পিকে ‘অন্য ভূমিকা’য় তৃণমূলে, একুশের নির্বাচনে কি ফায়দা লুটতে পারবেন মমতা

প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাকের তৃণমূলে একেবারেই ভিন্ন ভূমিকা পালন করছেন। তার ফলে একুশের নির্বাচনের আগে পক্ষে-বিপক্ষে অগণিত প্রভাব পড়েছে। একদিকে পিকের টিম দলকে অক্সিজেন সরবরাহ করেছে, অন্যদিকে অপ্রত্যাশিত হলেও টিএমসি নেতাদের একাংশকে ক্ষুব্ধ করে দিয়েছে। তার ফলে তৃণমূল কতটা ফায়দা লুটতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যায়!

নরেন্দ্র মোদীর দলের পরামর্শদাতাও ছিলেন পিকে

প্রশান্ত কিশোর একটা সময়ে নরেন্দ্র মোদীর দলের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন। ২০১২ সালের গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রভূত সফল্যও এনে দিয়েছিলেন বিজেপিকে। গুজরাতে প্রশান্ত কিশোর মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে এবং অফিস থেকেই কাজ করেছিলেন।

নীতীশ কুমারের দলের পদাধিকারী হয়ে উঠেছিলেন

আবার বিহারে নীতীশ কুমারের সঙ্গেও ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। এই ক্ষেত্রেও তিনি দলের হয়ে কৌশল তৈরি করেছিলেন, নীতিমালার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং প্রচার পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন। নীতিশ কুমারের দল জেডিইউ-এর সহ-সভাপতিও করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু দলের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডে বা সংগঠনে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না।

তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রশান্ত কিশোর

প্রশান্ত কিশোর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে তৃণমূলের দায়িত্ব নিয়েছেন ২০১৯-এর জুন মাসে। এরপর জুলাই, আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে তৃণমূলের ব্লক স্তরের সাংগঠনিক পরিবর্তনে প্রশান্ত কিশোরের টিমের ভূমিকা ছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ব্লক, জেলা ও রাজ্য-পর্যায়ের নেতৃত্বের পরিবর্তনও তাঁর পরিকল্পনাপ্রসূত বলে মনে করে রাজনৈতিক মহলের বৃহদাংশ।

প্রশান্ত কিশোরকে ব্যবহার তৃণমূলের সংগঠনেও

প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের দায়িত্ব নিয়েই দলটির স্থানীয় নেতাদের কর্মকাণ্ড এবং জনসাধারণের সম্মুখে তাঁদের ভাবমূর্তি সম্পর্কে জানতে জসমযোগ কর্মসূতি গ্রহণ করে। তৃণমূলও প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকের কাছে ইনপুট চেয়েছিল, তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সাংগঠনি্ক রদবদলের ব্যাপারে।

সাংগঠনিক রদবদলের পরে যাঁরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে

ফলস্বরূপ সাংগঠনিক রদবদলের পরে যাঁরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন, তাঁরা প্রশান্ত কিশোরের দলকেই দায়ী করেন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েকজন নেতা প্রশান্ত কিশোরের টিমের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্যও রেখেছিলেন। টিএমসির একাধিক জেলা পর্যায়ের নেতাদের মতে, আই-প্যাকের সাথে যুক্ত কমপক্ষে দুই থেকে তিন জন ব্যক্তি রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনে সক্রিয় রয়েছেন।

জনপ্রতিনিঝিজের মূল্যায়নে ভূমিকা প্রশান্ত কিশোরের

দলের নেতারা জনসাধারণের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য তা মূল্যায়ন করা থেকে শুরু করে, কতটা জনসংযোগ জনপ্রতিনিধিদের আছে, কোন অঞ্চলগুলিতে আরও বেশি করে জনসংযোগ বাড়াতে হবে, কোথায় সমস্যা সমাধান জরুরি, সে ব্যাপারে পরামর্শ দেয়। তারপর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাবহার করে কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, সে ব্যাপারেও নানা পরামর্শ প্রদান করে।

তৃণমূল দলের সংগঠনে শৃঙ্খলা আনতে সক্ষম

আই-প্যাকের অন্যতম প্রধান ভূমিকা ছিল দলের অন্দরে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার উন্নীত করা। তার পাশাপাশি তারা নজরদারিও চালিয়েছে। তাতে খানিক উপকারও হয়েছে, আবার অপকারও হয়েছে। রাজ্যসভার এক তৃণমূল সাংসদের মতে, তৃণমূল দলের সংগঠনে শৃঙ্খলা আনতে সম্ভবপর হয়েছে। আবার শক্তিও হ্রাস পেয়েছে ক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিদের দলবদলে।

'আন্দোলন করানো হচ্ছে, চাকরি দেওয়া হচ্ছে, এর পিছনে সুক্ষ্ম রাজনীতি', দিলীপ ঘোষের নিশানায় বাম-তৃণমূল

More PRASHANT KISHOR News