আগরতলা: ভারতের বাইরে প্রতিবেশি দেশেও বিজেপির সরকার গঠনের পরিকল্পনা করেছেন অমিত শাহ। সেই সরকার হবে নেপাল ও শ্রীলংকায়। এমনই বিস্ফোরক দাবি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের। তাঁর এই দাবির পরেই ফের রাজনৈতিক মহলে ‘হাস্যকর’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অমিত শাহ ত্রিপুরা সফরে এসে নেপাল ও শ্রীলংকায় বিজেপি সরকার তৈরির বিষয়ে আলোচনা করে গিয়েছেন। ভারতে সর্বাধিক রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কমিউনিস্টদের দাবি তারা বিশ্বজোড়া রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন দেশে কমিউনিস্ট পার্টির সরকার চলছে। কিন্তু এখন বিজেপি বিশ্বের বৃহত্তম দল। আগরতলায় এসে অমিত শাহ বলে গিয়েছেন, নেপাল ও শ্রীলংকার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
বিপ্লব দেবের এমন দাবি, কূটনৈতিক স্তরে বিতর্ক তুলবে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা। যুক্তি হিসেবে উঠে আসছে, কোনও একটি সার্বভৌম দেশে কী করে ভারতের রাজনৈতিক দল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে?
কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে পরিচালিত হয় সেই দেশের প্রেক্ষিতে। সেরকম কোনও পদক্ষেপ নিতে চলেছে কি বিজেপি? উঠছে এমন প্রশ্ন।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের মন্তব্যের তীব্র কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন সিপিআইএম সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এমন পদক্ষেপ হলো মু়খ্যমন্ত্রীর বলা দেশগুলির অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতির উপর হস্তক্ষেপ। মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির জবাবদিহি করুক বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী।
প্রতিবেশি দেশে বিজেপির সরকার গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস। দলের সহ সভাপতি তাপস দাস জানান, ভারত কখনোই সাম্রাজ্যবাদী চিন্তায় বিশ্বাসী নয়। দুর্ভাগ্যবশত ত্রিপুরার মু়খ্যমন্ত্রী সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন। নেপাল ও শ্রীলংকা দুটি সার্বভৌম দেশ। কোনওভাবেই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।মুখ্যমন্ত্রীর দাবি জাতীয়তাবাদ বিরোধী। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বেফাঁস মন্তব্যের জন্য বারবার আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। এই কারণে বিজেপি হাস্যস্পদ হচ্ছে বলে অভিযোগ দলেরই নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের দাবি মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হোক দ্রুত। তা না হলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে রাজ্যে।
বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন বিজেপি বিধায়কদের একটি অংশ। তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ বলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহল জানিয়েছে। আরও অভিযোগ, বিদ্রোহী বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রী কে কুর্সি থেকে সরাতে ততপর।
সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহী বিধায়ক নেতারা দিল্লি গিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করে ক্ষোভ উগরে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দ্রুত বদলের আর্জি জানানো হয়। এর জেরে রাজ্য বিজেপির দুই শিবির স্পষ্ট। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব অন্যদিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা সুদীপ রায় বর্মণ। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিপ্লব দেবের সংঘাত ক্রমে বড়সড় ফাটল ধরাচ্ছে বিজেপি তে। এমনই দাবি দলেরই বহু নেতার। একাধিক বিধায়ক সোশ্যাল সাইটে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনে টানা দু দশকের বেশি সময় ধরে চলা বাম সরকারের পরিবর্তন হয়। ক্ষমতাচ্যুত হন মানিক সরকার। ক্ষমতায় আসে বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.