স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যুর জের! ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের উপর ভ্যাকসিন না প্রয়োগের আর্জি
'কোভ্যাক্সিন' নিয়ে তর্জা অব্যাহত ভারতে। এইবারে আসরে নামল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি (NGOs)। ১৯৮৪ সালে ভোপালে গ্যাস দুর্ঘটনার ভুক্তভোগীদের ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অন্তর্ভুক্ত করার তীব্র বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছে চারটি এনজিও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে লেখা চিঠিতে 'নিয়মবিধির লঙ্ঘন' ও 'স্বেচ্ছাসেবকদের তথ্য ফাঁস-নিরাপত্তার অভাব'-এর মত গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধে। বিশেষজ্ঞমহলের মতে, ট্রায়ালে ভোপালের ৪২ বছর বয়সী এক স্বেচ্ছাসেবক মারা যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর, যার ফলাফল এই চিঠি!

সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলল এনজিওগুলি
ভোপাল গ্যাস পীড়িত মহিলা স্টেশনারি কর্মচারী সঙ্ঘ-এর রাশিদা বি, ভোপাল গ্যাস পীড়িত মহিলা পুরুষ সংঘর্ষ মোর্চা-র নবাব খান, ভোপাল গ্রূপ ফর ইনফরমেশন এন্ড অ্যাকশন-এর রচনা ধীন্গরা ও চিলড্রেন এগেইনস্ট ডাউ কার্বাইড-এর পক্ষ থেকে নৌসিন খান এই চিঠিতে হস্তাক্ষর করেন বলে জানা যায়। চিঠিতে তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, "ভোপালে ভারত বায়োটেকের অনৈতিক ট্রায়ালের জন্য ক্ষতি হয়েছে পীড়িতদের, আর তাই ট্রায়াল বন্ধের পাশাপাশি অবিলম্বে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।"

দুর্বল স্বাস্থ্যের স্বেচ্ছাসেবকদের ট্রায়ালে যুক্ত করার অভিযোগ
আর্থিক বা সামাজিক দিক ছাড়াও শারীরিক দিক থেকেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত ভোপালের একাংশ। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির অভিযোগ, সকল প্রোটোকল নস্যাৎ করে এঁদের ভুল বুঝিয়ে ট্রায়ালের আওতায় এনে ফেলেছে ভারত বায়োটেক। ট্রায়ালে যুক্ত ১৭০০ জনের মধ্যে ৭০০ জনই ইউনিয়ন কার্বাইড দুর্ঘটনার ভুক্তভোগী, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন রাশিদা বি। তাঁর মতে, ট্রায়াল বন্ধ না করলে ৪২ বছরের গ্যাস-পীড়িতের মত মারা যাবেন আরও অনেকেই।

কোভ্যাক্সিন নিয়ে অভিযোগ মানতে নারাজ ভারত বায়োটেক
অন্যদিকে মৃত্যুর কারণ কোভ্যাক্সিন নয়, স্বেচ্ছাসেবক মৃত্যুর প্রসঙ্গে ভারত বায়োটেকের সাফ বক্তব্য তাই। যদিও এরই মধ্যে রাশিদা বি টেনে এনেছেন ১২ বছর আগে ওষুধ সংস্থার ট্রায়ালে ১৩ গ্যাস-পীড়িতের মারা যাওয়ার ঘটনা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির মতে, আইনানুযায়ী ট্রায়ালের আগে স্বেচ্ছাসেবকদলের অডিও ও ভিডিও সম্মতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। রাশিদার অভিযোগ, গ্যাস-পীড়িতদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে ট্রায়াল চালিয়েছে ভারত বায়োটেক। আর তাই ট্রায়ালে মৃতদের ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের দাবিও তুলেছেন তিনি।

পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি
রাশিদার অভিযোগ, শারীরিক অবস্থার অবনতি লক্ষ্য করে ট্রায়ালের মাঝপথে কোনোরকম সুরক্ষা ছাড়াই বাতিল করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের। রাশিদার সহকর্মী শেহজাদি বি এ প্রসঙ্গে একটি সম্পূর্ন অডিট ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন। যদিও আইসিএমআর-এর নিরীক্ষণ ও ডিসিজিআই-এর ছাড়পত্র পাওয়ার পরও কিভাবে ঘটে গেল দুর্নীতি, সে বিষয়ে এখনও সদুত্তর মেলেনি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে।
কৃষকদের জন্যে বড় জয়, আইন সংক্রান্ত সুপ্রিম নির্দেশিকায় বড় ধাক্কা খেল কেন্দ্র!