ভ্যাকসিন আগমনেও কমছে না আতঙ্ক! 'হার্ড ইমিউনিটি' নিয়ে ফের আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছে হু
জরুরিভিত্তিতে ছাড়পত্র পেয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী অভিযান শুরু করেছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। এই সপ্তাহের শেষেই ভারতে প্রাথমিক ভিত্তিতে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে কেন্দ্র। যদিও এখনই টিকাকরণে সেভাবে যে সুফল মিলবে না, তার ইঙ্গিত দিল হু। গত সোমবার হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন জানিয়েছেন, টিকা প্রদান করলেও অন্তত এ বছরে করোনার বিরুদ্ধে 'গোষ্ঠী প্রতিরোধ' গড়ে ওঠা কার্যত অসম্ভব।

নানা কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে গোষ্ঠী প্রতিরোধের সম্ভাবনা
ভ্যাকসিনের প্রাচুর্য থাকলেও ২০২১-এর মধ্যে 'হার্ড ইমিউনিটি' গড়ে ওঠা সম্ভব নয়, সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন সৌম্যা স্বামীনাথন। আমেরিকা, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর, জার্মানি ছাড়াও ইউরোপের বেশ কিছু দেশ গণ-টিকাকরণের পথে এগোচ্ছে। তার মধ্যেও গোষ্ঠী প্রতিরোধ না তৈরির প্রধান কারণ হিসেবে বিশ্বে ভ্যাকসিনের অসমবন্টন, ভ্যাকসিন সম্পর্কে অসচেতনতা ও ভাইরাসের অভিযোজনকে দায়ী করেছেন হু-এর বিশেষজ্ঞরা।

কোভিড সচেতনতাই একমাত্র চাবিকাঠি
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, জনসংখ্যার একটি বড় অংশের মধ্যে যখন শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়, তখনই তৈরি হয় 'গোষ্ঠী প্রতিরোধ'। স্বাভাবিকভাবেই সৌম্যার কথায় আশঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জনসাধারণের একাংশ। জনগণকে আশ্বস্ত করার উদ্দেশ্যে সৌম্যা জানিয়েছেন, "ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার মত সংস্থা ভ্যাকসিন গবেষণায় অনেকদূর এগিয়ে গেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাবধানতা অবলম্বনের জন্য আমাদের সকলরকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।"

মানুষকে ধৈর্য্য ধরার আর্জি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
আন্তর্জাতিক সূত্রের খবর, সোমবার আমেরিকায় প্রায় ২.৫৪ কোটি ডোজ সরবরাহ হয়েছে। পাশাপাশি জার্মানিতে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষের টিকাকরণ হয়েছে বলে খবর সেদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে। এসবের মাঝেই সৌম্যা স্বামীনাথন মানুষকে আরও একটু ধৈর্য্য ধরার আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, "ভ্যাকসিন শীঘ্রই আসবে। তবে আমাদের এও মাথায় রাখতে হবে যে, প্রতিষেধক প্রয়োগের পূর্বে সবরকমের পরীক্ষানিরীক্ষা ও তথ্য যাচাই করে রাখতেই হবে।"

সারা বিশ্বে 'গোষ্ঠী প্রতিরোধ' গড়ার সংকল্পে হু
বিশ্ব এত সহজে আগের স্বাভাবিক অবস্থায় যে ফিরবে না, সে ইঙ্গিত দিয়েছেন হু-এর 'আউটব্রেক অ্যালার্ট এন্ড রেস্পন্স নেটওয়ার্ক' বিভাগের চেয়ারম্যান ডেল ফিশার। তাঁর মতে, "গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে দরকার 'গোষ্ঠী প্রতিরোধ', আর বিশ্বের অধিকাংশ অংশে তা দেখতে গেলে আমাদের ২০২১-এর শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।" হু-গবেষকদের মতে, গোষ্ঠী প্রতিরোধ গড়ে উঠলেও সীমান্তে প্রহরার অভাবে ঘটে চলেছে সংক্রমণ। এছাড়াও একাধিক দেশের করোনা প্রতিরোধী কর্মসূচীতে খামতির দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি।
বাংলায় এল করোনা ভ্যাকসিন, ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ, জানালেন মুখ্যসচিব