রাষ্ট্রসংঘ: নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসনের বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োগ করে চিন আটকে দিল মায়ানমারের সেনা অভ্যুত্থান বিরোধী রাষ্ট্রসংঘের নিন্দাপ্রস্তাব। যদিও প্রতিপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি, দ্রুত মায়ানমারের পরিস্থিতি গণতন্ত্রমুখী না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবিসি জানাচ্ছে, রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থানের পর দুদিন কেটেছে, মায়ানমারের পরিস্থিতি থমথমে। রাজধানী নেপিদ সহ দেশটির সর্বত্র সেনাবাহিনির টহল চলছে। এখন দেশটির শাসক সেনা বাহিনির প্রধান মিন অং লাইং।
বিবিসি আরও জানাচ্ছে, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আউং সান সু কি সেনাবাহিনির বিশেষ ঘেরাটোপে রয়েছেন। তবে তিনি সুস্থ। তাঁর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। ইয়াঙ্গনে সু কি তাঁর বাসভবনেই আছেন। তাঁকে সেনা পরিবেষ্টিত হয়ে হাঁটাহাঁটি করতে দেখেছেন কেউ কেউ।
মায়ানমার সর্বময় শাসক থেকে ক্ষমতাচ্যুত হলেও দেশের জনগণের কাছে সু কি জনপ্রিয়। গত জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দল আইএনএলডি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে পুনরায় সরকার গঠন করে। কিছু আসন পায় সেনা সমর্থিত দল। তবে সরকার গঠন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই সোমবার অভ্যুত্থান হয়। ফের বর্মী সেনার দখলে চলে গিয়েছে মায়ানমারের শাসন।
ক্ষমতা দখলের পরেই সেনাপ্রধান মিন অং লাইংয়ের বিশেষ নির্দেশে প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট সহ সব নেতা নেত্রীরা বন্দি হয়েছেন।এর পরেই সরকারি দফতর, ও বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগে সেনা কর্তারা পুনরায় দখল করেছেন।
বর্মী সেনার প্রধান মিং অং লাইং আগেই জানিয়েছেন, সু কি নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকার ছিল দুর্নীতিগ্রন্থ। তাই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একবছর সেনা শাসন চলবে। তারপর ফের হবে নির্বাচন।
মায়ানমারের সংবিধান অনুসারে জাতীয় সংসদে সেনার জন্য সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ আসন। এর ফলে কোনও দল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়লেও সেনার ক্ষমতা থেকেই যায়। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর, সেনার ক্ষমতা কমাতে এই আইনটি সংশোধনের পথ নিতে চলেছিলেন সু কি। এই কারণে সেনার সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়। এর পরিণতি ফের সেনা অভ্যুত্থান।
বিবিসি জানাচ্ছে অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনি একটি সুপ্রিম কাউন্সিল গঠন করেন, যারা মন্ত্রীদের চেয়েও বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
১৯৬২ সালের ২ মার্চ মায়ানমারে সেনা সরকার ক্ষমতা দখল করেছিল। রক্তাক্ত পরিস্থিতি ছিল তখন। ১৯৯০ সালে তাদের নির্দেশে প্রথম নির্বাচন হয়েছিল। সেই নির্বাচনে সু কির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বিপুল জয়ী হয়। পরে ভোট বাতিল করে সেনা। গৃহবন্দি হন সু কি। ২০১০ সালে তিনি মুক্তি পান। ২০১১ সালে তিনি মুক্তি পান। নির্বাচিত হন বিপুল ভোটে।
ক্ষমতায় আসার পর একপ্রকার সেনার নিয়ন্ত্রণেই চলছিল ‘গণতন্ত্র’। সু কি হন সর্বময় শাসক। তবে তাঁর শাসনে বর্মী সেনার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে গণহত্যার বিষয় ও লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গার দেশত্যাগ, বাংলাদেশে শরণার্থী হওয়া নিয়ে তীব্র আলোড়ন ছড়ায়। সু কির নীরবতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় বইছিল। মনে করা হচ্ছিল, সু কি নামেই মায়ানমারের সর্বময় শাসক। তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করে সেনা।
সোমবার অভ্যুত্থানের পর সু কির বন্দি হওয়ায় সেটি বাস্তবিক আকার নিয়েছে। তবে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে ক্ষোভ।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.