ভোটারদের কত শতাংশ মতুয়া?
১৯৫০ সাল থেকে পূর্ব বঙ্গ থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষ পশ্চিমবঙ্গে আসতে শুরু করেন। বাংলাদেশ গঠনের পরও সেই পরম্পরা থেকে যায়। সেই জায়গা থেতে মতুয়ারা বর্তমানে বাংলার ভোটব্যাঙ্কের ১৭ শতাংশ। এই হিসাব সরকারি মতে। কিন্তু মতুয়া নেতারা বলেন তাঁরা ভোটারদের ২০ শতাংশ দখল করে আছেন।
বাংলার দ্বিতীয় বৃহত্তম এসসি জনসংখ্যা ও মতুয়াদের ভোট প্রভাব
প্রসঙ্গত, তপশিলি জাতির নিরিখে মতুয়ারা বাংলার দ্বিতীয় বৃহত্তম তপশিলি জাতিভূক্ত সম্প্রদায়। ফলে ভোটব্যাঙ্কে তাঁদের গুরুত্ব যে অনস্বীকার্য তা বলাই বাহুল্য। মতুয়াদের দাবি তাঁরা ২৯৪ আসনের মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ টি আসনে প্রভাব ফেলতে পারেন সরাসরি। এছাড়াও ৩০ শতাংশ আসনে পরোক্ষে প্রভাব ফেলতে পারে। আর এই জায়গা থেকেই বিজেপি, তৃণমূল দুই দলের কাছে এই মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ।
অমিত শাহের সভা, সিএএ ও মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক
প্রসঙ্গত, মতুয়াদের খাসতালুর বনগাঁতে বহুদিন ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারের সিএএ নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠেছে। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ লাগু না করায় মতুয়াদের নাগরিকত্ব ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যা নিয়ে একাধিক দাবি দাওয়া সর খোদ দলের বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এরপর ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে বিজেপি জানায় মতুয়াদের বার্তা দিতে সেখানে সভা করবেন অমিত শাহ। তবে দিল্লি বিস্ফোরণের জেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলা সফর বাতিল হওয়ায় ঠাকুরনগরে মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ বাড়ছে। সভার মঞ্চ এখনও খোলা না হলেও, বিজেপি এই এলাকা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে।
মতুয়া ইতিহাস
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দুই সীমানাতেই মতুয়ারা রয়েছেন। ১৮৭০ সালে বাংলার বুকে ভক্তি আন্দোলের হাত ধরে নমশূদ্র সম্প্রদায়ের হরিশ্চন্দ্র ঠাকুর এই আন্দোলনের রাস্তা দেখান। পরবর্তীকালে তাঁর সন্তান গুরুচাঁদ এগিয়ে যান এই আন্দোলনে। ১৯১৫ সালে মতুয়া ফেডারেশন গঠিত হয়। আর তার হাত ধরে সংগঠিত হতে থাকে সম্প্রদায়ের জোর।
কেন বিজেপির উদ্বেগ হতে পারে মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক!
এদিকে, বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষ হিসাবে নাগরিকত্ব পেতে মতুয়ারা বহুদিন ধের সিএএর দাবি করে এসেছে। এরপর ২০১৯ এ মোদী সরকার সিএএ নিয়ে এগিয়ে দগেলে মতুয়ারা আশ্বস্ত হলেও, শেষে সিএএ ইস্যুতে মোদী সরকারের পথ চলা থমকে যেতেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে দুই ২৪ পরগনা সহ , নদিয়া, হাওড়া, কোচবিহার, মালদার বহু মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। এরমধ্যে এনআরসি আরও উদ্বেগ ,আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে মতুয়া মহলে। এমন অবস্থায় অমিত শাহের সভার দিতে তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। যা শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যায়। সেই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবিজেপি আপাতত মতুয়া মন পেতে হেভিওয়েটদের সবার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ড্যামেড কন্ট্রোল কোনপথে হলে সেদিকে নজর বঙ্গ রাজনীতিরও।