একের পর নির্বাচনে কীভাবে ভোট ম্যানেজ তৃণমূলের, হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন শুভেন্দু
নির্বাচন আসলেই ভোট ম্যানেজের কথা উঠে আসে। ভোট ম্যানেজ করতে হয় সব দলকেই, কোথাও না কোথাও। তৃণমূল (trinamool congress) ক্ষমতায় আসার পর বিরোধীরা অভিযোগ করলেন, তা খুব একটা সামনে আসেনি ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচন ছাড়া। কিন্তু তার আগেও যে তৃণমূল ভোট ম্যানেজ করেছে, তা এদিন সবং-এর সভায় জানিয়েদিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (suvendu adhikari)।

সবং-এ জিততেন অন্তরা ভট্টাচার্যই
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে এদিন প্রথমবারের জন্য সবং-এ সভা করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভা থেকে স্বাভাবিক ভাবেই মানস ভুঁইয়াকে আক্রমণ করেন। তবে তিনি সব থেকে বড় যে অভিযোগটি করেন, তা হল ২০১৭ সালের উপনির্বাচন নিয়ে। যেই উপনির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী নিজেই।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মানস ভুঁইয়া ২০১৬ সালে সূর্যকান্ত মিশ্রকে জড়িয়ে ধরে ভোটে জিতেছিলেন। আর পরের বছরেই তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভায় চলে যান। ফলে তাঁর কেন্দ্রে নিজের স্ত্রী গীতারানি ভুঁইয়াকে প্রার্থী করেন। কিন্তু সেই নির্বাচনে গীতারানি ভুঁইয়াকে জেতাতে দায়িত্ব পড়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর ওপরে। সেই দায়িত্ব তিনি পালনও করেছিলেন। এদিন তা নিয়েই খেদ শোনা গেল শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। তিনি বলেন, সেই উপনির্বাচনে জেতার কথা ছিল বিজেপির অন্তরা ভট্টাচার্যের।

ঘাটালে জিতে দিল্লি যেতেন ভারতী ঘোষ
এদিন সবং-এ শুভেন্দু অধিকারী ভাষণ দেওয়ার আগে ভাষণ দেন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি ভারতী ঘোষ। শুভেন্দু অধিকারী এদিন ভারতী ঘোষের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, লক্ষ্মণ শেঠ থেকে শুরু করে কিষেণজি, সোজা করেছিলেন ভারতী ঘোষ। ২০১৯-এর নির্বাচনে ঘাটাল থেকে তাঁরই লোকসভায় যাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানকার ৩০ শতাংশ বুথে রাজ্যের পুলিশ দিয়ে কাজ সেরেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, লোকসভা নির্বাচনে সবং-এ লড়াই করলেও, কেশপুরে ভোট করতে দেয়নি তৃণমূল।

রাজনাথ সিংকে ফোন করে হাওড়া ম্যানেজ
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজনাথ সিংকে ফোন করে হাওড়াও ম্যানেজ করেছিল তৃণমূল। ২০০৯-এ সেখানে সাংসদ হয়েছিলেন অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর মৃত্যুতে ২০১৩ সালে সেখানে উপনির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কড়া লড়াই দেখে তৃণমূলের তরফে সেই সময়কার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংকে অনুরোধ করা হয়েছিল বিজেপির প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিতে। তা করেও ছিল বিজেপি। তার পরে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ২৩ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন সেই কেন্দ্র থেকে। এব্যাপারে শুভেন্দু অধিকারী নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।

বেইমানের পাল্টা দিলেন শুভেন্দু
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তাঁকে বেইমান বলে আক্রমণ করছে তৃণমূল। এদিন একের পর এক ঘটনার কথা উল্লেখ করে, বেইমান কে, নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এদিন বলেন, কংগ্রেস ছেড়ে এসে ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি তৃণমূল গঠন। সেইসময় বিজেপির হাত ধরলেও, ২০০১-এর ভোটের আগে ফের কংগ্রেসের সঙ্গে জোট। আর ভোটের পরে ফের বিজেপি শিবিরে যোগদান করে কয়লামন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালে ধর্মতলায় অনশন ভাঙিয়ে ছিলেন রাজনাথ সিং। ২০১৭ সালেও নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় লালকৃষ্ণ আডবানী, সুষমা স্বরাজরা নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন, তৃণমূলের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু এখন সেই বিজেপিকেই গডসের দল বলে নিশানা করছে তৃণমূল। যার কড়া সমালোচনা করেন শুভেন্দু অধিকারী।
শোভনকে দিয়ে তৃণমূল ভাঙার মাস্টারপ্ল্যান বিজেপির! মমতার 'মুক্তাঞ্চল’-এ এবার হানা