“সে প্রথম প্রেম আমার……”- প্রথম প্রেমের প্রতিটি স্বাদ রোমাঞ্চকর। প্রথম হ্যাং আউট থেকে প্রথম পুষ্পাঞ্জলি- ওয়েস্টার্ন বা ভারতীয় আচার; বাঙালি কোনোটাতেই কম নয়। পুষ্পাঞ্জলি বলতে মনে পড়লো এবারও তো এসেই গেলো বাঙালির সেই বহু প্রতীক্ষিত “প্রেম দিবস” বা বলা যায় বসন্ত প্রেম। যতই “ভ্যালেন্টাইন্স ডে” তে সাহেব সেজে আদরের মেমকে নিয়ে ক্যান্ডেল লাইট হোক, সরস্বতী পুজোয় বাঙালির হলুদ পাঞ্জাবি আর বাসন্তী রঙা শাড়িতে হাত ধরে এই গলি-ওই গলি ঘোরা না হলে চলে না। কারণ এই সরস্বতী পুজোতেই জেগে ওঠে বাঙালির বসন্ত প্রেম। পলাশ, শিমুলেই শুধু নয়, রঙ ধরে তরুণ হৃদয়েও। প্রেমের সেকাল-একাল নিয়ে একটা বিভাজন আর বিবাদ এখনো অস্তিত্ব রাখে। কিন্তু ওই দিনটায় ঠিক শাস্ত্রে লেখা নিয়ম মেনে প্রেম না করলে “ঠাকুর পাপ দেয়”।
সেই দিনটায় কিন্তু বাঙালি ছেলে-পুলের বেশ একটা স্বঘোষিত কেত মারার লাইসেন্স পাওয়া যায় মা-বাবার থেকেও। আবার যে কোনো বয়ঃসন্ধিকালীন স্কুল পড়ুয়া ছাত্র বা ছাত্রীর “এঁড়ে পাকা” হওয়ার প্রমাণ এই দিনটাই। স্কুলের প্রথম ইনফ্যাচুয়েশন বা কলেজের প্রেম এই দিনটাতেই ডানা মেলে উড়তে শেখে। কারণ ধরা পড়ার ভয় এড়িয়েই মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোনো মেয়েটি প্রথম তার হাই স্কুল প্রেমিকের সঙ্গে নিভৃতে সময় কাটানোর স্বপ্নের জাল বুনতে থাকে এইদিনেই। আর কলেজ পাস করা তরুণ তুর্কিরা তো এইদিনেই পকেটমানি জমিয়ে ক্রাশকে প্রেমের আবেদনে জড়িয়ে প্রেমের দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা জমায়।বীণাপাণির অঞ্জলীর ফাঁকে টুক করে প্রেমিকার দিকে ফুল না ছুঁড়লে খুনসুটিগুলো ভাষা পাবে কী করে? এই দিনে শহর বা গ্রামাঞ্চলের বুকে গজিয়ে ওঠা ক্যাফেটেরিয়া বা রেস্তোরাঁর চেয়ে খোলা মাঠ বা গঙ্গার ঘাট- ঘুরে দেখুন তো কোথায় বেশি প্রেম জমে। সংখ্যাটাই বুঝিয়ে দেয় যে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হলো আমাদের স্বভাবে গজিয়ে ওঠা নতুন ট্রেন্ড, কিন্তু সরস্বতী পুজোর বসন্ত প্রেমই হলো বাঙালির প্রেমিক মনের প্রতিষ্ফলন।
এই বছর কিন্তু সোনায় সোহাগা। কারণ ভ্যালেন্টাইন্স ডে-এর পরেই হবে বাগদেবীর আরাধনা অর্থাৎ বাঙালির জাতীয় প্র্রেম দিবস। মহামারীর জন্যে দূরত্ব তৈরি হওয়া যুগলদের জন্যে মা সরস্বতী যেন মুখ তুলে চাইলেন। প্রেমিকার খোলা আঁচলে প্রেমিকের আঙুলের ফাঁকে আগামীর স্বপ্ন বোনা- বাঙালি ভুলছে না, ভুলবে না।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.