কী ভাবে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে করোনা ?
গবেষণাগারে সৃষ্ট প্রায় কয়েক হাজার ফুসফুসীয় কোষে কোভিড সংক্রমণ করে দেখা গেছে মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যেই কোষগুলি আক্রান্ত হয়ে পড়ছে, যদিও মানবদেহের কোষের সাথে সম্পূর্ণ মিল নেই এই কৃত্রিম কোষগুলির, এমনটাই মত গবেষণার দায়িত্বে থাকা ভাইরাসবিদ এলক মুহলবার্গারের। যদিও আশার কথা এই যে আমেরিকার বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের মতে, মার্কিন খাদ্য ও ড্রাগ বিভাগ (এফডিএ) কর্তৃক অনুমোদিত প্রায় ১৮টি ভ্যাকসিন কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে প্রাথমিক সুরক্ষা দিতে সক্ষম। এমনকী ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসকে প্রায় ৯০% পর্যন্ত বাধা দিতে সক্ষম ৫টি ড্রাগের কথাও বলেন তিনি।
গবেষণায় উঠে আসছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য
বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণার দায়িত্বে থাকা আরেক ভাইরাসবিদ অ্যান্ড্রু এমিলির মতে, "ফুসফুসের কোষগুলোকে আক্রমণ করে ভাইরাস কোষগুলি নিজের মত নির্দেশ দিতে শুরু করে। তার পরেই বাড়তে থাকে সংক্রমণের ধার।" পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন যে ভাইরাসগুলি নিজে থেকে প্রতিলিপি বানাতে পারে না তারা মানবকোষের সমস্তটা অধিকার করে প্রতিলিপি প্রস্তুতির জন্য! সংক্রমণ ঘটার পর মানবকোষের সমস্ত কার্যপদ্ধতিই নাকি বদলে দেয় ভাইরাস, মত গবেষকদের।
মাত্র তিন-ছয় ঘন্টার মধ্যে কোষের মারাত্মক ক্ষতি
করোনা গবেষকদের মতে, দেহে প্রবেশের মাত্র তিন-ছয়ঘন্টার মধ্যে আক্রান্ত কোষের নিউক্লিয়ার মেমব্রেনকে নষ্ট করে দিতে সক্ষম কোভিড ভাইরাস। মুহলবার্গারের মতে, "এমনকি ইবোলার মত ভয়ঙ্কর ভাইরাসও মেমব্রেনের কোনোরকম ক্ষতি করতে পারে না।" বিজ্ঞানীদের মতে, কোষের মস্তিস্ক হল নিউক্লিয়াস, কিন্তু সেই মেমব্রেনের ক্ষতিসাধন করার ফলে খুব সহজেই আক্রান্ত কোষের দখল নিতে পারে এসএআরএস-সিওভি-২ ভাইরাস।
ফুসফুসীয় কোষের মৃত্যুতে দেহের অন্যান্য কোষের ক্ষতিসাধন
বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, করোনার আক্রমণে ফুসফুসীয় কোষগুলির হঠাৎ মৃত্যু ঘটে, স্বাভাবিকভাবে দেহে অক্সিজেনের তারতম্যের ফলে আশঙ্কিত হয়ে পড়ে দেহের অন্যান্য কোষগুলিও। এর ফলে ফুসফুসের বন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে নিউমোনিয়ার মত সমস্যা দেখা দেওয়ার কথাও জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এদিকে এই গবেষণার প্রধান অ্যান্ড্রু উইলসনের মতে, এখনও পর্যন্ত বিষয়টি গবেষণাধীন। তবে ভ্যাকসিন গবেষণায় এই তথ্যগুলি আমাদের প্রভূত সাহায্য করবে।