সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : আজকে ২০ লাখ খসালেও একটা দুই কামরার ভালো ফ্ল্যাট হয় না। কিন্তু ঐতিহ্যের হাওড়া ব্রিজ তৈরিতে খরচ হয়েছিল সাকুল্যে ২০ লক্ষ টাকা। যদিও আজ থেকে ৭৮ বছর আগে ২০ লাখের মান আজকের হিসাবে কত কোটিতে গিয়ে ঠেকবে তা বলা মুশকিল, তবে অর্থের অঙ্ক এই প্রমান দেয় যে কতটা মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে দেশে। এই অঙ্ক বাদ দিলে সস্তায় পুষ্টিকর বলাও চলে হাওড়া ব্রিজকে, যা আজ থেকে ৭৮ বছর আগের এক ৩ ফেব্রুয়ারিতে খুলে গিয়েছিল সাধারণ মানুষের জন্য।

হাওড়া ব্রিজ আগে ছিল একটি কাঠের সেতু। বলা হত পল্টুন ব্রিজ, কারন কোনও জাহাজ এলেই তা দুদিক থেকে সরে গিয়ে পাল্টি খেয়ে যেত। ১৮৭৪ সালের ২০ মার্চের প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ে এই কাঠের ব্রিজের একটি অংশ বিধ্বস্ত হয়। ঈগেরিয়া নামের একটি স্টিমারের নোঙর ছিঁড়ে ব্রিজের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে এবং ব্রিজের তিনটি পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ডুবে যায়। এর ফলে ব্রিজ অবকাঠামোর ২০০ ফুট স্থান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশ পুনর্নির্মাণ করে ১৮৭৪ সালের ১৭ অক্টোবর ব্রিজটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

হাওড়া ব্রিজের তৎকালীন ছবি

বিশ শতকের প্রথমদিকে তৎকালীন কলকাতা বন্দরের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার জন স্কটের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রথমেই একটি নতুন ব্রিজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯২২ সালে বাংলা সরকার নতুন হাওড়া ব্রিজ কমিশন প্রতিষ্ঠা করে। ১৯২৬ সালে নতুন হাওড়া ব্রিজ আইন পাশ হয় এবং কলকাতা বন্দর কমিশনারদের নতুন হাওড়া ব্রিজ কমিশনার হিসেবে ব্রিজ তৈরির কাজ তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

তারা ক্লিভল্যান্ড ব্রিজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি ব্রিটিশ কোম্পানিকে নতুন ব্রিজ তৈরির কাজ দেয়। ১৯৩৬ সালে ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হয় এবং ১৯৪২ সালে তা শেষ হয়। ১৯৪৩ সালে নতুন হাওড়া ব্রিজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। নতুন ব্রিজটি তৈরির জন্য ২৬,৫০০ টন স্টিল ব্যবহূত হয় এবং এটি তৈরি করতে আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়।

হুগলি নদীর উপর দিয়ে ৭০৫ মিটার লম্বা বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত এই সেতু কলকাতা ও হাওড়া দুই শহরের যোগসূত্র রচনা করেছে। বিশ্বের অন্যতম এই নিদর্শন হাওড়া ব্রিজকে বলা হয় কলকাতার গেটওয়ে। ব্রিজটি ৩০ মিটার চওড়া। ব্রিজের উভয় দিকে ১৫ ফুট প্রশস্ত পায়ে চলার পথ আছে। যানবাহন চলাচলের পথ ৭১ ফুট চওড়া। শক্তপোক্ত এই ব্রিজটি ব্রেথওয়েট, বার্ন ও জেসপ কন্ট্রাকশনের নির্মাণ করেছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এই ব্রিজের নতুন নাম রবীন্দ্র সেতু।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

Caption: ৩৭৭ এর শেকল থেকে মুক্তির পর কোথায় দাঁড়িয়ে LGBTQ আন্দোলন। আলোচনায় বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায়।