হাওড়া: তৃণমূলের অন্যতম শক্ত গড় হাওড়া জেলা। এক সময়ের বাম দুর্গ ঘাসফুলকে ঢেলে সমর্থন করেছে। সেই জেলাতেই তৃণমূলের ঘর ক্রমশ ভেঙেই চলেছে৷ লক্ষ্মীরতন শুক্লার পর শুক্রবার মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজভবনে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বেরোনোর সময় তাঁর চোখে জল কারোর নজর এড়ায়নি৷

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রীসভায় অন্যতম উচ্চশিক্ষিত মন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ১৯৮৮ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক (সাম্মানিক) হন এবং ১৯৯৫ সালে আইআইএমই থেকে এমবিএ পাশ করেন তিনি। দীর্ঘদিন কর্পোরেট সংস্থায় চাকরি করেছেন রাজীব৷

২০১১ সালে তৃণমূলের টিকিটে ডোমজুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম জেতেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেইবার তাঁকে সেচমন্ত্রী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২০১৮ সালে,তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী করে পরে আবার তাঁকে বনমন্ত্রীর দায়িত্বও দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে রাজীব ডোমজুড় কেন্দ্রে নিজের পছন্দের এক নির্দল প্রার্থীকে দাঁড় করিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কল্যাণ ঘোষকে হারিয়ে দিয়েছিলেন।আর তাতেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষাণলে পড়েছিলেন তিনি।

কিছুদিন ধরে দলের বিরুদ্ধে বেসুরো গাইছিলেন রাজীব৷ ৫ ডিসেম্বর তিনি বলেছিলেন, ‘ দলে স্তাবকতা করতে পারলে নম্বর বেশি। ভালকে খারাপ, খারাপকে ভাল বলতে পারি না তাই আমার নম্বর কম। অন্যদের বেশি’। ৭ ডিসেম্বর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে নবান্নর চারপাশে পড়ে ‘কাজের মানুষ কাছের মানুষ পোস্টার’।

১০ ডিসেম্বর কামারপুকুরের সভায় বনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যত মত, তত পথ’। ১৩ ডিসেম্বর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান রাজীব। আলোচনার পর বলেছিলেন, ‘ক্ষোভ থাকতেই পারে। আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নেব৷ শীর্ষ নেতৃত্ব আমাকে ডাকলে আবার আসব৷’ শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের জল্পনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে কাউকে জড়াবেন না৷’

৩রা জানুয়ারি বালিতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘বেশ কিছু নেতা দলের কর্মীদের চাকর বাকর ভেবে তাঁদের ভাবাবেগ নিয়ে খেলেন। এঁদের জবাব কর্মীরাই দেবেন। কর্মীরাই ওই সব নেতাকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন।’ বলেছিলেন বনমন্ত্রী। ৫ জানুয়ারি- মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি৷ ৬ জানুয়ারি, হাওড়া জেলার দায়িত্ব পেয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন ফিরহাদ হাকিমের। ১১ জানুয়ারি ১৬ জানুয়ারি ‘ফেসবুক’ লাইভ করবেন, ঘোষণা করেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

১৬ জানুয়ারি ফেসবুকে যা বলেছিলেন- ‘দলের কর্মীরা শুধু সম্মান চায়। কাজ করতে গিয়ে বাধা পেয়ে মুখ খুলেছি, সেটাকে অন্যায় মনে করি না। এখনও ধৈর্য ধরে আছি৷’

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক লাইভের পরই জল্পনা বাড়ছিল। শেষমেশ জল্পনাই সত্যি হল। ২২ জানুয়ারি, ২০২১ মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

ডিসেম্বর-জানুয়ারি, এই দুমাস রাজীব দল পরিচালনা নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠানে ‘বেসুরো’ গাইছিলেন৷ তারমধ্যেই রাজীবের বিরুদ্ধে পোস্টার পরে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র ডোমজুড়ে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ওই সব ব্যানার-ফ্লেক্সে লেখা ছিল, ‘আর নয় পরিযায়ী, এ বার ভূমিপুত্র চাই’। কোথাও আবার ওই বাক্যের আগে ‘সুটে-বুটে’ শব্দও ব্যবহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডোমজুড়ের বাসিন্দা নন। তাঁর আদি বাড়ি হাওড়া শহরে। বর্তমানে তিনি কলকাতায় থাকেন।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

কোনগুলো শিশু নির্যাতন এবং কিভাবে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়। জানাচ্ছেন শিশু অধিকার বিশেষজ্ঞ সত্য গোপাল দে।