করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের এখনই ভ্যাকসিন নয়, ঝুঁকি বাড়বে অন্যদের , মত রণদীপ গুলেরিয়ার
কোভ্যাকসিন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা–অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনকে ইতিমধ্যেই জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এরই মধ্যে এইমসের ডিরেক্টর ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন যে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে কোভিড–১৯ এর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন নেওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার এক মহড়া এবং এই রোগে আরও ভালো প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ এক ব্যক্তিকে দেওয়া জরুরি। তিনি জানিয়েছেন যে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার দু’সপ্তাহ পর সাধারণত অ্যান্টিবডি গড়ে ওঠে শরীরে।

দেশীয় ভ্যাকসিনও কার্যকর
শীর্ষ পালমোনোলজিস্ট আরও জোর দিয়ে জানিয়েছেন যে অন্য ভারতে চালু হওয়া ভ্যাকসিন অন্য দেশগুলির দ্বারা বিকশিত যে কোনও ভ্যাকসিনের মতোই কার্যকর হবে। কিছুদিনের মধ্যেই আশা করা হচ্ছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগের কাজ শুরু হয়ে যাবে, এরই মধ্যে গুলেরিয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে ভ্যাকসিন ড্রাইভ নিয়ে কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। কখন করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতামূলক, ভ্যাকসিন নেওয়ার কতদিন পর অ্যান্টিবডি গড়ে উঠবে এবং কোভিডে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরও কি ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত, এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন গুলেরিয়া।

ভ্যাকসিনের পুরো ডোজ নেওয়া আবশ্যক
রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পুরো ডোজ নেওয়া আবশ্যক, তবেই সঠিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়া সম্পূর্ণ নিজের স্বেচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। তবে এটা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়া খুব জরুরি, কারণ তবেই তা মারণ ভাইরাস থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সহায়তা করবে এবং এই ভ্যাকসিন ব্যক্তির পুরো পরিবার, বন্ধু ও তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলের নেওয়া দরকার তাতে সংক্রমণ ছড়াবে না।' সক্রিয়

উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের এখনই ভ্যাকসিন নয়
কোভিড-১৯ সংক্রমণযুক্ত কোনও ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া যেতে পারে কিনা সে সম্পর্কে গুলেরিয়া বলেন, ‘সক্রিয় এবং উপসর্গযুক্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমণযুক্ত কোনও ব্যক্তি টিকা দেওয়ার স্থানে অন্যের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং কমপক্ষে ১৪ দিন পর তাঁর শরীরে উপসর্গ চলে গেলে তবেই টিকা দেওয়া নিরাপদ হবে।'

একাধিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভ্যাকসিন নেবে
রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন যে কোনও ব্যক্তি এক বা একাধিক রোগে আক্রান্ত, তাঁদের ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত কারণ তাঁরা উচ্চ ঝুঁকির বিভাগে পড়েন এবং তাদের নিজেদের রক্ষা করা উচিত। তিনি এও জানিয়েছেন যে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বা প্রভাব তাঁদের অন্য ওষুধে কোনও বাধার সৃষ্টি করবে না। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিতভাবে গুলেরিয়া জানান যে এটা সত্যি যে অন্যান্য ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, যেমন হাল্কা জ্বর, ইঞ্জেকশনের জায়গায় ব্যাথা, শরীরে বেদনা সহ অন্যান্য সমস্যা। নিরাপদ ভ্যাকসিন সরবরাহের দিকে অন্যতম পদক্ষেপ হিসাবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সম্পর্কিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মোকাবিলার ব্যবস্থা করতে রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে।

২৮ দিনের ব্যবধানে দু’টি ডোজ
গুলেরিয়া জানান, ২৮ দিনের ব্যবধানে কোনও ব্যক্তিকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজ নেওয়া জরুরি, তবেই ভ্যাকসিনের কোর্স সম্পূর্ণ হবে। তিনি এও জানিয়েছেন যে সরকার ইতিমধ্যেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন গ্রহণ করার তালিকা তৈরি করেছে। যার মধ্যে প্রথমে রয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা ও সামনের সারির কর্মীরা, দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছেন ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে বয়স যাঁদের এবং তৃতীয় নম্বরে ৫০ বছরের কম বয়সের ব্যক্তিরা, যাঁরা একাধিক রোগে আক্রান্ত।

রাজ্যে বাড়ল করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা! ৩ দিন পরে সংক্রমণ ২০০ ছাড়াল কলকাতায়, একনজরে বাকি জেলাগুলি