বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে সর্বশেষ মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান এসেছে সেটি উদ্বেগজনক। ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসেবে শনিবার যে সময়ে ‘দুনিয়ার বৃহত্তম টিকা দান কর্মসূচি’ শুরু হলো ভারতে, তখন বিশ্বে করোনায় মোট মৃত্যু ২০ লক্ষ পার করেছে। আর ভারতে মৃত ১ লক্ষ ৫২ হাজারের বেশি।যদিও করোনায় মৃতের তালিকাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে। শনিবার পর্যন্ত এদেশে মৃত্যু হয়েছে ৪ লক্ষের বেশি। দ্বিতীয় ব্রাজিলে মৃত ২ লক্ষের অধিক।

মৃতের খতিয়ানে পরপর উঠে আসছে ইউরোপীয় দেশগুলির নাম। আর এই ইউরোপ থেকেই করোনার বিরুদ্ধে কামান দাগার গোলা অর্থাৎ টিকা এনে ভারতে চলছে বিশ্বের বৃহত্তম যুদ্ধ-অদৃশ্য ঘাতকের বিরুদ্ধে লড়াই। শনিবার ১৬ জানুয়ারি,২০২১ সালের তারিখটি এই মরণ বাঁচন রণক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে চিহ্নিত করা হয়েছিল করোনাভাইরাস। আর ২০২০ সালের ১১ই মার্চ তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানায় এটি ‘বৈশ্বিক মহামারী’।

বিবিসি জানাচ্ছে, ভারতে শনিবার থেকে করোনার টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে। মোট তিন হাজার ছয়টি কেন্দ্রে একই সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি সূচনা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার কোনও দেশে শুরু হলো করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি।

প্রতিটি কেন্দ্রে ১০০ জন করে মোট প্রায় ৩ লক্ষ সামনের সারিতে থেকে করোনা যুদ্ধে লড়াই করা স্বাস্থ্য-কর্মীদের টিকা দেওয়া হবে। ভারতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকাটি অনুমোদন করেছে এবং চলতি বছরের মাঝামাঝি নাগাদ ৩০ কোটি মানুষকে এই টিকা দেওয়া হবে।

টিকা রাজনীতির আন্তর্জাতিক উঠোন:

করোনার মারাত্মক ছোবলে মৃত্যু মিছিল চলেছে। সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রতিষেধক অথবা টিকা বের করা নিয়ে ততপরতা। সর্বপ্রথম ২০২০ সালে ২৪ নভেম্বর রাশিয়া সরকার ঘোষণা করে তাদের তৈরি করোনা প্রতিরোধের টিকা বিশ্বে প্রথম। এর নাম স্পুটনিক ভি (স্পুটনিক ফাইভ)।

শুরু হয় শোরগোল। এর আগে থেকেই বিশ্বজুড়ে টিকা আবিষ্কারের দুই প্রধান প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড ও আমেরিকা দাবি করতে শুরু করে তাদের তৈরি টিকা চূডান্ত ধাপ অতিক্রম করেছে। কিন্তু রুশ টিকা আসরে নামতেই শুরু হয় টিকার ত্রিকৌণিক বিশ্বযুদ্ধ।

আর চিন ছিল নীরব। চিন থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাস নিয়ে সেদেশের গবেষকদের টিকার বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। বিষয়টি বড় আকার নিয়েছে সাম্প্রতিক ইরানের মারাত্মক দাবিতে। ইরান সরকার জানায়, কোনওভাবেই ইংল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টিকা তারা নেবে না। তাদের নিজস্ব টিকাতেই ভরসা বলে জানিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ইরানে প্রয়োগ শুরু হয় চিনের তৈরি সিনোভ্যাক টিকা।

গোটা দুনিয়া যখন রুশ-ব্রিটেন-মার্কিন টিকা নিয়ে বুঁদ, তখন আফ্রিকার একটার পর একটা দেশে নীরবে টিকা কর্মসূচি ও টিকা বাণিজ্য চালিয়ে গিয়েছে চিন। এখন দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের টিকার বহুল প্রয়োগ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ায়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘিরে তীব্র কূটনীতির দ্বন্দ্বে জড়ায় চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভাইরাস ছড়ানো ঘিরে দুপক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করে। তীব্র আন্তর্জাতিক শোরগোল শুরু হয়।

অভিশপ্ত ২০২০ কাটিয়ে সেই ঝগড়ার মাঝে মাস্ক, কিছু ওষুধ ও দূরত্ব বজায় রীতি মেনে যে পেরেছেন নিজেকে রক্ষা করে অন্যের সাহায্যে অল্প হলেও এগিয়েছেন। টিকার জন্য ছিল অধীর প্রতিক্ষা। তার মাঝে এসেছে করোনার নতুন স্ট্রেন। এই নতুন ধারার করোনা তাল ঠুকছে, আর চিনা হোক বা রুশ অথবা ব্রিটিশ মার্কিন, অতি গুরুত্বপূর্ণ টিকা নিয়ে করোনার বিরুদ্ধেই কামান দাগতে শুরু করেছে মানুষ।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.

করোনাকালে বিনোদন দুনিয়ায় কী পরিবর্তন? জানাচ্ছেন, চলচ্চিত্র সমালোচক রত্নোত্তমা সেনগুপ্ত I