মুকুলের বিকল্প তৈরি হয়নি তৃণমূলে! পিকে-অভিষেকদের রসায়ন ব্যর্থ একুশের ভোটে
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বাম-কংগ্রেস জোটের যাবতীয় সম্ভাবনা ধূলিসাৎ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল একাই পেয়েছিল ২১০টিরও বেশি আসন। আর এবারও তেমনি গেরুয়া ঝড় উঠেছে। আর এই সংকট নিরসনে দরকার ছিল মুকুল রায়ের, তার বিকল্প তৈরি করতে পারেনি তৃণমূল।

অভিষেকের উত্থানে পিছনের সারিতে চলে যান মুকুল
২০১৭ সালের নভেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল রায়। মুকুল রায় তখনও ছিলেন দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। কিন্তু তাঁকে সরিয়ে অভিষেককে দলের দু-নম্বর স্থান দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হওয়ায় পিছনের সারিতে চলে যান মুকুল। শেষে দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তারপর দুটি নির্বাচনে দেখা গিয়েছে তৃণমূল মুখ থুবড়ে পড়েছে।

মমতাকে চিন্তাই করতে হয়নি দলের সংগঠন নিয়ে
মুকুল রায় এখনও সেই কথা মনে করিয়ে দেন তৃণমূলকে। তিনি বলেন, আমি যখন ছিলাম, তখন তৃণমূল কী ছিল, আর আমি তৃণমূল ছেড়ে দেওয়ার পর কী হয়েছে অবস্থা দেখুন। সত্যিই মুকুল রায়ের বিকল্প এতদিনেও তৈরি করতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিন্তাই করতে হয়নি দলের সংগঠন মজবুত করে দিয়েছেন মুকুল রায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানতে না পারার জন্য সমস্যা
২০১৭ সালে মুকুল রায় চলে যাওয়ার পর একটা প্রকাণ্ড ফাঁক তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়- এই সমীকরণটা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানতে না পারার জন্য অনেকেই দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। অনেক সিনিয়র লিডার রয়েছেন, যাঁদেরও অভিষেকের নেতৃত্ব সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহলের মত

একুশের আগে দলের মধ্যে কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি হচ্ছে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে ধাক্কা খেয়ে কৌশল নিরূপণের জন্য ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে এনেছেন। তাতে কৌশল নিরূপণ বা প্রচার পরিকল্পনা হয়তো হচ্ছে, কিন্তু দলের মধ্যে যে কমিউনিকেশন গ্যাপ, তা রয়েই যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সমস্যা পূরণ করতে পারবেন না। দলের নেতানেত্রীদের সময় দিতে পারবেন না। কেননা তিনি মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা তৈরি করতে পারেননি মুকুল রায়ের বিকল্প
এতদিন মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় দলের সুপ্রিমো হিসেবে যা যা করণীয় সব করে গিয়েছেন। মুকুল রায় সমস্ত নেতা-নেত্রীদের মনের কথা শুনেছেন, তাঁদের সমস্যার সমাধান করেছেন। সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। কিন্তু সেই কাজ করার এখন লোক নেই তৃণমূলে। মমতা তৈরি করতে পারেননি মুকুল রায়ের বিকল্প। সেটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মুকুলের মতো মুশকিল আসান হতে পারছেন কেউ
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উঠলি লিডার। তিনি উন্নতিও করছেন দ্রুত। কিন্তু মুকুল রায়ের মতো অভিজ্ঞতা দিয়ে সমস্ত মুশকিল আসান ঘটানো এখন তাঁর বাঁ হাতের খেল হয়ে ওঠেনি। ফলে ২০২১-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে নিত্যনতুন সংকট তৈরি হচ্ছে। মুকুল রায়ের কাজ কেউ করতে পারছেন না দলে। মুশকিল আসান হয়ে উঠতে পারছেন কেউ।
বেসুরো হতেই উদ্যোগী তৃণমূল, শতাব্দীর মান ভাঙাতে সাংসদের বাড়িতে দূত হয়ে গেলেন কুণাল