ইছামতীর কোলঘেঁষা পারমাদনে ঘুমিয়ে নীরবতার সৌন্দর্য্য, ঘরের কোণে লুকিয়ে শান্তি
করোনা ভাইরাসের প্রভাব কিছুটা লাঘব হতেই হইহই করে বাহিরমুখী হচ্ছেন ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি। পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্রে বাড়ছে পর্যটকদের চাপ। সতর্ক এবং কড়া হচ্ছে প্রশাসন। সে সব ঝঞ্ঝাট যাদের মোটেই পছন্দ নয়, তাঁরা নিরিবিলিতে ঘুরে আসতেই পারেন বনগাঁর বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এই হরিণালয়ের সৌন্দর্য্য ইতিহাসকে বহন করে চলে।

অবস্থিতি
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমায় ঘুমিয়ে রয়েছে শান্ত, সমাহিত বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বা পারমাদন ফরেস্ট। কলকাতা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থান বনগাঁ শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।

কীভাবে যাবেন
শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে পৌঁছতে হবে বনগাঁ শহরে। বাস কিংবা গাড়িতেও সড়ক পথে কলকাতা থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া শহরে পৌঁছে যাওয়া যায়। মূল শহর থেকে বাস কিংবা ভাড়া করা গাড়িতে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বা পারমাদন ফরেস্টে। অনেকে আবার কলকাতা থেকে নিজস্ব গাড়িতে সরসারি পৌঁছে যান সেই বনে।

ইতিহাস ও জীব বৈচিত্র
৯২ হেক্টরের বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ১৯৬৫ সালে ১৫টি চিত্রা হরিণ আনা হয়েছিল। এক বছর পর গহীন অরণ্যে আরও ২৬টি একই প্রজাতির হরিণ ছাড়া হয়েছিল। বর্তমানে প্রায় ২৫০টি চিত্রা হরিণের ঘর এই পারমাদন ফরেস্ট। ২০০০ সালের বন্যা বহু জৈব প্রাণ কেড়ে না নিলে বনে হরিণের সংখ্যা ৪০০-এর কাছাকাছি পৌঁছে যেত বলে স্থানীয়দের দাবি। হরিণের পাশাপাশি নানা মরসুমের পরিযায়ী পাখিরাও বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের অন্যতম আকর্ষণ।

অন্যান্য আকর্ষণ
কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত এই বনের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে সুন্দরী ইছামতী। নদী অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে ওপার বাংলা। আর জঙ্গলের অন্য পারে উপজাতি অধ্যুষিত মঙ্গলগঞ্জ গ্রামে ইংরেজদের নির্মম অত্যাচারের স্মৃতি বুকে নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে কুখ্যাত নীলকুঠি। যা দেখতে ভিড় জমান পর্যটকরা।
ছবি সৌ:ফেসবুক