বর্ধমানঃ একটা সময় বর্ধমান শহরকে বামেদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসাবে দেখা হতো! এমনকি লাল দুর্গ বলা হলেও কম বলা হতো। কিন্তু বামেদের লাল দুর্গের দেওয়াল জুড়ে এখন ঘাসফুল। পূর্ব বর্ধমান জেলার সদরের অন্যতম এলাকা কার্জন গেট। একটা সময় লাল পতাকায় মোড়া থাকত গোটা এলাকা। কিন্তু পরিবর্তনের বাংলায় ধীরে ধীরে সেই ছবি একেবারেই বদলাতে থাকে। কিন্তু বছরের শুরুতেই ফের অন্য ছবি শহরজুড়ে!
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সফরকে ঘিরে গেরুয়া রঙে সেজে উঠল বামেদের একদা এই শক্তঘাঁটি। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ততই এখানে বাড়বে গেরুয়া রঙের দাপট। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে এখন পূর্ব বর্ধমান জেলাকে পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির।
যত বেশি সম্ভব পূর্ব বর্ধমান ও তার আশপাশ এলাকায় পদ্ম ফুল ফোটানোই টার্গেট তাদের। আর সেই কারণেই বর্ধমানকে বেছে নেওয়া নাড্ডা-শাহদের। বর্ধমানে এদিন বঙ্গ বিজেপি শক্তি প্রদর্শন করল কার্জন গেটে। অমিত শাহের রোড শো ঘিরে এদিন সকাল থেকেই সাজো সাজো রব। রোড শো শুরু হতেই লক্ষাধিক মানুষের ভিড়।
এতটাই ভিড় যে কার্যত বারবার আটকে যায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির রথ। আর তা দেখে আত্মবিশ্বাসী নাড্ডার মন্তব্য, ২০০ বেশি আসন নিয়ে বাংলার ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। ভিড়ের দিকে আঙুল দেখিয়ে নাড্ডার প্রশ্ন, মনে হয় এরা বিজেপির কর্মী? সাধারণ বাঙালি। মানুষ বেরিয়ে আসছেন বাড়ি থেকে।
পরিবর্তনের পরিবর্তনের জন্যে মানুষ অপেক্ষা করছে বলে দাবি নাড্ডার। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সফরকে ঘিরে বিশাল বিশাল তোরণ, কার্ট আউট, ফ্লেক্সে ছয়লাপ শহর। একটানা সাড়ে তিন দশক লালে লাল থেকেছে এই শহর। সময়ের ব্যবধানে সেই লাল ফিকে হয়েছে। সবুজ আবির উড়েছে পরিবর্তনে। কিন্তু এভাবে গেরুয়া রঙের এই দাপট আগে দেখেনি ইতিহাস প্রাচীন শহর বর্ধমান।
এবার সেই ছবিই দেখল বর্ধমানের মানুষ। তবে গত লোকসভা নির্বাচনের যে হিসাব তাতে কাটোয়া এবং গলসি বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা এলাকাতেও বিজেপি ভালো ফল করেছে। জামালপুর, মেমারি পূর্বস্থলী উত্তর কালনা বিধানসভা এলাকাতেও তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি।
তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বর্ধমানে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি রীতিমত উদ্বেগে শাসকদল তৃণমূল। এর মধ্যই শাসকের চিন্তা বাড়িয়ে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুনীল কুমার মন্ডলকে দলে টেনেছে বিজেপি। তাঁর সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বহু নেতা-কর্মীরা।
কালনা ও মন্তেশ্বরের বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রও এই মুহূর্তে বিজেপির দখলে। এই অবস্থায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যেকটি আসনেই বিজেপির ফল আশাতীত হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল।
শুধু রাজনৈতিকমহলই নয়, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির আশা, বর্ধমান থেকেই পরিবর্তনের পরিবর্তন দেখবে বাংলা!
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.