শঙ্কর দাস, বালুরঘাট : স্বাধীনতার ৭৩ বর্ষ অতিক্রম হয়েছে। কিন্তু আজও অর্ধ শতাব্দী পুরোনো জীর্ণ কুয়োর জলই নির্ভর আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের বাসিন্দাদের। দিন দশেক আগে জরাজীর্ণ সেই কুয়োতে জল তুলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় সেই জল আর কেউ খেতে পারছেন না।

বর্তমানে পুকুরের জলই একমাত্র ভরসা গ্রামবাসীদের। স্বাধীন ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের এমনই এক গ্রামের নাম শ্রীবই। প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন জানিয়েও আজ অবধি পানীয় জলের নিশ্চিত কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। বাধ্য হয়েই সোমবার তাঁরা তপন বালুরঘাট রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্যর অভিযোগ, এলাকায় বিজেপি জয়ী হওয়ার জন্যই জলের অধিকার থেকে বঞ্চিত শ্রীবই গ্রামের মানুষেরা।

তপন ব্লকের মালঞ্চা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আদিবাসী অধ্যুষিত শ্রীবই গ্রাম। গ্রামটিতে শ’খানেক পরিবারের বসবাস। বাসিন্দাদের জলের সংস্থান বলতে ১৯৭১সালে তৈরী একমাত্র কুঁয়ো। কুঁয়োর জলকেই রান্না ও পানীয় জল হিসেবে এতদিন ব্যবহার করে আসছিলেন। পাঁচ দশকের পুরোনো সেই কুঁয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে তাতে পড়ে মৃত্যু হয় কার্তিক ওঁরাও নামের এক বাসিন্দারা।

গত ২৯ জানুয়ারি সেই ঘটনার পর কেউ আর মরণ কুঁয়োর জল খেতে পারছেন না। ঘটনার দিন স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে একটি ভ্রাম্যমান ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা করা হলেও বহুদিন ধরে তাতেও নেই জল। অগত্যা এলাকার পুকুরের জলেই নোংরা জামাকাপড় কাঁচা স্নান ও রান্না খাওয়ার কাজ সারতে হচ্ছে অসহায় বাসিন্দাদের। প্রশাসনের কাছে দরবার করেই জলের ব্যবস্থা না হওয়ায় পথ অবরোধে নামেন তাঁরা।

শ্রীবই গ্রামের বাসিন্দা আদরি ওঁরাও জানিয়েছেন যে, তাঁদের গ্রামে গ্রামে পানীয় জল বলতে বহু পুরোনো একটি কুঁয়ো। তিনি বিয়ে হয়ে আসার আগে থেকেই সেই জল ব্যবহার করতে দেখে আসছেন। কুঁয়োর জল দিয়ে রান্না পানীয় জল এমনকি স্নান সবকিছু তাঁদের সারতে হয়। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে ট্যাপের জল বা অন্য কোনও কিছুরই পরিষেবা তাঁরা পান না। এমতাবস্থায় দিন কয়েক আগে তাঁর দেওর কার্তিক রাউল জল তোলার সময় কুঁয়োয় পড়ে মারা যাওয়ায় সেই জল কেউ আর ব্যবহার করছেন না বর্তমানে পুকুরের পচা জলে তাঁদের জীবনের একমাত্র ভরসা। তাদের এই কষ্ট নিরসনে প্রশাসনের কেউ আজ পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।

তপন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজেপির প্রশান্ত সরকার অভিযোগ করে বলেন, যেহেতু এলাকার বাসিন্দারা বিজেপিকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছে। সেই কারণে দীর্ঘদিনের এই জল কষ্টের ব্যাপারে প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না তাঁর অভিযোগ।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের জন্যস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ আমজাদ আলী মন্ডল জানিয়েছেন, জল নিয়ে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই। তপনের জলকষ্টের ব্যাপারে তিনি ভৌগলিক অবস্থানকেই দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন, তপনের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক’শো ফিট নিচে ভুগর্ভস্থ জলস্তর থাকায় সেই জল ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। স্বজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে খুব দ্রুত এই জলকষ্ট দূরীকরণের চেষ্টা চলছে। মাঝে লকডাউনের কারণে কিছুটা দেরি হলেও খুব শীঘ্রই সেই কাজ শেষ হবে এবং শ্রীবই সহ সমস্ত এলাকার জল কষ্ট অল্পদিনেই দূর হবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

Caption: Work from Home এর বাস্তব ছবি নিয়ে আলোচনায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ দেব।