চিনকে ঠেকাতে ছক কষছেন জয়শঙ্কর, সমীকরণে রয়েছে তামিল আস্থা জয়ের অ্যাজেন্ডাও
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর আজ, মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, তিনদিনের সফরে শ্রীলঙ্কা যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী। সেখানে তিনি বৈঠক করবেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী দীনেশ গুনবর্ধনের সঙ্গে। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সেদেশে আটক থাকা তামিল জেলেদের মুক্তির বিষয়েও আলোচনা করা হতে পারে। তামিলনাড়ুর নির্বাচনের আগে এই ইস্যুটিতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে তামিল মন জয়ের চেষ্টা করতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।

উন্নয়নমূলক কাজে শ্রীলঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ভারত
এছাড়াও ভারতের কাছে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক আরও একটি কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রতিবেশী এই দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক ক্রমশ ভালো হচ্ছে। ওই দেশে কিছু বিনিয়োগও করছে। যা ক্রমশ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ভারতের জন্য। সেই কারণে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বরাবরের মতো সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারতও। উন্নয়নমূলক কাজে শ্রীলঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে থাকবে ভারত।

চিন-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত দিল্লি
বর্তমান শ্রীলঙ্কা সরকারের তরফে এর আগে বলা হয়েছিল, হামবানটোটা বন্দরকে চিনের হাতে ৯৯ বছরের জন্য ইজারা হিসেবে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আর এখন সেই সিদ্ধান্ত বদল করার চেষ্টা চলছে। এই বন্দর নির্মাণের পর যেহেতু অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল, তাই ঋণ শোধ করার জন্য ২০১৬ সালে বন্দরের ৮০ শতাংশ ইজারা দেওয়া হয় চিনের মার্চেন্টস পোর্ট হোল্ডিং কোম্পানিকে।

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের ভালো সম্পর্ক বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ
এই ইজারা দেওয়ার ঘটনাকে কলম্বো নয়াদিল্লির থেকে বেজিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়া হিসেবেই দেখেছেন পর্যবেক্ষকরা। প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের স্বপ্নের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভের মাধ্যমে চিন এই অঞ্চলের দেশগুলিকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে বলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চিনের সমালোচনা করে। এই কারণেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের ভালো সম্পর্ক বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পর্ককে আরও গাঢ় করতে বদ্ধপরিকর ভারত
বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী দীনেশ গুনবর্ধনেই ভারতের বিদেশমন্ত্রীকে সেই দেশে সফর করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেইমতো জয়শংকর আজ, ৫ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা সফরে যান। ৭ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে আসবেন। ২০২১ সালে বিদেশমন্ত্রীর এটাই প্রথম সফর। আর শ্রীলঙ্কাতেও এই বছর প্রথম কোনও বিদেশি অতিথি যাচ্ছেন। এই সফর উপলক্ষে দেওয়া বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই সফর প্রমাণ করছে যে দুই দেশই নিজেদের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গাঢ় করতে বদ্ধপরিকর।