শঙ্কর দাস, বালুরঘাট : করোনা কেড়ে নিয়েছে প্রিয়জনদের। কেড়ে নিয়েছে মানুষের রোজগার। মানুষের সাথে মানুষের দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি খেটে খাওয়া মানুষদের একাংশকে নিজেদের দেশের মাটিতেই পরিযায়ী বানিয়ে দিয়েছিলো। করোনার কারণে চারিদিকে শুধুই হাহাকার অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।
অতিমারীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে জারি যুদ্ধের পরিশেষে করোনার ভ্যাকসিন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আসতে চলেছে ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিন প্রদান ও গ্রহণের মহড়া ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে। ড্রাই-রান নামক সেই মহড়া শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরেও অনুষ্ঠিত হল। সত্যিকারের ভ্যাকসিন প্রদান না হলেও গঙ্গারামপুর ও হিলির পাশাপাশি বালুরঘাটে জেলা স্বাস্থ্য ভবনে এই মহড়ায় অংশ নিতে পেরে নতুন করে সব কিছু বেঁচে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন ভলান্টিয়ার্সরা। বালুরঘাটে ভ্যাকসিন গ্রহনকারী হিসেবে ছিলেন নার্স ও কমিউনিটি হেলথ অফিসাররা। ড্রাই-রানে অংশ নিয়ে আপ্লুত তাঁরা সকলেই।
এদিন রাজ্য তথা দেশের অন্যান্য এলাকার পাশাপাশি করোনার ভ্যাকসিনের ড্রাই-রান শুরু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরেও। জেলার হিলি বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর তিনটি কেন্দ্রে ড্রাই রান নামক ভ্যাকসিন প্রদানের মহড়া সম্পন্ন হয়েছে। বালুরঘাটে জেলা স্বাস্থ্য ভবনে বেলা ১২টা নাগাদ ড্রাই রানের সূচনা করেন জেলা শাসক নিখিল নির্মল। উপস্থিত ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকুমার দে সহ চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। ড্রাই রানে প্রত্যেক কেন্দ্রে মোট পঁচিশ জন করে ভলান্টিয়ার্স অংশ নিয়েছেন। যাঁরা করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেছেন। প্রত্যেক কেন্দ্রে পাঁচ জন করে ভ্যাকসিন প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মী মহড়ায় অংশ নেন। কেন্দ্র গুলিতে ওয়েটিং-রুম ভ্যাকসিনেশন-রুম ও অবজার্ভেশন-রুম রয়েছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরবর্তীতে কেউ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাঁদের চিকিৎসার জন্য অবজারভেশন বেডেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রথম পর্যায়ে আঠারো হাজার জনকে দেওয়া হবে করোনার ভ্যাকসিন। বালুরঘাটে জেলা স্বাস্থ্য ভবনে অবস্থিত ডিস্ট্রিক্ট ভ্যাকসিন স্টোরেই কোবিদ ভ্যাকসিন ওয়াক-ইন-কুলার নামক ইউনিটে মজুদ করা হবে। ডিস্ট্রিক্ট স্টোর সেন্টার থেকে সেগুলি জেলার মোট বারোটি কোল্ড চেইন সেন্টারে সরবরাহ করা হবে। এদিন তিনটি কেন্দ্রে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা ড্রাই রান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ভ্যাকসিন গ্রহনকারী ভলান্টিয়ার্স হিসেবে অংশ গ্রহণকারী সিএইচও নবনীতা পান্ডে তনুশ্রী দাস ও রত্না মজুমদাররা জানিয়েছেন যে তাঁদের ভীষণই আনন্দ লাগছে যে অবশেষে ভ্যাকসিনের দ্বারা সকলে মিলে করোনার যুদ্ধে জয়ী হতে চলেছেন। কারণ করোনা পৃথিবীর সবকিছু উলটপালট করে দিয়েছে। বহু প্রতিক্ষার গবেষণার পর ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে। আর সেই ভ্যাকসিন প্রদানের মহড়ায় তারা অংশ নিতে পেরেছেন। ড্রাই রান আসলে মহড়া হলেও এর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। শুধু একটা কথাই বলা যায় পৃথিবী আবার আগের মত স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বাংলার অন্যান্য জেলার পাশাপাশি শুক্রবার সকাল থেকে জলপাইগুড়িতে শুরু হয়েছে কোভিড ভ্যাকসিনের ড্রাই রান। কিভাবে সকলকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তা নিয়ে দিনভর মহড়া চলে জলপাইগুড়িতে।
জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে আয়োজিত কোভিড ভ্যাকসিনের ড্রাই রান মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গেরর করোনা বিষয়ক স্পেশাল অফিসার ডাঃ সুশান্ত রায়।
তিনি জানান, মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এরাজ্যেও খুব শীঘ্রই করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে এই ভ্যাকসিন। প্রাথমিকভাবে উত্তরবঙ্গের প্রায় দেড় লক্ষ স্বাস্থ্য কর্মীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.