প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের শান্তিপূর্ণ ট্র্যাক্টর র্যালি আচমকাই হিংসাত্মক ঘটনায় পরিণত হয়। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দিল্লির একাংশ। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশ ৩৩টি এফআইআর দায়ের করেছে। যার মধ্যে একটি এফআইআরে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকরা যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা পূর্ব পরিকল্পিত এবং সেপ্টেম্বরে কৃষি আইন পাশ সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা এই হিংসাত্মক ঘটনার ষড়যন্ত্রের ছক কষে ফেলেছিল।
যোগেন্দর যাদব, রাকেশ টিকাইত ও মেধা পাটকর সহ ৩৭ জন কৃষক নেতার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। এফআইআরে বলা হয়েছে এই কৃষক নেতারা কৃষকদের বিভ্রান্ত করে এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্য উস্কানি দিয়েছিলেন। কৃষক–পুলিশ সংঘর্ষ ৩৯৪ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ৪৪ জনের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। এফআইআরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ (খুনের চেষ্টা), ১৪৭ (হিংসাত্মক ঘটনার জন্য শাস্তি) এবং ৩৫৩ (সরকারি কর্মীকে তাঁর ডিউটি থেকে বিচ্যুত করার অপরাধমূলক প্রয়াস) সহ বিভিন্ন ধারা যোগ করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ এফআইআরে বলেছে, ২৬ জানুয়ারির হিংসাত্মক ঘটনা আসলে প্রতিবাদকারী ও তাঁদের নেতাদের পূর্ব–পরিকল্পিত এবং ট্র্যাক্টর র্যালিতে দিল্লি পুলিশের রুট লঙ্ঘন করা হয়েছে। এফআইআরে আরও বলা হয়েছে যে ট্র্যাক্টর প্যারেডের যে সময় ছিল তা প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন রাজপথের কুচকাওয়াজকে প্রভাবিত করেছে। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন যে, ২৬ নভেম্বর থেকে ক্রমাগত ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি অবশেষে এই চূড়ান্ত ঘটনার সৃষ্টি করেছে। তাই এফআইআরে ২৬ নভেম্বরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই অধিকর্তা এও বলেন, 'অপরাধনূলক ষড়যন্ত্র মামলায়, পুলিশ একের পর এক ঘটনাগুলির তদন্ত করবে, যা এই চরম ঘটনাকে নেতৃত্ব দিয়েছে। উত্তেজনা ছিল দীর্ঘদিন ধরে, অবিশ্বাসের জায়গাও তৈরি হয়েছিল এবং সেটা তদন্ত করে প্রমাণ করা হবে।’
এফআইআরে বলা হয়েছে, কৃষকদের একাধিক বিপণন চ্যানেলে তাঁদের পণ্য সরবরাহ করার এবং কৃষকদের তাদের কৃষিপণ্য সম্পর্কিত প্রাক-ব্যবস্থাপনার চুক্তিতে প্রবেশের আইনি কাঠামো সরবরাহের লক্ষ্যে কৃষি আইন পাশ করা হয়েছিল। কিছু লোক এই আইনটিকে 'কর্পোরেট-বান্ধব’ এবং 'কৃষক বিরোধী’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। এফআইআরে এও বলা হয়েছে, যোগেন্দ্র যাদবের মতো কৃষক নেতারা ট্র্যাক্টর র্যালির ঘোষণা করেছিলেন। তাঁরা এও হুমকি দিয়েছিলেন যে পুলিশের ব্যারিকেড তাঁরা মানবেন না এবং তাঁরা তাঁদের প্যারেড চালিয়ে যাবেন। পুলিশ ও কৃষকদের মধ্যে ট্র্যাক্টর প্যারেড নিয়ে আলোচনার সময় রুট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, যা র্যালির সময় লঙ্ঘন করা হয়েছে এবং সকাল ৮টা থেকেই ট্র্যাক্টর র্যালি শুরু হয়ে যায়। এফআইআরে বলা হয়েছে, ট্র্যাক্টরের পাশাপাশি ট্রলি, এমনকী প্যারেডে ঘোড়াও নিয়ে আসা হয়েছিল। কৃষকদের কাছে লাঠি, লোহার রড, কেউ কেউ তরোয়ালও নিয়ে আসে, কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশ কর্মীদের আহত করে।
পেশ হল ২০২১ সালের আর্থিক সমীক্ষা! কোন পথে এগিয়ে যাবে ভারতের অর্থনীতি?