চৌরি চৌরার ঘটনা
ব্রিটিশ ঔপনিবেশ শাসনের বিরুদ্ধে ১৯২২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেওযা বিক্ষোভকারীদের বিশাল দলের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা এরপর পাল্টা হামলা চালান এবং চৌরি চৌরা পুলিশ থানায় আগুন লাগিয়ে দেন, পুলিশ থানায় উপস্থিত সবাই আগুনে পুড়ে মারা যান। এই ঘটনায় তিনজন সাধারণ নাগরিক সহ ২২ জন পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। উত্তরপ্রদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ওই ঘটনায় শহিদদের স্মরণে রাজ্যের ৭৫টি জেলায় এই দিনটি উদযাপন করা হবে।
চৌরি চৌরার শহিদদের শ্রদ্ধা মোদীর
ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর মোদী জানান, চৌরি চৌরা ঘটনার শহিদরা ভারতের ইতিহাসে তাঁদের যোগ্য সম্মান পাননি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এই অবদানকে কৃতিত্ব দিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মোদী বলেন, ‘চৌরি চৌরার ঘটনা পুলিশ থানায় আগুন লাগানোতেই সীমাবদ্ধ নয়। এই ঘটনার বার্তা বিশাল। অনেক কারণের জন্য, এটাকে ছোট ঘটনা হিসাবে দেখা হয়েছে, কিন্তু এটা আমাদের প্রসঙ্গ হিসাবে দেখা উচিত। শুধু পুলিশ থানায় নয় আগুন লেগেছিল মানুষের হৃদয়ে।' নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক' অ্যাখা দিয়ে জানিয়েছেন যে যতটা চর্চিত হওয়ার দরকার ছিল ততটা এই ঐতিহালিক ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়নি। মোদী বলেন, ‘ইতিহাসের পাতায় তাঁদের যদিও কোনও তাৎপর্য দেওযা হয়নি, তাঁদের রক্ত রয়েছে দেশের মাটিতে এবং তা এখনও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।'
কৃষকদের উদ্দেশ্যে মোদী
অন্যদিকে তিনটে কৃষি আইন নিয়ে উত্তরপ্রদেশে ক্রমাগত অশান্তি বর্তমান। মোদী জানান, কৃষকরা দেশের অগ্রগতির পেছনে রয়েছেন এবং চৌরি চৌরা সংগ্রামেও তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মোদী জানিয়েছেন যে তাঁর সরকার গত ৬ বছরে কৃষকদের আত্মনির্ভর করে তুলতে পদক্ষেপ করেছে। তিনি এও জানিয়েছেন যে মহামারির সমযও কৃষিক্ষেত্রের বৃদ্ধি ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকদের সুবিধার্থে সরকার বহু পদক্ষেপ করেছে। কৃষকদের জন্য মান্ডি লাভজনক করতে, ই-নমের সঙ্গে ১০০০টি মান্ডিকে সংযুক্ত করা হয়েছে।' নরেন্দ্র মোদী দেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে আর্জি জানিয়েছেন যে দেশের একতাকে অগ্রাধিকার দিক তাঁরা এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে একতাকে শ্রদ্ধা জানাক। তিনি বলেন, ‘এই অনুভবের সঙ্গে, আমরা আমাদের পাশে প্রতিটি দেশের নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।'
বছরভর চলবে চৌরি চৌরা ঘটনার উদযাপন
ইতিমধ্যে, উত্তরপ্রদেশ সরকার বছরব্যাপী উৎসবগুলির জন্য একটি বিশেষ লোগো প্রস্তুত করেছে এবং এটি পরের বছর পর্যন্ত সমস্ত সরকারী অফিসের লেটারহেডগুলিতে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে। সরকার এও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে শহিদদের স্মৃতিশৌধগুলির সৌন্দর্যায়ন করবে এবং তাঁদের পরিবারকে সম্মান জানাবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শিক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে যে চৌরি চৌরার ঘটনাকে সরকারি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের পাঠ্যক্রমে যোগ করতে এবং এই ঘটনা নিয়ে যুক্তি-তর্ক, আবৃত্তি, সঞলোগান প্রতিযোগীতা, ক্যুইজ, পোস্টার ও এই থিমের ওপর অঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরো বছর ধরে আয়োজন করতে বলা হয়েছে স্কুলগুলিকে।