কলকাতা : নবান্ন অভিযানে এসে আহত সিপিএম কর্মীর মৃত্যু নিয়ে রাজ্য সরকারকে “খুনি”-র সরকার বলে তীব্র সমালোচনা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। সুজনবাবুর পাশাপাশি এই ঘটনায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে একই ভাবে স্বৈরাচারী বলেই প্রতিক্রিয়া জানান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। এই ঘটনায় রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ ক্রমেই চড়ছে।

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এই মৃত্যুকে ‘খুন’ বলে যেখানে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে এই একই ইস্যুতে স্বৈরাচারী বলে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান।

এই প্রসঙ্গে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্য্যকান্ত মিশ্র বলেন, “নবান্ন অভিযানে আন্দোলনকারীদের ওপরে পুলিশি বর্বরতায় শহীদের মৃত্যুবোরন করেছে মঈদুল ইসলাম মিদ্যা শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের কর্মীকে যেভাবে প্রাণ দিতে হল তাকে ধিক্কার জানানোর কোনও ভাষা নেই।”

সুজনবাবু বলেন, “এটা তো খুন। নবান্নের সাহস হল না ছাত্র যুবদের কথা শোনার। তাঁদের ওপর বেধড়ক আক্রমণ করা হয়। গরিব মানুষকে নিয়ে লড়াই। জলজ্যান্ত একটা ছেলেকে লাশ বানিয়ে দিল, আর কত লাশ চাই সরকারের? ক্ষমতা দেখিয়ে খুন করেছে।”

আব্দুল মান্নান বলেন, “গণ আন্দোলন দমন করতে গিয়ে যা দেখাল স্বৈরাচারী সরকার তাকে ধিক্কার জানানোর কোনও ভাষা নেই। আরও অনেকেই আহত হয়েছেন, কেউ কেউ হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন। এই ছেলেটি কোনওরকম অরাজকতা করেনি, প্রশাসনের কারোর গায়ে হাত তোলেনি, কী উত্তর দেবে সরকার? নবান্ন অভিযানের অধিকার আছে সবার। কিন্তু এভাবে একজন নিরীহ মানুষের প্রাণ চলে গেল, কে জবাব দেবে?”

এদিকে বামেদের অভিযোগ, নবান্ন অভিযানের দিন ওই যুব কর্মী মইদুলকে ব্যাপক মারধর করে পুলিশ । সেই মারধরের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা, ৩১ বছরের মইদুল ইসলাম মিদ্যা। মইদুল নিজে সিপিএম-এর কোতোয়ালি লোকাল কমিটির সদস্য। আহত হওয়ার পর মইদুলকে প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল সিপিএম নেতা এবং চিকিত্‍সক ফুয়াদ হালিমের ক্লিনিকে।

দেহে লাঠির আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে অভিযোগ করেন ফুয়াদ হালিম। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি, জল জমে ফুসফুসেও। মারধর ছাড়া মৃত্যুর অন্য কারণ নেই।”

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে ক্যামাক স্ট্রিটের এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় মইদুলকে । রবিবার রাতেই মঈদুলের অবস্থার অবনতি হয়। সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ ওই বাম যুব কর্মীর মৃত্যু হয়। এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি সম্পর্কে তাদের কিছু জানা নেই। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এর আগেও বাম যুব কর্মীদের আন্দোলনে ২০১৩ সালের ৩ এপ্রিল এসএফআইয়ের আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিতে এসে পুলিশের হেফাজতে বাসে করে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে জখম হন সুদীপ্ত গুপ্ত। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়৷ পুলিশের মারেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে তখন অভিযোগ করে সুদীপ্তর পরিবার ও এস এফ আই। পুলিশ অবশ্য তা মানেনি। মানবাধিকার কমিশনে জমা দেওয়া রিপোর্টে পুলিশ জানিয়েছিল, ভিড় বাসে ঝুলে যাওয়ার সময় রাস্তার ধারের লাইটপোস্টে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় সুদীপ্ত গুপ্তর। যদিও কোনও সাক্ষী এখনও কমিশনে এই যুক্তির স্বপক্ষে মত দেয়নি। সেই বাসের চালক সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেছিলেন, বাসে খুব ভিড় ছিল। সামনের গেটে অনেক মানুষ ঝুলছিল। ওই ছাত্র পিছনের দরজায় ছিলেন। সেই দরজায় কী ঘটেছে সামনের দরজায় ভিড় থাকায় তা চালকের আসনে বসে দেখা সম্ভব হয়নি।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

Work from Home এর বাস্তব ছবি নিয়ে আলোচনায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ দেব।