আদৌ নিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি বিচার করতে পারবে কি 'কেন্দ্র ঘনিষ্ঠ' কৃষি কমিটি! ধন্দে কৃষক সমাজ
কেন্দ্রীয় সরকার প্রদত্ত কৃষি আইন লাগু করার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। পরিবর্তে চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যারা যুযুধান কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। আর এখানেই আপত্তি তুলেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সু্প্রিম কোর্ট মনোনীত কমিটির চার সদস্যকে কেন্দ্র ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছে বিবাদী পক্ষ। প্রশ্ন তুলেছে, আদৌ নিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি বিচার করা হবে তো!


কমিটির চার সদস্য কারা
কেন্দ্র ও আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে মধ্যস্থতার জন্য কৃষি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। কমিটিতে কৃষি বিশেষজ্ঞ অশোক গুলাটি, প্রমোদ জোশী, অনিল ঘানওয়াত ও ভূপিন্দর সিং মানের তাবড় ব্যক্তিত্বরা রয়েছেন। যদিও তাঁদের কেন্দ্রের আস্থাভাজন বলে আখ্যা দিয়েছেন কৃষকরা।

মোদী ঘনিষ্ঠ গানাওয়াত ও মান!
মহারাষ্ট্রের বিজেপি-পন্থী কৃষক মঞ্চ শেটকারি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট মনোনীত বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য অনিল গানাওয়াত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের আনা তিন কৃষি আইন সমর্থনে তিনি কথা বলেছিলেন। আইন প্রত্যাহারের বিপক্ষে সরব হয়েছিল শেটকারি সংগঠনও। কমিটির দ্বিতীয় সদস্য ভূপিন্দর সিং মান রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য। তিনি বিজেপি-পন্থী ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের জাতীয় সভাপতিও ছিলেন। দেশের কৃষি আইনে সংশোধন আনার জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারকে মান চিঠি লিখেছিলেন বলে শোনা যায়।

রইল পড়ে দুই
সুপ্রিম কোর্ট মনোনীত কমিটির অন্যতম সদস্য ডক্টর অশোক গুলাটিকে বিশিষ্ট এগ্রোনমিস্ট হিসেবেই চেনে ভারত। দেশের কমিশন ফর এগরিকালচারাল কস্টস অ্যান্ড প্রাইজেস বা সিএসিপি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের কৃষি আইনের পাশে দাঁড়ান বলে শোনা যায়। বিশিষ্ট এগ্রি সাইন্টিস্ট তথা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলেসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সুপারঅ্যানুয়েটেড ডিরেক্টর ডক্টর প্রমোদ কুমার যোশীকে মধ্যস্থতাকারী কমিটির সদস্য করার অর্থ কেন্দ্রকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া বলে মনে করেন কৃষকরা। কারণ তিনিও সংশোধিত কৃষি আইনের পক্ষে সওয়াল করেন বলে শোনা যায়।

অনড় রয়েছেন কৃষকরাও
আন্দোলনমুখী ক্রান্তিকারী কিষাণ ইউনিয়নের প্রধান দর্শন পালের কথায়, কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও মধ্যস্থতায় যেতে রাজি নন। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার দাবি থেকে তাঁরা নড়বেন না বলে সাফ জানিয়েছেন কৃষক নেতা। সরকারের বিরুদ্ধে তাঁরা যেভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, সেভাবেই কর্মসূচি চলবে বলেও জানিয়েছেন ক্রান্তিকারী কিষাণ ইউনিয়নের প্রধান দর্শন পাল।