কম পয়সার চাকরি নেব না, শর্ত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব মিদ্দার স্ত্রীর

মইদুল ইসলাম মিদ্দা ঘটনায় উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। পুলিশের লাঠির আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে ডিওয়াইএফআই কর্মী, এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি বামেদের। যদিও নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে পালটা দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এই বিষয়ে সঠিকভাবে কিছুই জানানো যাবে না। তবে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুর খবর আসতেই ভেঙে পড়েছেন মিদ্যার স্ত্রী। কীভাবে সংসার চলবে তা ভেবেও কুল পাচ্ছেন না তিনি। এই অবস্থায় সরকারের তরফে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পরিবারের একজনকে।

চাকরি নেব, তবে বেঁধে দিয়েছেন শর্ত

নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চাইলে পরিবারের একজনকে চাকরির দেওয়ার ব্যবস্থা সরকার করবে। এমনকি, টাকাও দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে মইদুলের স্ত্রী বলছেন, চাকরি নেব। তিনটে মেয়ে। মেয়েদের পড়াশোনা আছে। আর আমি, বিধবা শাশুড়ি আছে। সংসার যেন ভালভাবে চলে। যেন বড় চাকরি দেয়। যেন খেতে-পরতে পারি। যে যাওয়ার সে চলেই গেছে। সংসারটা যেন ভালভাবে চলে। আমি চাকরি নেব। তবে তাঁর শর্ত একটাই! সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে কম পয়সার চাকরি তিনি নেবেন না।'

তথ্য না জানানোর অভিযোগ!

ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্দা বাঁকুড়ার কোতুলপুরের গোপীনাথপুর অঞ্চল ডিওয়াইএফআই-এর ইউনিট সেক্রেটারি ছিলেন। চালাতেন টোটো। আর তাঁর রোজগারেই চলত সংসার। বাড়িতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী আর ছোট্ট দুই মেয়ে। মা মরা ১২ বছরের ভাগ্নিকেও মানুষ করছিলেন তিনি। হঠাত মিদ্যার প্রয়াণের খবরে বাড়িতে নেমে এসেছে আধার। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে চাকরির প্রস্তাব কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। একদিকে চাকরি নেওয়ার কথা বলেছেন অন্যদিকে বামেদের বিরুদ্ধেও তথ্য না জানানোর একপ্রকার অভিযোগ করেছেন মইদুল ইসলাম মিদ্যার স্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, 'ও কলকাতার নার্সিংহোমে ভর্তি, এটা আমাদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোন নার্সিংহোমে ছিল, সেটা জানি না।' মা তহমিনা বিবি কাঁদতে কাঁদতেও জানিয়েছেন, ফোন করে বলে, দাদা আর নেই। পুলিশ মেরে দিয়েছে। একটা হাসপাতালে দিয়েছিল, সেখানে চিকিৎসা হয়নি। ছেলে একমাত্র রোজগেরে, এখন কীভাবে সংসার চলবে? সরকারি সাহায্য না মিললে পথে বসতে হবে।'

আঘাতের চিহ্ন ছিল না, বলছে পুলিশ

তবে মইদুল ইসলাম মিদ্দার মৃত্যু ঘিরে দানা বাঁধছে রহস্য। বামেদের দাবি, পুলিশের লাঠির আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে যুবনেতার। তবে পালটা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, পা ছাড়া মৃতদেহে বাহ্যিক কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ফলে মৃত্যু নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। যদিও এখন ভরসা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের উপরেই। যদিও ইতিমধ্যে মইদুল ইসলাম মিদ্দার মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছে নেতৃত্ব এবং পরিবারের হাতে।

More POLICE News