সবরীমালার প্রথা
প্রথা অনুযায়ী রজঃস্বলা মহিলাদের (১০-৫০ বছরের) সবরীমালায় প্রবেশাধিকার ছিল না৷ ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানায় এই প্রথা লিঙ্গবৈষম্যকে সমর্থন করে৷ বেআইনি এবং অসাংবিধানিকও৷ সু্প্রিম কোর্ট মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার দেয়৷ ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তা পুনর্বিবেচনার জন্য ৬০টিরও বেশি আবেদন আদালতে জমা পড়ে৷ দাবি করা হয়, ওখানে প্রতিষ্ঠিত দেবতা 'ব্রহ্মচারী', তাই রজঃস্বলা মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়৷ রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট৷
মহিলাদের কেন সবরীমালায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না?
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যর সাংবিধানিক বেঞ্চে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনগুলির শুনানি হয়েছিল। শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'মহিলাদের কেন সবরীমালায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না তা বৃহত্তর বিতর্কের অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে মুসলিম মহিলাদের মসজিদে ও পার্সি মহিলাদের উপাসনাস্থলে প্রবেশাধিকারের বিষয়টিও রয়েছে।'
কেরল সরকার সুপ্রিমকোর্টের এই রায়কে সমর্থন জানায়
এরপর কেরল সরকার সুপ্রিমকোর্টের এই রায়কে সমর্থন জানায়। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোট এবং বিজেপি জানায়, মন্দিরের পুরাতন প্রথা মেনে চলা উচিত। তবে এবারে সেই দাবি আরও জোরদার করে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের ইস্যুটিকে নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে যাওয়ার পক্ষে সরব হয়েছে কংগ্রেস। মূল লক্ষ্যে এই ইস্যুতে পিনারাই বিজয়ন সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলা।
কেরলে বাম দলগুলির ভরাডুবির অন্যতম কারণ ছিল সবরীমালা
সম্প্রতি এই ইস্যুতে কংগ্রেস নেতা ওমান চণ্ডি একটি চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে। চিঠিতে ওমান চণ্ডি দাবি করেন, কেরল সরকার যাতে সবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম নির্দেশ বদলানোর জন্যে আবেদন করে আদালতে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভায় কেরলে বামদলগুলির ভরাডুবির অন্যতম কারণ ছিল সবরীমালা নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যহীন পন্থা। উল্লেখ্য, কেরল সরকারের এক হলফনামার জেরেই সুপ্রিমকোর্ট মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল।
কংগ্রেসের 'মুসলিম তোষণ'
এদিকে বামদলগুলিও রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ দেওয়ার ক্ষেক্ষে পিছিয়ে নেই। কংগ্রেস যেভাবে সবরীমালা ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে 'হিন্দু ভোট' পেতে সচেষ্ট হয়েছে, সেই প্রচেষ্টাকে বানচাল করতে সিপিএমও মনে করে দিয়েছে যে কংগ্রেসের জোট সঙ্গী হল মুসলিম লিগ। কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে সিপিএম বলে, 'আজকাল ইউডিএফ-কে চালায় মুসলিম লিগ।'
কংগ্রেস ইচ্ছে করে পুরোনো ইস্যুতে খোঁচা দিচ্ছে
এদিকে সিপিএম-এর অন্দরেও সবরীমালা নিয়ে ধীরে চলো নীতি মেনে হাঁটতে চায়। সিপিএম এর এই ইস্যুতে বক্তব্য, 'কংগ্রেস ইচ্ছে করে পুরোনো ইস্যুকে খুড়ে বের করতে চাইছে। আমরা আগেই জানিয়েছি, সুপ্রিমকোর্ট এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাই মেনে নেবে সরকার।' সিপিএম-র আরও দাবি, কংগ্রেসের কাছে এই মুহূর্তে কোনও ইস্যু নেই, তাই তারা পুরোনো এই ইস্যুটিকে খোঁচাতে চাইছে।