রাজ্যে আসাদউদ্দিন, আব্বাস সিদ্দিকিদের মোকাবিলায় দ্বৈত পরিকল্পনা চূড়ান্ত তৃণমূলের
ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি (abbas siddhiqui) ঘোষণা করেছে নতুন দল তৈরি করে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ে নামবেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছে হায়দরাবাদের ভোট কাটুয়া মিম (aimim)। যা নিয়ে প্রথমে তৃণমূলের (trinamool congress) অন্দরে উদ্বেগ তৈরি হলেও, মোকাবিলায় পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলে ঘাসফুল শিবির।
বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়কদের চিঠি পাঠাচ্ছে তৃণমূল! 'ব্যতিক্রম' রইলেন শোভন

২১-এর লক্ষ্যে নতুন রাজনৈতিক দল ও ১০ দলের জোট
প্রথমে ঠিক ছিল ডিসেম্বরে হবে নতুন রাজনৈতিক দল। পরে তা পিছিয়ে হয় জানুয়ারির ১০ তারিখ। পরে আরও পিছিয়ে তা হয় ২১ জানুয়ারি। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি ঘোষণা করেছেন ২১ জানুয়ারি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণার সঙ্গে ১০ দলের রাজনৈতিক জোটের ফ্রন্ট নিয়েও চূড়ান্ত ঘোষণা করবেন। নতুন বছরের শুরুতেই ফুরফুরা শরিফে গিয়ে বৈঠক করেছেন মিম-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। পরে তিনি ঘোষণা করেন , পশ্চিমবঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বেই তারা লড়াই করবেন।

তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা
একদিকে মিম অন্যদিকে আব্বাস সিদ্দিকির দল। দুই দলের সঙ্গে ১০ দলের জোট যে তাদের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে আঘাত হানতে পারে তা বিলক্ষণ জানে ঘাসফুল শিবির। বিশেষ করে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাকে বেছে নেওয়া এবং রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলিতে তারা প্রার্থী দেবে বলে, প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন আব্বাস সিদ্দিকি। প্রথমে ৮০ থেকে ১০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণার পরে তিনি বলেছেন, যেসব কেন্দ্রে ৬০ শতাংশের বেশি মুসলিম ভোটার রয়েছেন, সেই কেন্দ্রগুলিকে টার্গেট করবেন তারা। তবে আব্বাস সিদ্দিকিরা লড়াই করা নিয়ে চূড়ান্ত কিছু না ঘোষণা করলেও, সেই সিদ্ধান্ত যে দলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে আঘাত হানতে পারে, তা ধরে নিয়েই এগোচ্ছে তৃণমূল শিবির। তবে এই আঘাত যতটা সম্ভব কম হয় সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে।

তৃণমূলের অবস্থান
ইতিমধ্যেই আব্বাস সিদ্দিকি এবং মিমের প্রভাব থাকা এলাকাগুলি সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে গিয়েছে পিকের হাতে। তিনিই মূলত ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। এই জোটকে লক্ষ্য করে দ্বিমুখী আক্রমণের পরিকল্প নিয়েছে তৃণমূল শিবির। তাদের তরফে আব্বাস সিদ্দিকির ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হচ্ছে। শুধুমাত্র মুসলমানদের লক্ষ্য করে আব্বাস সিদ্দিকি এগোলে একরকম লক্ষ্য নেওয়া হবে। অন্যদিকে তিনি যদি ধর্ম নিরপেক্ষ অপস্থান নিয়ে দল তৈরি করেন, তাহলে অন্য লক্ষ্য নেওয়া হবে। তবে আব্বাস সিদ্দিকি এবং আসাদউদ্দিনদের কোনওভাবেই হাল্কা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না বলে দলের অন্দরে বার্তা দেওয়া হয়েছে।

নামবেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতারা
অপেক্ষা আব্বাস সিদ্দিকির ঘোষণা পর্যন্ত। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তারপরেই তৃণমূলের তরফে নেমে পড়বেন মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবং প্রাক্তন সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের মতো মুসলিম নেতারা। প্রচার করবেন মুসলিম প্রধান এলাকায় গিয়ে। সাধারণ মানুষকে বোঝাবেন মুসলিমদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কথা। জানা গিয়েছে, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধ তৈরি হলেও তাতে হস্তক্ষেপ করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অন্যদিকে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, জবার দিতে তারা তৈরি। শুধুমাত্র আব্বাস সিদ্দিকির ঘোষণার অপেক্ষা। মুসলিমদের মধ্যে আব্বাস সিদ্দিকি এবং আসাদউদ্দিনরা কোনও রকম ভাঙন ধরাতে পারবে না বলেই দাবি করেছেন তিনি।