মুকুল-দিলীপদের ‘দ্বৈরথে’ অসন্তুষ্ট অমিত শাহ, মিশন একুশে কড়া বার্তা শুভেন্দুদের নিয়ে
নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসন উৎখাত করাই বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে নেমে গোষ্ঠীকোন্দল বরদাস্ত করবে না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষদের ডেকে তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। রাজ্য বিজেপি নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব মেটাতে তাই তৎপর তিনি।

সবাইকে নিয়ে চলতে হবে, সাফ জানালেন শাহ
দিলীপ-মুকুলকে দিল্লিতে ডেকে ফের এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন অমিত শাহ। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, শুক্রবার সন্ধ্যায় অমিত শাহের বাসভবনে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার বৈঠক হয় মূলত দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়কে ঐক্যের বার্তা দিতে। সেখানে দিলীপ-মুকুলের পাশাপাশি বসিয়ে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, শিব প্রকাশ এবং অমিত চক্রবর্তীদের উদ্দেশ্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।

শুভেন্দু দলে নবাগত হলেও সম্মান দিতে হবে, বার্তা
বিজেপি সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অমিত শাহ এই বৈঠকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলার ক্ষমতা দখলই বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য। তাই একসঙ্গে চলতে হবে সবাইকে। গোষ্ঠীকোন্দলকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। সব প্রতিকূলতা শিকেয় তুলে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নবাগতদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে কাজে লাগাতে হবে। ঠারেঠোরে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, শুভেন্দু দলে নবাগত হলেও তাঁকে যথাযথ সম্মান দিতে হবে।

মুকুল তৃণমূল ভাঙছেন, বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব বাসা
রাজ্য সফরে এসে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা বারবার দিয়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু তিনি দিল্লিতে ফিরে যাওয়ার পরই বঙ্গ বিজেপিতে কোন্দল শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রায়শই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। মুকুল রায় যত পুরনো তৃণমূলীদের ভাঙিয়ে আনছেন, ততই বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব বাসা বাঁধছে।

ঐক্য প্রদর্শনে আদি-নব্যদের সামিল করার বার্তা
অমিত শাহ সামগ্রিক নির্দেশ দেওয়ার পরও যে কাজের কাজ কিছু হয়নি, তা দেখে অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই তিনি কালবিলন্ব না করে মুকুল-দিলীপসহ বঙ্গ ব্রিগেডকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে ঐক্য প্রদর্শনের বার্তা দিয়েছেন। সেখানে আদি-নব্য সমস্ত নেতাদের সামিল করার বার্তা দিলেও, তা কতখানি কার্যকর হবে ধোঁয়াশা থেকেই যায়।

দিলীপ ঘোষ আসার আগেই পগার পার মুকুল রায়
সম্প্রতি দিলীপ ঘোষের দিল্লি যাত্রার জন্য হাওড়ায় অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে থাকার কথা ছিল শুভেন্দু অধিকারীরও। হাওড়ার ওই অনুষ্ঠানে পরে সময় দেননি শুভেন্দু। তিনি দলে নতুন এলেও তাঁর গুরুত্ব যে নেহাত কম নয় তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল মুকুলেরও। মুকুল রায় দিলীপ ঘোষ আসার আগেই চলে গিয়েছিলেন। দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে পা না মিলিয়ে সটান গিয়ে বসেছিলেন সমাবেশ ক্ষেত্রে। দিলীপ ঘোষ আসার আগেই তিনি ফিরে যান।

ফাঁক তৈরি হচ্ছে নেতাদের মধ্যে, কড়া নির্দেশ শাহের
তারপর বঙ্গ বিজেপিতে কোথায় কোন কর্মসূচিতে কে কে থাকবেন তা স্থির হত রাজ্য নেতৃত্বের তরফে কেন্দ্রীয়ভাবে। এখন কিন্তু তা হচ্ছে না। যে যার মতো করে স্থানীয় নেতৃত্বকে কর্মসূচির দিনক্ষণ জানিয়ে দিচ্ছেন। কে কোথায় কী কর্মসূচিতে রয়েছেন, তা জানা যাচ্ছে না। আর জানা গেলেও তা একেবারে শেষ মুহূর্তে। ফলে একটা ফাঁক তৈরি হচ্ছে নেতাদের মধ্যে। এসব নিয়েই কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।