নন্দীগ্রামে সংখ্যালঘু ভোট বনাম ভবানীপুরে অবাঙালি ভোট- কোনটা বাছবেন মমতা
শুভেন্দু অধিকারী চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন, যে কোনও একটা আসন বেছে নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। হয় ভবানীপুর, নয় নন্দীগ্রাম। এরপর নন্দীগ্রামে হারানোর হিসেবও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দুই কেন্দ্রেই দাঁড়াবেন। কিন্তু যদি একটা বাছতেই হয়, কোন কেন্দ্র বাছবেন মমতা? ধন্দ রয়েছে একুশে।

কোন কেন্দ্রটি বেছে নেবেন মমতা?
একুশের লড়াই বেশ টাফ। মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ায় কঠিন হয়েছিল ২০১৯। এবার শুভেন্দু নেই, আরও কঠিন ২০২১। এই অবস্থায় মমতা চমক দিয়েছেন নন্দীগ্রাম থেকে তিনি প্রার্থী হবেন। প্রয়োজনে ভবানীপুর থেকেও লড়বেন তিনি। কিন্তু একটি কেন্দ্র বাছতে হলে কোন কেন্দ্রটি থেকে তিনি লড়তে চাইবেন?

ভবানীপুরে কঠিন, নন্দীগ্রাম কি সহজ?
বিজেপি বলছে, ২০১৯ দেখিয়ে দিয়েছে ভবানীপুরে লড়াই কঠিন। তাই ভয় পেয়ে নন্দীগ্রামে পালাতে চাইছেন তিনি। কিন্তু ভয় যদি পাবেন, তাহলে তো নন্দীগ্রামে যেতেন না মমতা! কারণ শুভেন্দু অধিকারীর ডেরায় তিনি নিশ্চয়ই নিশ্চিন্তে জিততে যাচ্ছেন না। তাঁর নন্দীগ্রাম যাওয়ার মধ্যে একটা বৃহত্তর স্বার্থ রয়েছে।

মমতা দাঁড়ানো মানেই অন্য অঙ্ক কাজ করবে
প্রেস্টিজ ফাইটে মমতা ভবানীপুরের সঙ্গে নন্দীগ্রামে লড়তে গিয়েছেন, বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে, এটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের অধিকাংশ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভবানীপুরে যতই বিজেপি তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলুক, মমতা দাঁড়ানো মানেই অন্য অঙ্ক কাজ করবে। সেখানে ২০১৯-এর অঙ্ক ফেল করবে।

বিজেপি তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে
মমতাকে যদি শুভেন্দুর ডেরায় নন্দীগ্রামে দাঁড়াতে হয়, সেখানে শুভেন্দুপন্থীরা তৃণমূল থেকে মাইনাস হয়ে যাবেন, তা জেনেই লড়াইয়ে নামতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যবধান অনেক থাকলেও বিজেপি তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে বলেই ধরে নিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে শুভেন্দুর ডেরায়।

সংখ্যালঘু ও হিন্দু ভোটের অঙ্ক নন্দীগ্রামে
তবে নন্দীগ্রামে মমতার বড় ভরসা হবে সংখ্যালঘু ভোট। নন্দীগ্রামে সংখ্যালঘু ২৩ শতাংশ। আর ৭৭ শতাংশ হিন্দু। সেক্ষেত্রে ২৩ শতাংশের অধিকাংশের সমর্থন পাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি ৪০ শতাংশ হিন্দু ভোট তৃণমূলের বাক্সে এসেছিল। সেই ভোট ভাগ হবে শুভেন্দু ও মমতার মধ্যে। সেই ভাগের উপর উপর নির্ভর করবে নন্দীগ্রামে মমতার ভাগ্য।

মমতার ভবানীপুরে ফ্যাক্টর অবাঙালি ভোট
আর মমতার ভবানীপুরে ফ্যাক্টর অবাঙালি ভোট। এখানে বিপুল সংখ্যাক অবাঙালি ভোট রয়েছে। লোকসভায় এই অবাঙালি ভোট অনেকটাই টার্ন নিয়েছে বিজেপির দিকে। তৃণমূলকে এখানেও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে। তবে একটাই সহায় প্রার্থীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে এই হিসেব পুরোপুরি খাটবে না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবনা-চিন্তা করেই পদক্ষেপ নিয়েছেন দুই ক্ষেত্রে লড়ার। নিছক আবেগের বশে এই সিদ্ধান্ত নয় বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
মমতার লড়াই কোথায় কঠিন, ভবানীপুর ও নন্দীগ্রামের পরিসংখ্যানে নজর একুশের আবহে