'বেসুরো' মন্ত্রীকে বাগে আনতে উদ্যোগ! মমতার এক ফোনেই বাজিমাত
প্রায় প্রতিদিনই 'বেসুরো'দের খোঁজ মিলছে ঘাসফুল শিবিরে। যা নিয়ে তৃণমূল শিবির শিবির শুধু অস্বস্তিতে নয়, চিন্তিতও বটে। এবার সরাসরি 'বেসুরো' মন্ত্রী গৌতম দেবকে (goutam dev) ফোন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। সেই ফোনেই কার্যত সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আলোচনায় সমস্যা মিটে যাওয়া খুশি সবাই।

শুক্রবার ক্ষোভপ্রকাশ গৌতম দেবের
শুক্রবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাজ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। প্রসঙ্গত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথ ঘোষের আগে গৌতম দেব এই দফতেরর মন্ত্রী ছিলেন। এক অনুষ্ঠানে গিয়ে একের পর এক চিঠি দফতরে দেওয়ার পরেও নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির একাধিক রাস্তা সারাইয়ের কাজ না হওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। দফতরের বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ করেছিলেন গৌতম দেব। রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম না করলেও নিশানায় যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীই তা সবাই বুঝতে পেরেছিলেন। একইসঙ্গে গৌতম দেব মুখ্যমন্ত্রী প্রশংসা করেছিলেন। বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া তিনি কৃতজ্ঞ।

সকালেই মুখ্যমন্ত্রীর ফোন
গৌতম দেবের ক্ষোভ সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচার হতেই শোরগোল পড়ে যায় ঘাসফুল শিবিরে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর শুরু করেন শুক্রবারই। প্রথমে ফোন করে কথা বলেন সুব্রত বক্সি। শনিবার সকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেন গৌতম দেবকে। মন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ জানতে চান। জানা গিয়েছেন, গৌতম দেব নিজের ক্ষোভের কারণ মুখ্যমন্ত্রীকে বুঝিয়ে বলেন। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, তিনি দল কিংবা সরকার বিরোধী কথা বলেননি। সংবাদমাধ্যমে তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন গৌতম দেব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও গৌতম দেবের আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে।

জল্পনার কোনও ভিত্তি নেই
রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক দিন ধরেই বেসুরো। এদিন তিনি ফেসবুক লাইভ করে স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি বলেছেন মানুষের সঙ্গে কাজ করতে যেখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব, সেটাই করব। পিছনে ফিরে তাকাতে তিনি পছন্দ করেন না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে গৌতম দেবকে নিয়ে চাপ তৈরির হয়েছিল ঘাসফুল শিবিরে। তবে তা হাল্কা করেছেন গৌতম দেব নিজেই। তিনি বলেছেন, সংবাদ মাধ্যম তাঁর কথায় বেশি গুরুত্ব দিয়ে দিয়েছে। দলের প্রতি তাঁর ক্ষোভ নেই বলেও জানান পর্যটন মন্ত্রী। যতদিন রাজনীতিতে থাকবেন, ততদিন এক প্ল্যাটফর্মে থেকেই কাজ করার চেষ্টা করবেন বলে জানান মন্ত্রী। তাঁকে ঘিরে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল গৌতম দেব। এপ্রসঙ্গে তিনি বলে এইসব জল্পনার কোনও ভিত্তি নেই।

তৃণমূলের তৎপরতা অন্যদের নিয়েও
'বেসুরো' নেতানেত্রীদের নিয়ে তৎপরতা রয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষোভ নিরসনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সফল হয়নি তৃণমূল। কিন্তু শুক্রবার শতাব্দী রায়কে 'সুরে' ফেরাতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। তারপর 'সুরে' ফিরলেন গৌতম দেবও। এর মধ্যে তৃণমূল নেতৃত্বর তরফে হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে শান্ত করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। তাঁদের দুজনের সঙ্গে কথা বলেছেন যথাক্রমে সৌগত রায় এবং অরূপ বিশ্বাস।