সোলারপুর: “আমি বিশ্বাস করি যে, কেউ কিছু পাওয়ার উপযুক্ত হলে জগতের কোনও শক্তিই তাঁকে বঞ্চিত করতে পারে না।”- স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণীই যেন বাস্তবায়িত হল মহারাষ্ট্রের সোলারপুর জেলার অজ গ্রাম মহাগাঁওয়ের ছেলে রমেশ ঘোলাপের জীবনে৷
লক্ষ্য আর প্রতিভা থাকলে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছনোর পথে কোনও শক্তিই যে বাধা হতে পারে না, সেকথা বিলক্ষণ জানেন রমেশ৷
২০১২ ব্যাচের আইএএস অফিসার রমেশ তাঁর জীবন শুরু করেছিলেন চুরি বিক্রিতে হিসাবে৷ ৯ বছর পর তিনি ঝাড়খণ্ডের এনার্জি ডিপার্টমেন্টের যুগ্মসচিব৷ জীবনের প্রবল উত্থান-পতন দেখেছেন৷ কিন্তু কোনও ঝড়ের মুখেই তিনি থেমে থাকেননি৷ রমেশ যিনি রামু নামেই বেশি পরিচিত, তাঁর জীবন কাহিনী বহু মানুষকেই অনুপ্রাণিত করেছে৷ তাঁর বাবা গোরক্ষ ঘোলাপ একটি সাইকেল মেরামত করার দোকান চালাতেন৷
দোকান থেকে যা উপার্জন হত, তা দিয়ে চলে যেত চারজনের পরিবার৷ কিন্তু অতিরিক্ত মাদকাসক্তিই জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াল৷ অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে ক্রমেই তাঁর শরীর অসুস্থ হতে শুরু করে৷ রামু যখন স্কুলে পড়ে, তখন তাঁদের ফেলে চিরকালের মতো চোখ বোজেন গোরক্ষবাবু৷
এর পর শুরু হয় অন্য লড়াই৷ সংসার চালাতে চুরি বিক্রি শুরু করেন রমেশের মা বিমলা ঘোলাপ৷ দিনভর আশে পাশের গ্রাম ঘুরে ঘুরে চুরি বিক্রি করতেন তিনি৷ ছোট বেলাতেই রমেশের বাম পা পোলিওতে আক্রান্ত হয়েছিল৷ কিন্তু তা সত্বেও তিনি এবং তাঁর ভাই মায়ের কাজে হাত লাগান৷
তাঁরা পথে ঘুরে ঘুরে হাঁক পারতেন, ‘চুড়ি নেবেন চুড়ি?’এর পর পড়াশোনার জন্য তাঁর কাকার বাড়ি চলে যান রামু৷ এডুকেশন নিয়ে ডিপ্লোমা করেন৷ কারণ, সেই সময় একমাত্র এই কোর্সের টাকাই ছিল তাঁদের সাধ্যের মধ্যে৷ এর পর ২০০৯ সালে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং শিক্ষকতা শুরু করেন৷
এর পর ইউপিএসসি পরীক্ষার ট্রেনিং নেওয়ার জন্য পুণে পাড়ি দেন রামু৷ যার জন্য চাকরি ছাড়তে হয় তাঁকে৷ স্বনির্ভর গোষ্ঠী থেকে ছেলেকে পড়ার জন্য টাকা জোগার করে দেন তাঁর মা৷
২০১০ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসলেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি৷ এর পর স্টেট ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কেরিয়ার পরীক্ষায় সফল হন৷ হোস্টেল আর স্কলারশিপ পান রামু৷ এর পর অবশেষে ২০১২ সালে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষায় বাজিমাত করেন৷ এখন তিন ঝাড়খণ্ডের এনার্জি ডিপার্টমেন্টের যুগ্ম সচিব৷
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.