খেলাশ্রী। ২০১১-১২ অর্থবর্য থেকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের খেলাধুলোর সার্বিক মানোন্নয়ন এবং ক্লাবগুলির কিছু স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি, ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয়, ক্রীড়া সরঞ্জামগুলি রাখার জন্য কক্ষ নির্মাণ প্রভৃতির জন্য আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সম্মান জানানো হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রের খেলোয়াড় ও কোচদের। প্রদান করা হয় খেল সম্মান, বাংলার গৌরব ও ক্রীড়াগুরু সম্মান। এত বছর পর বাংলার গৌরব সম্মান দেওয়া হল টিটি-র মান্তু ঘোষকে। তবে এতদিনেও কারও মনে পড়ল না বাংলার রঞ্জিজয়ী দলের এক ওপেনারকে। আজ ফেসবুকে তিনি নিজেই এই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার ইন্দুভূষণ রায় আজ ফেসবুকে লিখেছেন, খেলাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে যেভাবে রাজ্য সরকার ক্রীড়াবিদদের সম্মান জানাচ্ছে তা প্রশংসনীয়। এতে অতীত ও বর্তমানের খেলোয়াড়রা তাঁদের পারফরম্যান্সের জন্য স্বীকৃতি পাচ্ছেন। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রাপকদের নাম চূড়ান্ত হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। বাংলার যেসব এলিট ক্রিকেটারের নাম তালিকায় দেখেছি তাতে আমিও গত কয়েক বছর ধরেই প্রত্যাশা করেছিলাম আমার নাম বাংলার গৌরব সম্মানের জন্য বিবেচিত হবে।
অন্তত বাংলার রঞ্জিজয়ী দলের সব সদস্যই যখন প্রায় এই সম্মান পেয়ে গিয়েছেন তখন আমার নাম কোন যোগ্যতামানে আটকে যাচ্ছে, সেটাই জানার চেষ্টা করছি। উল্লেখ্য, সাগরময় সেনশর্মার সঙ্গে এবার বাংলার গৌরব সম্মান পেয়েছেন শুভময় দাস। যাঁরা রাজ্য সরকারের থেকে পুরস্কার পেলেন তাঁদের অভিনন্দন জানিয়ে আইবি রায় লিখেছেন, দুটি রঞ্জি ফাইনাল খেলেছি। বাংলা শেষবার যখন রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সেই দলেও ছিলাম।
বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭টি শতরান-সহ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫১.৯৫ গড় রয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলার জনা ছয়েক ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় ৫০-এর উপর। ৩১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২,২৮৬ রান রয়েছে। ওয়ান ডে খেলেছি ৯টি, ২০২ রান করেছি। ইরানি ট্রফি, অবশিষ্ট ভারতীয় একাদশের হয়ে খেলেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে দশ বছরের বেশি মোহনবাগানের হয়েই খেলেছি। ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠনের তরফে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মান পেয়েছি। বাংলার হয়ে দু-বছর সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হয়েছিলাম।
ঘরোয়া ক্রিকেটে পাঁচবার হায়েস্ট স্কোরার হই। খেলা ছাড়ার পর তিন টার্মে ৯ বছর বাংলার নির্বাচক ছিলাম। তিন বছর বিসিসিআইয়ের ম্যাচ রেফারি ছিলাম। গত বছর সিএবি-র টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ছিলাম। এত কিছুর পরেও নানা পুরস্কার পেতে যখন অন্যদের দেখছি তখন ভাবতে হচ্ছে যে, রাজ্যের স্বীকৃতি পেতে আর কী করা দরকার? এই পুরস্কার পেতে বিশেষ কোনও াজ্যসুপারিশ লাগে কিনা সে প্রশ্ন তুলে ইন্দুভূষণ রায় আরও লিখেছেন, প্রতীক্ষায় থে্কে পুরস্কার প্রাপকদের নামের তালিকা দেখে যাচ্ছি। যাঁরা পুরস্কার পাচ্ছেন তাঁদের অভিনন্দন। আর যাঁরা যোগ্য হয়েও বারবার এই সম্মান পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের ব্যাড লাকের জন্যও সহমর্মিতাও জানিয়েছেন ইন্দুভূষণ রায়।
তাঁর এই পোস্ট দেখে হতবাক বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত বা বাংলার ক্রিকেটের খবরাখবর যাঁরা রাখেন প্রত্যেকেই। যেভাবে নিজের বর্ণময় কেরিয়ারের কথা বলে বারবার রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে, যোগ্যতার মাপকাঠি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে সন্দিহান হয়ে, তা দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছে বাংলার ক্রীড়া মহল। রাজ্য সরকার স্বীকৃতি না দিলেও তাঁর অবদান যে বাংলার ক্রিকেট মনে রাখবে ফেসবুক পোস্টের কমেন্ট বক্সে এমন মন্তব্যও করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ভারতের দরকার ৩৮১, ইংল্যান্ডের ৯ উইকেট, তিন পথ খোলা চেন্নাই টেস্টে