ঋষি গঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজে যান মহিষাদলের তিন যুবক
জানা যায় তিন শ্রমিক একসঙ্গেই বছরখানেক আগে ঋষি গঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজে যান। তিনজন মহিষাদলের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, তিন যুবকের নাম সুদীপ গুড়িয়া, লালু জানা ও বুলা জানা। উত্তরাখন্ডের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর থেকে তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে শনিবার রাতে সুদীপের সঙ্গে কথা হয় তাঁর পরিবারের। কাজে যোগ দেওয়ার আগে বাবার সঙ্গে কথা হয় লালুর জানার। কিন্তু ভয়াবহ ধস নামার খবর পরিবারের কাছে আসার পর থেকে একাধিকবার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। টানেলে আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পরিবারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। দ্রুত যাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো সম্ভব হয় সেই ব্যবস্থা করার আবেদন প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে।
ঘটনার খবর পরিবারের পাশে দিবেন্দ্যু
নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া মাত্র পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সাংসদ দিবেন্দ্যু অধিকারী। পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন। শুধু তাই নয়, সবরকম পরিস্থিতিতে সাহায্যের আশ্বাস তাঁর। দিবেন্দ্যু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। উদ্ধার কাজ চলছে। তথ্য পেলেই জানানো হবে সে রাজ্যের প্রশাসনের তরফে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংসদ। তিনি জানিয়েছেন্, নিখোঁজ তিনজনই ঋষি গঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করতেন। লালু ও বুলা দুই ভাই। প্রজেক্টের ঠিকাদার হিসাবে কাজ করত। সুদীপ গুড়িয়াকে তাঁরাই উত্তরাখন্ডের ওই প্রজেক্টে নিয়ে যায় বলে জানা যাচ্ছে। এরপর থেকে গত ২ বছর ধরেই তাঁরা সেখানেই কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুরুলিয়ার দুই শ্রমিক
দুপুরের পর থেকে বাংলার আরও দুই শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। জানা যাচ্ছে, পুরুলিয়া থেকে দুই শ্রমিক এনটিপিসির কাজে গিয়েছিলেন। নাম-মোবাইল নম্বর পাওয়া গেলেও পুরুলিয়ার ঠিক কোন জায়গার বাসিন্দা তাঁরা সেই বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ তাঁরাও। কোনওভাবেও মোবাইলে যোগাযোগ তাঁদের সঙ্গে করা যাচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। কোনও টানেলে তাঁরা আটকে রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সেখানে উদ্ধার কাজ
ভয়ঙ্কর এই বিপর্যয়ের পরেই কাজে নেমে পড়ে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তাঁদের সঙ্গে একযোগে উদ্ধারকাজে নামে ভারতীয় সেনা। উদ্ধারকাজে যোগ দেয় আইটিবিপি। স্থানীয় মানুষ এবং স্থানীয় প্রশাসনও একদিকে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। আকাশ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এদিকে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৭০ জন নিখোঁজ বলে দাবি আইটিবিপি-র। যদিও সংখ্যাটা আদপে ২০০-বেশি বলেই দাবি অনেকের। অন্যদিকে, ভয়ঙ্কর সেই ধস আছড়ে পড়ার সময় তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করছিলেন ১৪৮ জন এনটিপিসি কর্মী। ২২ জন কাজ করছিলেন ঋষিগঙ্গায়। তাদের মধ্যে সিংহভাগ মানুষই এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ বলে জানা যাচ্ছে। টানেলের মধ্যে এখনও বহু মানুষ আটকে। তাঁদের কি অবস্থা কেউ যানে না। এমনকি মৃত না জীবিত তা নিয়েই ধোঁয়াশা রয়েছ।