বিজেপির প্রতি তিতিবিরক্ত গুরুং, একুশে তৃণমূলকে জেতাতে করলেন বিরাট ‘পণ’
বিজেপির প্রতি তিতিবিরক্ত বিমল গুরুং। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থ করেও বিনিময়ে কিছুই পাননি তাঁরা। তাই এবার বিজেপিকে হারানোই তিনি পণ করেছেন। সম্প্রতি কালিম্পংয়ের জনসভায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা সাফ জানিয়েছেন, নিজের জীবন দেবেন, কিন্তু আবার বিজেপিকে সমর্থন করবেন না।

সাতটি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দেবেন গুরুং
বিমল গুরুং বলেন, উত্তরবঙ্গের সাতটি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দেবেন। বিজেপিকে তাঁরা এবার জিততে দেবেন না। উত্তরবঙ্গে তৃণমূলকে জেতানোই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য। গুরুং সংবিধানের অষ্টম তফসিলে দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য কাউন্সিল এবং গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল প্রশাসন এবং নেপালি ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য কংগ্রেসের প্রশংসা করেন। এবং তিনি বলেন, বিজেপি আর নয়, এবার শাসন করার সময় এসেছে কংগ্রেসের।

একটা কথা শুনিয়েই তিন বছর অপেক্ষা করিয়েছে বিজেপি
গুরুংয়ের কথায়, "বিজেপি আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমার জীবন চলে গেলেও আমি বিজেপিকে আর মেনে নেব না। বিজেপির রাজনীতি ছিল আমাকে পাহাড় থেকে দূরে রাখতে। তারা পার্বত্য জনগণের পক্ষে কিছুই করেনি। তবে তারা আমাকে সুরক্ষা দেবে। আমাকে শুধু এই একটা কথা শুনিয়েই তিন বছর অপেক্ষা করিয়ে রেখেছে।

'আমি এবার ব্যালট দিয়েই তাদের জবাব দেব বিজেপিকে'
গুরুং চ্যালেঞ্জ নেন, আমি এবার ব্যালট দিয়েই তাদের জবাব দেব। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্সিয়াং, মাটিগাড়া, মালবাজার, মাদারিহাট এবং কালচিনিতে আমাদের প্রার্থী থাকবে। পাহাড়ের মানুষের দাবি পূরণ করাই আমার লক্ষ্য। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ক্ষমতায় ফিরবেন। স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

বিজেপিকে সমর্থন করে ১২ বছর অতিবাহিত গুরুংয়ের!
বিমল গুরুং বলেন, বিজেপিকে সমর্থন করে ১২ বছর অতিবাহিত করেছি। এর বদলে কিছুই পাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি সমর্থন করেন না এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিনয় তামাং ইতিমধ্যে টিএমসির কাছে রয়েছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বিজেপিকে লক্ষ্য করে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁদের প্রতিশ্রুতিও তো পূরণ করেননি।

বিজেপি প্রতিশ্রুতি পালন করেনি, সরব বিমল গুরুং
মমতার সঙ্গে তাঁর গোপন চুক্তি এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিনয় তামাংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে গুরুং উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। "কে বলে আমি স্বার্থবাদী? যখন আমি পাহাড়ে ফিরেছিলাম ৫০ হাজার জন আমাকে দেখতে এসেছিল। গোর্খাদের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে আমার। বিজেপি প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। আমি বিজেপিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা কবে পালন করবেন?

গুরুং পাহাড়ে ফেরার পরে রাজনৈতিক সমীকরণে বদল
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের নিরিখে আলিপুরদুয়ারের ৯টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু বিমল গুরুং পাহাড়ে ফেরার পরে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে। এবার আদিবাসী ও নেপালি ভোট বিজেপির পক্ষে যাওয়া কঠিন। প্রথমত বিমল গুরুং, দ্বিতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ এখন তৃণমূলের পক্ষে। পাহাড়-ডুয়ার্সের ১৮টি আসন মমতার হাতে তুলে দেওয়ার পণ করেছেন গুরুং।