শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত : উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের জেরে বড় ভূমিকম্পের মুখে পড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম,অসম,ভুটান,মায়ানমার, বাংলাদেশে। ভূবিজ্ঞানী সুজিব কর এই ভূমিকম্পের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। এই ভূমিকম্পের তীব্রতা বেশিই থাকবে এবং এর ফলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা রয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি দিল্লির ভূমিকম্প হওয়ার অন্যতম কারণ উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও তার ফলে হিমালয়ের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া।
ভূবিজ্ঞানী সুজিব কর জানিয়েছেন, “ভারত অবস্থান করছে ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেটের ওপর। উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে এই প্লেটের চ্যুতি ঘটেছে। তবে উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয় হওয়ারই ছিল। ওখানে জলাধার তৈরির জন্য প্রতিনিয়ত ডিনামাইট চার্জ করা হয়েছে। তার ফলে ওখানকার “নিস্” এবং “সিষ্ট” নামের শিলায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। এই শিলাগুলি বেশিমাত্রায় আবহবিকার প্রাপ্ত হয়। এই আবহবিকার দীর্ঘদিন ধরে চলছে। মধ্য হিমালয়ের যেখানেই যত শিলা আছে তারা স্বাভাবিকভাবেই একটু দুর্বল। তার ওপর ধারাবাহিকভাবে ডিনামাইট চার্জ করার ফলে উদ্ভুত কম্পন এই শিলাগুলি সহ্য করতে পারেনি। আর এই ভূমিভাগের ওপর দুটো জলাধার তৈরী করে এবং ডিনামাইট ফাটানোর ফলে এখানকার ভূমিভাগের শক্তি ক্ষয় হচ্ছিল। তার ওপর বিপর্যয়ের আগে থেকেই ধারাবাহিকভাবে এই এলাকায় তুষারপাত চলছিল। তাই এই বিপদ হতে পারে সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। কিন্তু প্রশাসন সেদিকে নজর দেয়নি। তাই এক রাতের মধ্যেই এখানকার হিমরেখা প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার নিচের দিকে নেমে আসে। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে হিমবাহটাই ভেঙে পরে। যার ফলে সমগ্র ভূমিভাগের ওপর দিয়ে এই ভেঙে পড়া হিমবাহ প্রবাহিত হয়ে যায়। তার ওপর এখানে দুটো জলাধার থাকার ফলে সেই জলাধারের ওপর দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার ফলে জলাধারের প্রাচীর ফেটে গিয়ে বিপর্যয় আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে প্রচুর জল ও কাদা প্রবাহিত হয়ে কর্ণপ্রয়াগ, যোশীমঠ ও চামোলি এই তিন জায়গা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
সুজিববাবু বলেন, “এই ধরণের ভূমিভাগের ক্ষয়ের ফলে যে ভূমিকম্প হয় তার প্রমাণ আগেই পাওয়া গেছে। ২০১৩ সালে কেদারনাথের বিপর্যয়ের পরের দিনই পাকিস্তানে ভূমিকম্প বড় রকমের ভূমিকম্প হয়েছিল। এই ভূমিকম্পের ফলে আরব সাগর থেকে আইল্যান্ডের মতো একটা ভূখণ্ড উঠে আসে। এবারেরও উত্তর-পশ্চিম ভারতে যে ভূমিকম্প হয় তার পিছনে উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় অন্যতম কারণ। উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয়ের ফলে হিমালয় তার ভারসাম্যও কিছুটা হারিয়েছে। এছাড়াও ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেটের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে লয়াল্টি আইল্যান্ড এবং ভানুয়া আইল্যান্ড। এবারের উত্তর-পশ্চিম ভরতের ভূমিকম্পের আগের দিন এই দুই আইল্যান্ডে পর পর বড় রকমের ভূমিকম্প হয়। তাই ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেটের দক্ষিণ প্রান্তে ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটার ফলে উত্তর প্রান্তের প্লেটের সঞ্চালন হয়। এর পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের ফলে হিমালয়ের ভারসাম্য আগেই নষ্ট হয়েছিল । এরই ফলে তাজিকিস্তানে ভূমিকম্প হয়। তবে এই ভূমিকম্পের ফলে দিল্লির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারতো। কিন্তু সেটা হয়নি তার কারণ তাজিকিস্তানের ভূমিকম্পের ১০ মিনিট পরে চিনে একটি ভূমিকম্প হয়। যার ফলে কাজিকিস্তানের ভূমিকম্পের তরঙ্গের অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গিয়ে দিল্লিকে বাঁচিয়ে দেয়। তবে এর ফলে হিমালয়ের পাত সংস্থানের প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে। এর ফলে আবার ১৫ ফেব্রুয়ারি ফিলিপিন্সে ভূমিকম্প হয়। আর সেই ভূমিকম্পের ফলেই উত্তর-পূর্ব ভারতে আবারও বড় রকমের ভূমিকম্প হবে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম,অসম,ভুটান,মায়ানমার ও বাংলাদেশে।”
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.