কেন প্রকৃতির রোষে বারবার উত্তরাখণ্ড, আরও বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘনিয়ে আসতে পারে, উদ্বেগে গবেষকরা

পর পর ২ বার মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে বড় বড় দুটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হল উত্তরাখণ্ড। ২০১৩ সালের কেদারনাথের স্মৃতি ফিরল চামোলিতে। গ্লেসিয়ার ফেটে ভয়ঙ্করর প্লাবন ভাসিয়ে নিয়ে গেল সব কিছু। কিন্তু বারবাপর উত্তরাখণ্ডই কেন। এভাবে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে। কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে গবেষকরা দাবি করেছেন, হিমবাহের অভ্যন্তরে গোপণ কোনও জলাশয় রয়েছে। সেটা থেকে জল ঢুকেই এই বড় দুর্ঘটনা।

কেন বিপর্যয়

ফের ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে উত্তরাখণ্ড। এবার চামোলিতে হিমবাহ ভেটে ভয়ঙ্কর প্লাবনে গুঁড়িয়ে গিয়েছে তপোবন ও ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ২০১৩ সালের কেদারনাথের স্মৃতি ফিরে এসেছে উত্তরাখণ্ডে। জলের সঙ্গে কাদার স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে অসংখ্য প্রাণ। হিমবাহ ফেটে উপচে পড়েছে নন্দাদেবী। ধৌলি গঙ্গা, অলকানন্দা উপচে পড়ছে। পরিবেশবিদরা একে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের এফেক্ট বলে দাবি করেছেন। পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়তে শুরু করায় প্রভাব পড়ছে হিমবাহের উপর। সেকারণে হিমবাহ গুলি গলতে শুরু করেছে। আবার আরেকদল বিজ্ঞানীর দাবি েয গ্লেসিয়ার ফেটেছে তার কাছে গোপনে কোনও জলাশয় রয়েছে। অর্থাৎ ওয়াটার পকেট রয়েছে। সেকারণেই এই ফাটল বলে মনে করা হচ্ছে।

জলে উৎসই আসল কারণ

ভূবিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন গ্লেসিয়ারের কোথাও গোপনে তৈরি হয়েছে ওয়াটার পকেট । সেখান থেকে জলচুঁইয়েপড়েই গ্লেসিয়ারে ফাটল ধরেছিল। সেই ভার আর নিতে পারেনি গ্লেসিয়ারের অন্য অংশ। সেকারণেই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ভেঙে সেটি গড়িয় পড়ে। সেই ওয়াটার পকেট তৈরির মূলে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন এমনই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। এর পরেও যে আরও বড় কোনও বিপর্যয় নেমে আসবে না সেটা নিশ্চিত করা কঠিন।

জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রই দায়ী

ইতিমধ্যেই উমা ভারতী থেকে উত্তরাখণ্ডের একাধিক ব্যক্তি ঋষি গঙ্গা জনবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন এই বিপর্যয়ের জন্য। উত্তরাখণ্ডে ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই মামলা চলছে। এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী। সেকারণেই এই বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য উত্তরাখণ্ডে ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প একেবারে ধুয়.ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে।

এখনও নিখোঁজ বহু

উত্তরাখণ্ডে গ্লেসিয়ার ফেটে বিপত্তির ঘটনায় ঋষি গঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং তপোবন তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প একেবারে ভেঙে গুড়িয়ে গিয়েছে। এই প্রকল্পে যাঁরা কাজ করছিলেন তাঁদেরও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। প্রায় ১৭০ জন এখনও নিখোঁজ। মাত্র ১২ জনের দেহ মিলেছে। রাতভর উদ্ধার কাজ চালিয়েছেন আইটিবিপির জওয়ানরা। সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। আইটিবিপির জওয়ানদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত মিলিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। ইকিমধ্যেই মৃতদের ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।

২০১৯-এ মিলেছিল 'অশনি সঙ্কেত', কেন আট বছর পুরোনো আতঙ্ক ফিরল উত্তরাখণ্ডে?

More UTTARAKHAND News