সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ ‘দলে থেকেও কাজ করতে পারছি না’। কিন্তু বিরোধী দলনেত্রী হয়েও সুষমা স্বরাজের প্রতি এখনও অসীম শ্রদ্ধা বর্তমান তাঁর বিরোধীদের। আজ সুষমা স্বরাজের জন্মদিন। তাঁকে স্বরণ করে বিরোধীরা বলছেন দলে থেকে কীভাবে কাজ করতে হয় তা শিখিয়ে গিয়েছেন সুষমা স্বরাজ। যেন বার্তাটা এমন যে, হঠাৎ যারা বাংলায় বিধানসভা ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে কাজ করতে না পারার অভিযোগ করছেন, তাঁদের অন্তত যে দলে যাচ্ছেন তাঁদের একসময়য়ের নেত্রীকে থেকে শেখা উচিৎ।

কি শিক্ষণীয়? বিরোধীরা বলছেন ‘সুষমা স্বরাজের থেকে শিক্ষণীয় যে কীভাবে কাজ করতে হয়’। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আদবানি-ঘনিষ্ঠ সুষমার সম্পর্ক প্রথমে মোটেই ভালো ছিল না। মোদী প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকেই আদবানীদের সাইডলাইনে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সুষমা নিজের কাজটুকু বুঝতেন। দায়িত্ব পেয়ে নিজের কাজ করে যেতেন। সময়ের সঙ্গে তাই মোদীর সম্পর্কের উন্নতি হয়েছিল। বাম দল নেতা রবিন দেব বলেন , ‘আমার সাথে ওনার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল। শুধু আমার সঙ্গে নয় বিরোধীদের সবার সঙ্গেই ওনার সুসম্পর্ক ছিল। নব্বইয়ের দশকে ওনার সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই প্রথম, তারপর থেকে যখনই দেখা হয়েছে নিজের আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন সুষমা স্বরাজ। আজ জন্মদিন বলে যে ওঁর সম্পর্কে ভালো বলতে হবে এমন কোনও বিষয় নেই। উনি চিরকালই ভালো’

এরপরেই তিনি বলেন , ‘ নরেন্দ্র মোদীর সরকার কটা ভালো কাজ করেছে তা হাতে গুনেও বলা যাবে না কিন্তু ঘটনা হল সুষমা স্বরাজ যেভাবে কাজ করতেন সেটাই আসল। ওই মন্ত্রিসভায় থেকেই কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন এবং সেটা তিনি করেছেন, তাই বিরোধী হলেও তাঁর প্রতি আমাদের কোনও বিরুপ ধারনা জন্মায়নি।’ কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। সঙ্গে শিক্ষিত, নম্র স্বভাবের এবং ভদ্র। তিনি সবসময়েই বিরোধীদের সম্মান দিয়েছেন। যখনই কোনও কাজের জন্য ওনার কাছে গিয়েছি উনি খুব মনোযোগ দিয়ে আমাদের কথা শুনতেন এবং সেই কাজ যাতে হয় সেই চেষ্টা উনি সবসময়েই করে গিয়েছেন।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন , ‘মন্ত্রী হিসাবেও উনি ব্যাপক সফল। কাজ করার ক্ষেত্রে ওনার কোনও অন্য মনোভাব ছিল না। বিরোধী হলেও এটা অনস্বীকার্য যে তাঁর কাজ শুধু দেশে নয় দেশের বাইরেও প্রশংসা পেয়েছে। তাই বিদেশের সঙ্গেও ওনার সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। উনি জানতেন কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রন করতে হয়’।

২০১৪ সাল থেকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সুষমা স্বরাজ। ইন্দিরা গান্ধীর পর তিনি দ্বিতীয় মহিলা হিসাবে এই দফতরের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। তিনি সংসদ সদস্য হিসাবে সাতবার এবং বিধানসভা সদস্য হিসাবে তিনবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে ২৫ বছর বয়সে, তিনি উত্তর ভারতের হরিয়ানা রাজ্যর মন্ত্রীসভার সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হয়েছিলেন। ১৩ অক্টোবর ১৯৯৮ সাল থেকে ৩ ডিসেম্বর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লীর ৫ম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

মোদীর জমানায় বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সুষমা। তাঁকে টুইট করলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে, এমন আশা করতেন বহু মানুষ। ‘মঙ্গল গ্রহে আটকে পড়লেও সেখানকার ভারতীয় দূতাবাস আপনাকে ফিরিয়ে আনবে’- রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে সুষমার এই টুইট মনে রেখেছে তাঁর আগামী প্রজন্ম। পাকিস্তান থেকে মূক বধির তরুণী গীতাকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুষ্ঠানে দীর্ঘদেহী রাষ্ট্রনেতাদের মাঝে শাড়ি, টিপ, মঙ্গলসূত্র পরিহিতা ছোটখাটো সুষমার ছবি ভারতীয় নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে থেকে যাবে বহুকাল। সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের পর বিরোধী নেত্রীদের সঙ্গে তাঁর উল্লাসের ছবি ভারতীয় সংসদের বহুমুখিতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

Work from Home এর বাস্তব ছবি নিয়ে আলোচনায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ দেব।