সৎকারের জন্য টাকা দিতে হবে, কৃষকের দেহ নিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে আজব দাবি প্রতিবেশীদের
বিহারের এক মৃত কৃষকের দেহ সৎকারের জন্য ব্যাঙ্কের কাছে অর্থের দাবি করে বসলেন শ্রমিকের প্রতিবেশীরা। তাঁরাই ওই শ্রমিকের দেহ ব্যাঙ্কে বহন করে নিয়ে আসেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে পুলিশ।

৫৫ বছরের মহেশ যাদব, শাহজাহানপুরের বাসিন্দা, দীর্ঘদিন রোগে ভোগার পর মঙ্গলবার মারা যান। তাঁর কোনও পরিবার নেই। ফলে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা বেশ কয়েক ঘণ্টা পর। গ্রামবাসীরা অর্থ বা কোনও মূল্যবান জিনিস খুঁজতে শুরু করেন তাঁর বাড়িতে, যা দিয়ে ওই শ্রমিকের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু কিছুই খুঁজে পাননি তাঁর ব্যাঙ্কের পাসবুক ছাড়া। যেখানে দেখা গিয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্টে ১.১৮ লক্ষ টাকা রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরেই প্রতিবেশীরা ওই পাসবুক ও যাদবের মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে গ্রামেরই কাছে কানারা ব্যাঙ্কে যান। কিন্তু ওই শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও টাকা দেওয়া যাবে না বলে গ্রামবাসীদের দাবি খারিজ করেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। পুলিশ বলে, 'গ্রামবাসীদের দাবি ছিল যে ব্যাঙ্ক মৃত শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু টাকা দিক যাতে তাঁর সৎকার করা যায়। নয়ত প্রতিবেশীরা তাঁর সৎকার করবেন না।’
স্থানীয় এক পুলিশ অফিসার বলেন, 'ব্যাঙ্কের ওপর ক্রমাগত চাপের সৃষ্টি করেন প্রতিবেশীরা, যার জেরে ব্যাঙ্ক বাদ্য হয় তাঁদের দাবি মানতে। স্থানীয় পুলিশের হস্তক্ষেপে ব্যাঙ্ক টাকা দিতে রাজি হয়।’ কানারা ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন যে অতিরিক্ত নাটকের জেরে ব্যাঙ্ক কর্মীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। কুমার বলেন, 'এই ধরনের ঘটনা প্রথম ঘটল।’ পরিস্থিতি যাতে আরও নাটকীয় মোড় না নিতে পারে ব্যাঙ্ক কর্মীরা নিজেরাই অর্থ সংগ্রহ করেন এবং মহেশ যাদবের শেষকৃত্যের জন্য গ্রামবাসীদের হাতে দশ হাজার টাকা তুলে দেন। মহেশের অ্যাকাউন্টে ১১৮,০০০ রয়েছে। কিন্তু এই অর্থ পাওয়ার নমিনি কাউকে করে যাননি মহেশ এবং টাকার জন্য কোনও দাবিদারও আসেননি। তাই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও অর্থ কাউকে এভাবে দিতে পারে না।
প্রতিবেশীরা অবশেষে মহেশের দেহ ও টাকা নিয়ে ব্যাঙ্ক চত্ত্বর ছেড়ে চলে যান শেষকৃত্যের জন্য। প্রতিবেশী শকুন্তলা দেবী জানিয়েছেন যে যাদবের নিজস্ব কোনও জমি ছিল না এবং তিনি সরকারের থেকেও কোনও সহযোগিতা পাননি। নিজে একাই থাকতেন এবং নিজের রান্না নিজে করে খেতেন।