কে এই রাকেশ টিকাইত
দিল্লিতে এই ঘটনার জেরে পুলিশের বিভিন্ন এফআইআরে নাম রয়েছে রাকেশ টিকাইতের। বিকেইউয়ের মুখপাত্র যদিও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে তিনি এখনও প্রতিবাদ শেষ করছেন না এবং তিনি আত্মহত্যা করে তবেই প্রতিবাদের স্থান ছাড়বেন। ১৯৬৯ সালের ৪ জুন মুজফ্ফরনগর জেলার সিসৌলি গ্রামে জন্ম রাকেশের। তাঁর বাবা মহেন্দ্র সিং টিকাইত ছিলেন ভারতীয় কৃষক সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি। কৃষকদের পক্ষে কথা বলা তাই রাকেশ টিকাইতের রক্তেই রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার করমুখেরিতে মহেন্দ্র সিং টিকাইতের নেতৃত্বে কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছিলেন ১৯৮৭ সালে, সেই বছরই প্রতিষ্ঠা হয় ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের। এই আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ২জন কৃষকের মৃত্যুও হয়। এই গুলি চালানোর ঘটনার পরই ভারতীয় কৃষক সংগঠন গঠিত হয় এবং চৌধুরি মহেন্দ্র সিং টিকাইত সভাপতির পদে বসেন। এরপরও মহেন্দ্র সিং টিকাইত তাঁর গোটা জীবনভর ক্রমাগত কৃষকদের অধিকারের জন্য লড়ে গিয়েছে এবং কৃষকদের মসিহা হিসাবে নিজের ভাবমূর্তিকে তুলে ধরেছেন।
পুলিশের চাকরি ছেড়ে কৃষক আন্দোলনে যোগ
মহেন্দ্র সিং টিকাইতের ছেলে রাকেশ টিকাইত আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি সুনীতা দেবীকে বিয়ে করেন। ওই একই বছরে রাকেশ টিকাইত দিল্লি পুলিশে কনস্টেবল হিসাবে যোগ দেন। কিন্তু কৃষকের ছেলে তাই রক্তে প্রতিবাদ-আন্দোলন এ সবকিছুই রয়েছে। সেই তাড়নাতেই ৯০ দশকে রাকেশ টিকাইত দিল্লি পুলিশের কনস্টেবলের চাকরি ছেড়ে তাঁর বাবা মহেন্দ্র সিং টিকাইতের নেতৃত্বে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেন দিল্লির লালকেল্লায়। সেই শুরু তখন থেকে, এরপর রাকেশো তাঁর বাবার পথ অনুসরণ করে এখনও কৃষকদের জন্য লড়ে চলেছেন।
জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব
মহেন্দ্র সিং টিকাইতের মৃত্যুর পর রাকেশ টিকাইত ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্বে আসেন এবং তাংর ভাই নরেশ টিকাইত, যিনি বহুদিন ধরে সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হন। যদিও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সহ সংগঠনকে সঠিকভাবে চালনা করার দায়িত্ব রাকেশ টিকাইতের ওপর।
জেল খেটেছেন ৪৪ বার
কৃষকদের জন্য লড়তে গিয়ে রাকেশ টিকাইত ৪৪ বার জেল খেটেছেন। মধ্যপ্রদেশে তিনি ৩৯ দিনের জন্য জেলে যান। এছাড়াও আখের মূল্য বৃদ্ধি করার দাবি নিয়ে দিল্লিতে সংসদ ভবনের বাইরে প্রতিবাদ করার জন্য তিনি তিহার জেলেও গিয়েছেন। কৃষকদের পক্ষে কথা বলার জন্য তিনি জয়পুরেও জেল খেটেছেন।
রাজনীতিতে আসার চেষ্টা ২ বার
কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি রাকেশ টিকাইত নিজের ভাগ্য ২ বার রাজনীতিতে চেষ্টা করেছেন। ২০০৭ সালে প্রথমবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মুজফ্ফরনগরের খাটোলি বিধানসভা আসনে দাঁড়ান। তিনি ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় লোক দল পার্টির প্রার্থী হন আমরোহা জেলা থেকে। কিন্তু উভয় নির্বাচনেই তিনি হেরে যান। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লিতে ট্র্যাক্টর র্যালির সময় যে হিংসাত্মক ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য দিল্লি পুলিশ এফআইআরে রাকেশ টিকাইতের নাম উল্লেখ করেছে।