকে এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। বিরল এই রোগে আক্রান্ত হলে শিশুর আয়ু থাকে মাএ কয়েক বছর। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাও থাকে না।

হায়দরাবাদের অয়ান্নাসও একই রোগে আক্রান্ত। এই রোগের চিকিৎসা বলতে একটি মাত্র ইঞ্জেকশনের প্রয়োগ। যা ত্রুটিযুক্ত জিনগুলোকে সাধারণ জিনের সঙ্গে প্রতিস্থাপন করে এবং ধীরে ধীরে রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। ২০১৯ সালে মার্কিন ‘এফডিএ’ দু বছরের কমবয়সী শিশুদের জন্য এই থেরাপির প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। এই বিষয়ে মুম্বইয়ের পিডি হিন্দুজা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ নীলু দেশাই বলেন, ” প্রতি বছর নোভার্টির মাধ্যমে একটি লটারির ব্যবস্থা করা হয়। সেই লটারিতে মোট ১০০ টি বাচ্চাকে বিনামূল্যে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তারমধ্যে ভারত থেকে ১০ জন শিশুকে এই ইঞ্জেকশন থেরাপি দেওয়া হয়।

এই বিষয়ে অয়ান্নাসের বাবা যোগেশ গুপ্তা বলেন, ”আমার ছেলের মাত্র ছয় মাস বয়স থেকে লক্ষ্য করি তার বৃদ্ধি অস্বাভাবিক এবং মাথা নাড়াচাড়া করতেও সমস্যা হচ্ছে। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভরতি করা হলে ছেলের এই বিরল রোগের বিষয়টি জানতে পারি৷ এখনও পর্যন্ত সে শ্বাসকষ্ট এবং পেশির দুর্বলতায় ভুগছে।”

তিনি আরও বলেন, ” এই রোগের চিকিৎসায় যে পরিমাণ টাকার দরকার তা আমাদের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করেও পাওয়া যাবে না।”

এই বিষয়ে হায়দরাবাদের রেইনবো চিলড্রেনস হাসপাতালের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ডঃ রমেশ সোলঙ্কি বলেন, ” তিনি বছরে প্রায় চার থেকে পাঁচটি বাচ্চাকে এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখেছেন। ব্যয়বহুল এই রোগের চিকিৎসা করতে না পারায় সহযোগী চিকিৎসা হিসেবে ফিজিওথেরাপি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও তাতে খুব একটা সাফল্য পাওয়া যায় না।”

অয়ান্নাসের চিকিৎসার জন্য এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন এনজিও এবং অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে দুকোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

সিনেমার বড় পর্দা থেকে টেলি পর্দার জগতে কতটা সম্মান পাচ্ছেন মেয়েরা? জানাবেন মিডিয়া টিচার অনুজা বাগচী।