ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগদানের দরজা বন্ধ
তৃণমূল-সহ বিভিন্ন দল থেকে অবাধ যোগদান চলছিল বিজেপিতে। দরজা কণ্ঠে দিলীপ ঘোষরা বলছিলেন, তাঁদের দরজা বড় করে খোলা আছে। কিছুদিন আগে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আভাস দিয়েছিলেন, এবার তাঁরা দরজা ছোট করে ফেলবেন। এদিন বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন, ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগদানের দরজা বন্ধ।
ভোট ফুরালে আবার বিজেপি তাদের দরজা খুলবে
কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এদিন স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য দল থেকে আর কাউকেই দলে নেওয়া হবে না। ভোট ফুরালে আবার বিজেপি তাদের দরজা খুলবে। গত কয়েকমাস ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছেন বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংসদরা। ছোট-বড় সমস্ত নেতারাই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে।
মমতা-অভিষেকের গড়ে পদ্মফুল ফোটাবেন কী করে শুভেন্দু
শুভেন্দু অধিকারী রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলার মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছিলেন এবার তাঁদের টার্গেট কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ভাঙন ধরানো। অর্থাৎ মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে পদ্মফুল ফোটানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু। তারপর এদিন সকালে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার স্পিড পোস্টে ইস্তফা দেন দল থেকে।
বিজেপিতে যোগদানের জল্পনার মধ্যেই কৈলাশের ঘোষণা
ফলে দল বদলে বিজেপিতে যোগদানের এমন একছার জল্পনার মধ্যেই কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র ঘোষণা এদিন প্রশ্ন চিহ্ন ছুড়ে দেয় হাজারো! কৈলাশ জানান, নির্বাচনের আগে নতুন করে বিজেপিতে যোগদান করানো হবে না। আপাতত আর কাউকে যোগদান করানো হবে না। ইতিমধ্যেই যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, সেই তালিকা বেশ লম্বা।
বিগত দু-বারের যোগদানে যাঁরা এসেছেন বিজেপিতে
তৃণমূল ছেড়ে বিগত দু-বারের যোগদানে যাঁরা এসেছেন, সেই তালিকা নেহাত কম লম্বা নয়। এই তালিকা বেশ ভারীও। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষাল, রথীন চক্রবর্তী, বনশ্রী মাইতি, বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, সৈকত পাঁজা, শীলভদ্র দত্ত, দিপালী বিশ্বাস, সুকরা মুণ্ডা, সুনীল মণ্ডল, দশরথ তিরকে, রুদ্রনীল ঘোষ-সহ একাধিক প্রথম সারির নাম রয়েছে। এঁদের সঙ্গে আছেন বহু ছোট-বড় নেতাও।
আরএসএসের তরফে গতদিনই বিজেপিকে কড়া বার্তা
কিন্তু কেন হঠাৎ এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। আসলে এভাবে যোগদান মেলা সঙ্ঘের না-পসন্দ। আরএসএসের তরফে গতদিনই বিজেপিকে কড়া বার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে সে কথা। দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে পরিচয় না করিয়ে স্রোতের মতো লোক নিলে দাম চোকাতে হবে বলে বার্তা দিয়েছে আরএসএস। তারপরই কৈলাশের এই সিদ্ধান্ত বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
নব্যদের মেনে নিচ্ছে না আদিরা, বুমেরাং হতে পারে
তৃণমূল বা অন্য দল থেকে যাঁরা আসছেন বিজেপিতে, তাঁরাই এখন নব্য। এই নব্যদের সঙ্গে আদিদের দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে নব্যদের মেনে নিচ্ছেন না আদি নেতা-কর্মীরা। ফলে বুমেরাং হতে পারে একুশের ভোটে। আদি-নব্যের বনিবনা নেই বহু ক্ষেত্রে। সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে। তাই সাবধান হতে হবে বিজেপিকে।
সংগঠন মজবুত করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হবে না তো!
রাজনৈতিক মহলের অভিমত, আরএসএসের কড়কানিতেই বিজেপি পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। বেনো জল আটকাতে গেট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। ভোটের মুখে নতুনদের নিয়ে সংগঠন মজবুত করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হবে বলে মনে করছে আরএসএস। কর্মীদের ক্ষোভ বেড়ে যাবে। তখন বুমেরাং হতে বাধ্য।