ভ্যাকসিন তর্জায় সরগরম বিশ্ব! চিনা ভ্যাকসিন সাইনোভ্যাকের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ব্রাজিলের
ব্রিটেন-আমেরিকার মত ভারতেও শুরু হয়ে গিয়েছে টিকাকরণের প্রক্রিয়া। অন্যদিকে করোনাকে মাথানত করানোর লক্ষ্যে যে এগোচ্ছে চিন, তারও প্রমাণ মিলল সম্প্রতি। ব্রাজিলের এক ট্রায়ালে করোনার চিনা প্রতিষেধক 'করোনাভ্যাক' বেশ ভালো ফল করেছে বলেই সূত্রের খবর। জানা গেছে, প্রায় ৫০.৪% পর্যন্ত কার্যকর এই টিকা আদপে চিনা সংস্থা সাইনোভ্যাকের ভ্যাকসিন। স্বাভাবিকভাবেই এই ভ্যাকসিনকে ঘিরে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে জিনপিং সরকার।

এখনই টিকাকরণের ছাড়পত্র পেতে পারে সাইনোভ্যাক ?
চিনা সংস্থা সাইনোভ্যাক-এর তরফে জানান হয়েছে, মৃত করোনাকোষগুলিকে ব্যবহার করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্রিয় করার কাজ করে 'করোনাভ্যাক' প্রতিষেধক। সূত্রের খবর, করোনায় অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিলে চিনের দু'টি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে। তার মধ্যে 'করোনাভ্যাক' আগের থেকে ভাল ফল করলেও এখনও যে তা ছাড়পত্র পাওয়ার যোগ্য নয়, তা স্পষ্ট জানিয়েছে ব্রাজিলের করোনাবিদরা।

কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন
'করোনাভ্যাক'-এর সাফল্যের হার নিয়ে ধোঁয়াশার মাঝেই ইন্দোনেশিয়া, তুর্কি ও সিঙ্গাপুরের মত দেশ সাইনোভ্যাক-এর প্রতিষেধক চেয়ে পাঠিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে ব্রাজিলের বিউটানটান ইনস্টিটিউট জানায় 'হালকা থেকে তীব্র' করোনা কেসের ক্ষেত্রে করোনাভ্যাক ৭৮% সফল হয়েছে। যদিও মঙ্গলবার পুনরায় ওই একই ইনস্টিটিউটের তরফে জানান হয় যে 'খুব হালকা' কেসগুলিকে সমীক্ষার আওতায় আনা হয়নি। ফলে পরবর্তীতে সামগ্রিক সাফল্যের হার দাঁড়ায় ৫০.৪%-এ, যা বেশ অন্যান্য ভ্যাকসিনের সাফল্যের হারের তুলনায় অনেকটাই কম বলেই মত ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞদের।

করোনাভ্যাক নিয়ে বেকায়দায় চিন
সাফল্যের হার নিয়ে ধোঁয়াশার মাঝেই বিউটানটান ইনস্টিটিউট এও জানিয়েছে, মাঝারি থেকে ভারী করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে নাকি করোনাভ্যাক ১০০% সফল। যদিও বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সফলতার হার দেখিয়েছে করোনাভ্যাক, যা ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে তর্জা। সূত্রের খবর, শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের ভিত্তিতে তুর্কিতে সাফল্যের হার ৯১.২৫% হলেও ইন্দোনেশিয়ায় এই ভ্যাকসিনের সাফল্যের হার নেমে হয় ৬৫.৩%। স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য ক্ষেত্রের মত টিকাকরণের বিষয়েও চিনের বিরুদ্ধে আঙ্গুল উঠতে শুরু করেছে।

ব্রাজিলে বাড়ছে সংক্রমণ, ট্রায়ালের মাঝে দুশ্চিন্তা
ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৮১ লক্ষ আক্রান্তকে নিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা ব্রাজিল সরকারের। এরই মাঝে সাইনোভ্যাক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়ে বাড়ছে সংশয়। সূত্রের মতে, আইনি ফাঁসে ভ্যাকসিন দুটি আটকে থাকায় কবে যে ব্রাজিলে টিকাকরণ শুরু হবে, সে বিষয়ে নিরুত্তর প্রশাসন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, পশ্চিমী ভ্যাকসিনগুলির চাপে কোণঠাসা হচ্ছে চিনের ভ্যাকসিন। সব মিলিয়ে ভ্যাকসিনের রাজনীতিতে যে সরগরম বিশ্ব, তা বলাই বাহুল্য।
প্রতীকী ছবি
কোভিড–১৯–এর ভ্যাকসিন ড্রাইভ দেশে একবছরের বেশি সময় ধরে চলতে পারে, মত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের