হায়দরাবাদ: গাব্বায় ভারতের ‘অজি বধ’-এর অন্যতম নায়ক তিনি৷ অস্ট্রেলিয়ায় সফরচলাকালীন বাবা-কে হারিয়েছিলেন৷ তবুও দেশের কর্তব্য করতে বাবা’র শেষ যাত্রায় সামিল হতে পারেননি৷ কিন্তু সিরিজ শেষ করে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেই বিমানবন্দর থেকে সোজা বাবা’র কবরে প্রার্থনা জানাতে গেলেন মহম্মদ সিরাজ৷
গাব্বায় অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর সিরাজ বলেছিলেন, এটা বাবা’র আশীর্বাদ৷ আর এদিন হায়দরাবাদ বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে না-ঢুকে গাড়ি নিয়ে সোজা চলে যান বাবা’র কবরের কাছে৷ ফুল দিয়ে বাবা’কে শেষশ্রদ্ধা জানান টিম ইন্ডিয়ার এই তরুণ বোলার৷
সিরাজ বলেন, ‘আমি বাড়ি যায়নি৷ বিমানবন্দর থেকে সোজা কবরস্থানে চলে যায়৷ বাবা’র পাশে বসে কিছুক্ষণ সময় কাটায়৷ কথা বলতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু ফুল দিয়ে শেষশ্রদ্ধা জানায়৷ তারপর বাড়ি ফিরি৷ মায়ের সঙ্গে দেখা হতে মা কাঁদতে শুরু করে৷ আমি মাকে সান্তনা দিই৷ আমার অন্য অনুভূতি হচ্ছে৷ মা আমার বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছিল৷ আমি কবে ফিরব, দিন গুনতো৷’
কেরিয়ারের তৃতীয় টেস্টে পাঁচ উইকেট নজির গড়েন সিরাজ৷ টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতীয় এই পেসার৷ সেই সঙ্গে গাব্বায় পঞ্চম ভারতীয় বোলার হিসেবে ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়ে এরাপল্লী প্রসন্ন, বিষেণ সিং বেদী, মদন লাল ও জাহির খানের পাশে জায়গা করে নেন সিরাজ৷
মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে অভিষেক হয় সিরাজের৷ অভিষেকেই বল হাতে নজর কেড়েছিলেন হায়দরাবাদের বছর ছাব্বিশের এই তরুণ৷ সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্টে মাত্র দু’টি উইকেট পেয়েছিলেন৷ ব্রিসবেনে প্রথম ইনংসে একটি মাত্র উইকেট পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৩ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান সিরাজ৷ মাত্র তৃতীয় টেস্টেই এই কৃতিত্ব ছুঁয়ে ফেললেন সিরাজ৷ সিডনিতে তৃতীয় টেস্টে তাঁকে ‘ব্রাউন ডগ’ বল কটাক্ষ করেছিলেন এসসিজি-র দর্শকরা৷ এদিন যেন তাঁর জবাব দিলেন ভারতীয় পেসার৷
এর আগে এরাপল্লী প্রসন্ন, বিষেণ সিং বেদী, মদন লাল এবং জাহির খান গাব্বায় ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন৷ ১৯৬৮ সালে ১০৪ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন প্রসন্ন৷ ১৯৭৭ সালে বেদী ৫৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন৷ একই টেস্টে মদন লাল পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ৭২ রানে৷ ২০০৩ সালে জাহির খান ৯৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন৷
এই পাঁচ উইকেট আশীর্বাদ বলে মনে করেন সিরিজ৷ ম্যাচের পর সিরিজ বলেন, ‘বাবা চাইতেন আমি দেশের হয়ে খেলি৷ বাবার স্বপ্ন সত্যি করতে পেয়েছিল৷ আজকে যে পাঁচ উইকেটে পেয়েছি, তা বাবা’র আশীর্বাদ৷’ চলতি সিরিজের মাঝেই বাবা’কে হারান টিম ইন্ডিয়ার এই তরুণ পেসার৷ কিন্তু দেশের প্রতি কর্ত্যবে অবিচল থেকে বাবা’র শেষকৃত্যে যোগ দিতেও দেশে ফেরেনি সিরাজ৷
চোটের কারণে ব্রিসবেনে সিরিজের চতুর্থ তথা শেষ টেস্টে জসপ্রীত বুমরাহ এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন না-থাকায় ভারতীয় বোলিংয়ে নেতৃত্বে দেন মাত্র ২টি টেস্ট খেলা সিরাজ৷ টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এই ম্যাচে সবচেয়ে অনভিজ্ঞ বোলিং নিয়ে খেলতে নামে ভারত৷ ব্রিসবেন টেস্টের আগে মাত্র চারটি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল ভারতীয় বোলিং লাইন-আপের৷
এই অনভিজ্ঞ বোলিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দু’বার অল-আউট করল ভারত৷ ২০০৮-এর পর প্রথমবার এবং ১৯৮৭ সালের পর থেকে মাত্র তিনবার ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার ২০টি উইকেট তুলতে সক্ষম হয় টিম ইন্ডিয়া৷ প্রথম ইনিংসে ৩৬৯ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ২৯৪ রানে অল-আউট করে দেয় সিরাজ-শার্দুলরা৷ অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে সিরাজ পাঁচটি, শার্দুল ঠাকুর চারটি এবং ওয়াশিংটন সুন্দর একটি উইকেট নেন৷ চলতি সিরিজে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবথেকে বেশি উইকেট নিয়েছেন সিরাজ৷ তিন ম্যাচে সিরাজের ঝুলিতে ১৩টি উইকেট৷
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.