কর্পোরেট এজেন্সি দল চালাচ্ছে
এদিন দীনেশ ত্রিবেদী তৃণমূল থেকে পদত্যাগের পরে রাজ্যসভার সাংসদ পদেও ইস্তফা দেন। তিনি বলেন দলে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। রাজ্যের মানুষের জন্যই তিনি কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন। রাজ্যসভায় তাঁর মুখে উঠে আসে বাংলায় হিংসার কথাও। তিনি বলে বসে খারাপ লাগছে কিন্তু কিছু করতে পারছেন না। তাঁর অভিযোগ শোনার সময় কারও নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এরপরেই অবশ্য তিনি বলেন কর্পোরেট এজেন্সি দল চালাচ্ছে। এই কথার মাধ্যমে তিনি তৃণমূলের পাশাপাশি কার্যত প্রশান্ত কিশোরকেও নিশানা করলেন। এর আগেও যাঁরাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা সবাই কর্পোরেট এজেন্সিকে দিয়ে দল চালানোর একই অভিযোগ করেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন এতে রাজনৈতিক দলের একশো শতাংশ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। কেননা তৃণমূল ত্যাগীদের অভিযোগ, প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাকই ঠিক করে দিচ্ছেন, কোনও এলাকায় কোন নেতা দায়িত্বে থাকবেন।
মা-মাটি-মানুষ থেকে দূরে সরে গিয়েছেন মমতা
দীনেশ ত্রিবেদী আরও যে বিস্ফোরক অভিযোগটি এদিন করেছেন, তা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তৃণমূল সুপ্রিমো মা-মাটি-মানুষ থেকে দূরে সরে গিয়েছেন গিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন এই নেতা। আগে এই অভিযোগ করেছেন অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ ছিল, আগে যেসব অভিযোগের সমাধান করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এখন সেই সবের সমাধান করেন প্রশান্ত কিশোর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগ মানতে নারাজ। ২০১৬ সালের মতোই তিনি এবারও বলেছেন, সব কেন্দ্রেই প্রার্থী তিনিই।
পরিস্থিতি খারাপ, আগেই বলেছিলেন দীনেশ
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলে থাকেন, তৃণমূলে একটাই পোস্ট, বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। আত্মসম্মান কারও থাকলে তিনি তৃণমূলে থাকতে পারবেন না বলে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। দীনেশ ত্রিবেদীর তৃণমূল ত্যাগের পরে সেই কথাই একবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেছেন, কোনও ভোল, দায়িত্ববান মানুষ, যিনি বাংলার সেবা করতে চান, বাংলার মানুষের সেবা করতে চান, তৃণমূলে তাঁর কোনও সম্মান নেই। তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দরে দীনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে দেখা হওয়ার সময় তিনি (দীনেশ) বলেছিলেন, পরিস্থিতি খারাপ, কাজ করতে পারছেন না।
গজু ভাইয়ের সঙ্গে সেটিং
এদিকে দীনেশ ত্রিবেদীর তৃণমূল ত্যাগের পাশাপাশি রাজ্যসভার সদস্যপদে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনাকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, কোনও গজু ভাইয়ের সঙ্গে সেটিং করেছেন দীনেশ। দলকে তিনি পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কল্যাণ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অর্জুন সিংকে বাদ দিয়ে ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের আগে দীনেশ ত্রিবেদীকেই টিকিট দিয়েছিল দল। যে কারণে অর্জুন সিং দল ছেড়েছিলেন। এদিন অবশ্য দীনেশ ত্রিবেদীর দল ছাড়ার কথা ঘোষণার পরেই অর্জুন সিং তাঁকে দাদা বলে সম্বোধন করেছেন।