শুক্রবার থেকে খুলতে পারে বাংলার স্কুলগুলি, কিন্তু কোন পথে?

ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। করোনার সংক্রমণের হারও অনেকটাই কমেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেকদিনের করোনা সংক্রমণের হার অনেকটাই কমেছে। এই অবস্থায় রাজ্যে স্কুল খোলার ভাবনা চিন্তা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ শুক্রবার থেকে খুলতে পারে রাজ্যের স্কুলগুলি। করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনেই স্কুল খোলার ভাবনা চিন্তা শিক্ষা দফতরে। তবে সমস্ত ক্লাস নয়, আপাতত নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেনি খোলা হতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ

আজ মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল খোলার বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা হয়েছে। কোভিড প্রোটোকল মেনে এখনই ছোটদের ক্লাস শুরু না হলেও বড়দের ক্লাস শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু প্র্যাকটিক্যাল নয়, সমস্ত ক্লাসই হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে স্কুল খোলা ও ক্লাস করার বিষয়ে অভিভাবকদের অনুমোদন নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে প্রস্তাব

তবে স্কুল খোলার বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নয়। প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হবে। শিক্ষাদফতর নবান্নে এই প্রস্তাব পাঠাবে। সবদিক বিচার করে এবং মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত পেলেই স্কুল খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে তিনি আরও জানিয়েছেন, ১২ ফেব্রুয়ারি স্কুল খোলার দিন নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হলেও কলেজ খোলা নিয়ে বুধবার বৈঠক রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, সমস্ত কলেজের উপচার্জদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। এরপরেই কলেজ খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সরকারি স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বেসরকারি স্কুল খোলা নিয়ে তেমন কিছু বলেননি শিক্ষামন্ত্রী। শুধু জানিয়েছেন, বেসরকারি স্কুলের বিষয়ে তাদের উপর তো আমরা জোর করতে পারি না!

স্যানিটাইজেশনে কাজ প্রায় শেষ

ফেব্রুয়ারির পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় কড়া লকডাউন। সংক্রমণের ভয়ে সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রায় এক বছর কেটে গিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রয়েছে। কিন্তু একাধিকবার স্কুল খোলার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু হলেও সংক্রমণের আশঙ্কায় সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। তবে গত কয়েকদিন যাবত ফেব্র্যুয়ারি মাসে স্কুল খোলা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করে শিক্ষা দফতর। কারন সামনেই মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। এমনকি অভিভাবকদের তরফেও কম সংখ্যায় পড়ুয়া নিয়ে স্কুল খোলার বিষয়ে আবেদন জমা পড়ে। সেই মতো রাজ্যের স্কুলগুলিতে স্যানিটাইজেশনের কাজ প্রায় শেষ। শিক্ষক-শিক্ষিকিরাও ধীরে ধীরে স্কুলে যেতে চলেছেন। ফলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুল খোলা যেতে পারে বলে মনে করছে শিক্ষাদফতর।

কিভাবে খুলতে পারে স্কুল?

প্রাথমিকভাবে বড়দের ক্লাস আগে শুরু হবে। কোভিড বিধি মেনেই চলবে স্কুল। কিন্তু কীভাবে? সূত্র বলছে, স্কুলে ঢোকার সময় সমস্ত পড়ুয়ার তাপমাত্রা দেখা হবে। যদি বেশি থাকে তাহলে সেখান থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ক্লাসের মধ্যেও অবশ্যই মানতে হবে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং। সেক্ষেত্রে খুব বেশি হলে একটা বেঞ্চে দুজনের বেশি বসতে পারবে না। তবে বেঞ্চে যাতে একজনই বসানো যায় তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা রয়েছে সরকারের। তবে এক সঙ্গে সমস্ত পড়ুয়া ক্লাসে আসতে পারবে না বলেই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, স্কুল খোলার বিষয়ে তাড়াহুড়ো কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চায় না সরকার। কারণ, এক্ষেত্রে সাবধানতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

কি বলছে বাংলার করোনা সংক্রমণ!

বাংলায় ২০০-র কম দৈনিক করোনা সংক্রমণ হয়েছে ৮ মাস পর! সোমবারের এই পরিসংখ্যানে স্বস্তি ফিরছে করোনায়। দৈনিক সুস্থতার সংখ্যা এদিনও দৈনিক করোনা সংক্রমিতের চেয়ে বেশি। সোমবারের দেওয়া স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১৭৯ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা গতদিন পর্যন্ত ছিল ৫ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৮ জন। এদিন ১৭৯ জন বেড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার ১৭৭ জন। বেশি।

বড় খবর, সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করলেন শিক্ষামন্ত্রী! জেনে নিন বিস্তারিত

More WEST BENGAL News