প্রসেনজিৎ চৌধুরী: সবকিছু ঠিক, তবে বিড়ালের গলায় এখনও ঘণ্টা বাঁধা যায়নি। ফলে বঙ্গ রাজনীতির তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী মহাজোট এখনও জমাট বাঁধেনি। বাম-কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) জোট জটের মূলত বিবাদ আসন সমঝোতা।
বঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকীর কাঁটার মতোই অসমেও কংগ্রেস নেতৃত্বে চলা মহাজোটের কাঁটা বদরুদ্দিন আজমল তথা তাঁর দল এআইউডিএফ। দক্ষিণ এশিয়ার ‘আতর সম্রাট’ কিছুতেই আসন ভাগাভাগির বখরা মানতে রাজি নন।
পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে একুশের নির্বাচনের অন্যতম নজর সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটারদের অবস্থান। দুই রাজ্যের মধ্যে অসমে বিজেপি সরকার। আর পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটে উল্কার মতো উত্থানে শাসক তৃণমূলের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলছে বিজেপি। সেই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিধায়কদের লাগাতার দলত্যাগ বিজেপির পালে হাওয়া দিচ্ছে।
রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজ বিজেপির উত্থানে ভীত। এমনই বার্তা দিয়েছেন ফুরপুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। তিনি জনসভা থেকে মুসলমান সমাজকে বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী মঞ্চে শরিক হতে আহ্বান জানাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের আমলেই বিজেপির বাড়বাড়ন্ত।
অসমেও সংখ্যালঘু বাংলাভাষী মুসলিম ভোটব্যাংক নিয়ে মশগুল কংগ্রেস -এআইইউডিএফ সহ বামেদের মহাজোট। এনআরসি ও সিএএ ইস্যুতে বরাক উপত্যকার বাঙালি অধ্যুষিত কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ এলাকাবাসীর কাছেও বিজেপি ভীতি বেড়েছে। তবে বরাকে কংগ্রেস ও আজমলের জোটে জটে বিপর্যয় আসতে পারে এমনই আশঙ্কা বিরোধী শিবিরে। কারণ, দুই দলেরই মুসলিম ভোট ব্যাংক ভাগ হয়ে যাবে।
পশ্চিমবঙ্গেও বাম কংগ্রেস ও আব্বাসের জোট কার্যকর না হলে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ পরস্পর ভাগ হতে পারে। আব্বাস সিদ্দিকীর দাবি ৬০-৬৫টি আসন। এতেই চিন্তায় রাজ্য বামফ্রন্ট ও প্রদেশ কংগ্রেস। জোট না হলে মুসলমান ভোটার প্রভাবিত দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুরে ১০০টির বেশি আসনে প্রভাব স্পষ্ট।
একইভাবে জোট না হলে অসমের বরাক উপত্যকায় সংখ্যালঘু ভোটেও কাটারির কোপ পড়তে চলেছে। এখানকার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৪৫টি আসনেই কংগ্রেস ও এআইডিইউএফ পরস্পর প্রচার শুরু করায় ফাটল চওড়া হচ্ছে।
বদরুদ্দিন আজমল জানিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় থেকে গেলে রাজ্যের মুসলিম মহিলাদের আব্রু থাকবে না। অসম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্যের চরিত্র ধংস করছে। তাই মহাজোট। কিন্তু জটের আসন ভাগের হিসেবে সব ওলটপালট। দু পক্ষই মাইক নিয়ে প্রচারে।
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কাছে আইএসএফ চেয়ারম্যান আব্বাস সিদ্দিকীর জোট চিঠি গেলেও আসন ভাগাভাগির হিসেব স্পষ্ট হয়নি। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ধোঁয়াশায়।
বরাক নদী হোক বা গঙ্গা, বঙ্গ-অসমের ভোট যুদ্ধে জোটের জটে সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজ আড়াআড়ি ভাগ হওয়ার মুখে।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.