অ্যাডভান্টেজ মমতা, তৃণমূলের রাজ্যপাট অক্ষত রাখতে এক এক করে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আদিবাসী, তপশিলি জাতি এবং উপজাতির একটা বড় অংশ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। মূলত সেই ভোট ব্যাঙ্ককে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই একের পর এক জেলা সফর করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বাজার আগে থেকে শুরু হয়ে যাওয়া এই সফরের নেপথ্যে রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের অঙ্ক।

আদিবাসী ভোটারদের মন ফিরে পেতে ছক কষছেন পিকে

আদিবাসী ভোটারদের মন ফিরে পেতে দলের নিচু স্তরের নেতা-কর্মী এবং আদিবাসি সম্প্রদায় বা তপশিলি জাতির উচ্চ স্তরের নেতাদের আরও বেশি করে ময়দানে ঝাঁপানোর জন্য ছক কষছে আই-প্যাক। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আই-প্যাক। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী সেখানে ভাষণ রেখেছিলেন।

এসসি-এসটি নেতাদের উদ্দেশে মমতার বার্তা

সেই সভাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি আমার এসসি-এসটি এবং আদিবাসী ভাইদের কাছে আবেদন রাখছি। বিজেপি আপনাদের অনেক আসন ছিনিয়ে নিয়েছে। বিজেপি জঙ্গসমহল এবং উত্তরবঙ্গে বিশাল ব্যবধানে জিতেছে। ওদের এতগুলো সাংসদ সেখান থেকেই এসেছে। কিন্তু আপনাদের এলাকার মানুষদের কি বিজেপি কিছু দিয়েছে? এই জিনিসটাই সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে।'

'দুয়ারে সরকার', ব্যালটে ভোট

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত উন্নয়নের উপর ভর করেই এই নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে চাইছে। আর তাই সমাজের সকল স্তরের ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে 'দুয়ারে সরকার' চালু করেন। শহুরে শিক্ষিত ভোটারদের থেকেও এই প্রকল্প বেশি করে পৌঁছাতে চেয়েছিল গ্রামীণ এলাকার সেই সব ভোটারদের কাছে, যারা এককালে একচেটিয়া ভাবে মমতাকে ভোট দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছিল। এবং এই গোটা পরিকল্পনাটাই পিকের মস্তিষ্কপ্রসূত।

বাজিমাতের 'অঙ্ক'

তৃণমূল কংগ্রেসকে তৃণমূল স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই হল প্রশান্ত কিশোরের কাজ। পশ্চিমবঙ্গে, আদিবাসী, অন্গ্রসর শ্রেণীর মানুষ এবং সংখ্যালঘু মিলিয়ে ৬০ শতাংশের বেশি ভোটার। সেই ক্ষেত্রে এই মানুষদের কাছে দি মমতা ফের ২০১১ সালের পরিত্রাতা রূপে দেখা দিতে পারেন, তাহলে আজও বঙ্গে মোদী-শাহকে টেক্কা দিয়ে মমতা জিতবেন নিজের ক্যারিশ্মাতেই। আর এই কথাটা খুব ভালো করেই জানা আছে প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর দলের।

টিম পিকে থাকার সুবিধা

তৃণমূলের এসসি সেলের সভাপতি তাপস মণ্ডল এই বিষয়ে বলেন, 'যখন কোনও রাজনৈতক প্রতিনিধি মানুষের কাছে যান, তখন সেই মানুষটা হয়ত পুরো সত্যিটা জানতে পারেন না। কিন্তু যখন আই-প্যাক-এর মতো কোনও সংস্থা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তথ্য চায়, তখন কিন্তু মানুষ অকপটে সবটা জানিয়ে দেয়। আর সেই তথ্য কিন্তু আমাদের আরও ভালো হতে সাহায্য করে।'

More TMC News