করোনা আবহে ভিন্ন চিত্র গঙ্গাসাগরে, ই-স্নানে পূণ্য লাভ করছেন ৫০ লক্ষ মানুষ!
বুধবারই গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানে শর্তসাপেক্ষে সম্মতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তবে ই-স্নানে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি যারা ই-স্নান করবেন রাজ্যকে তাঁদের উৎসাহ দিতে উপহার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট৷ এদিকে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানে এবার বিশ্বাসের সঙ্গে জয় সচেতনতার। করোনা পরিস্থিতির মাঝেই এবছর গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ফলে সচেতনতার পাঠ পড়িয়ে সফল আয়োজনের ঝক্কি ছিল। কিন্তু মকরস্নানে বিশ্বাসের পাশাপাশি দেখা গেল সচেতনতাও। পঞ্জিকা মতে স্নানের সময় ছিল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা। কিন্তু মাঝরাত থেকেই পুণ্যার্থীরা স্নান শুরু করেন। তাঁদের বিশ্বাস মতো পুজো দিয়ে জলে নেমেছেন এবং উছ্বাসে লাগাম পরিয়ে সচেতনভাবে স্নান সেরেছেন। করেছেন করোনামুক্ত বিশ্বের প্রার্থনা।

করোনা প্যান্ডেমিকের জেরে ভিন্ন চিত্র গঙ্গাসাগরে
বিশ্বাসে ভর করেই ফি বছর মকর সংক্রান্তিতে পুণ্যার্থীদের চল নামে গঙ্গা সাগরে। এবারে চিত্রটা ভিন্ন। করোনা প্যান্ডেমিকের জেরে সরকারের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে ই-স্নানে। মেলাতেও জারি করা হয়েছে একাধিক বিধি নিষেধ। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে জোর দেওয়া হচ্ছে তীর্থযাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়।

ই-স্নান ও ই-দর্শনের ব্যবস্থা
বাড়িতে বসেই যাতে মেলায় অংশ নেওয়া যায় সেদিকে নজর রেখে ই-স্নান ও ই-দর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনের তরফে ই-স্নানের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ই-স্নানের জন্য অর্ডার করেছেন।

গঙ্গাসাগর মেলা বাতিলের দাবি উঠেছিল
কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা বাতিলের দাবি তুলে গত ৪ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মামলা করেন অজয় কুমার দে। এর আগে দুর্গাপুজা, কালীপুজা, জগদ্ধাত্রী, ছট ও পরে বর্ষবরণে যে ভিড় হয় তার উপর রাশ টানতেও হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন অজয় কুমার দে। আজ যার রায়ে শর্তসাপেক্ষে স্নানের অনুমতি দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷

হাইকোর্টের শুনানি
এর আগে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিবের হলফনামায় সন্তুষ্ট ছিল না কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ফের বেলা চারটের সময় রাজ্যের এজিকে পুণ্যস্নানের বিষয়ে রাজ্য কী চিন্তাভাবনা করছে তা পরিষ্কার করে জানানোর নির্দেশ দেয়। যেহেতু এজি জানাতে পারেননি এই বিষয়ে রাজ্য ঠিক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে।

স্নানে সম্মতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট
বুধবার মামলার শুনানিতে এজি বলেন, গঙ্গাসাগরের জল স্যালাইন ওয়াটার, নিরন্তর ঢেউ থাকায় পুণ্যার্থীরা স্নান করলেও খুব একটা অসুবিধা হবে না। কিন্তু, রাজ্যের এই বক্তব্যে তখন সন্তুষ্ট হয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। ফের চারটের সময় মামলার শুনানি হয়। এরপর স্নানে সম্মতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তবে ই-স্নানেই জোর দেওয়ার নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি যারা ই-স্নান করবেন রাজ্যকে তাঁদের উৎসাহ দিতে উপহার দেওয়ার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট৷