তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্র কলকাতার মেহুল চোকসি, নীরব মোদী! সিবিআই তদন্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য
দেশে নেই যুব তৃণমূলের (trinamool congress) অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্র (vinay mishra)। সিবিআই (cbi) সূত্রে দাবি এমনটাই। গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় তাঁর তিনটি ঠিকানায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। কিন্তু বিনয় মিশ্রে কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এদিক বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন চৌকাঠ পেরোলেই এবার ভাইপো।

তল্লাশি শুরু হতেই কলকাতা ছেড়েছেন বিনয়
বৃহস্পতিবারের তল্লাশি পাওয়া যায়নি বিনয় মিশ্রকে। রাসবিহারীতে তাঁর বাবার হাতে লুক আউট নোটিশ ধরানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর দাবি, গরু ও কয়লা পাচারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হতেই কলকাতা ছেড়েছেন যুব তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্র। সিবিআই সূত্রের আরও দাবি, সেপ্টেম্বরে শেষ বারের জন্য দেশ ছেড়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত সেপ্টেম্বরেই এনামূল হকের বিরুদ্ধে গরু পাচারের মামলা দায়ের করে সিবিআই।

ফেব্রুয়ারি থেকেই বারবার দুবাইয়ে বেশি যাতায়াত
সিবিআই সূত্রের দাবি করা হয়েছে, ২০২০-র ফেব্রুয়ারি থেকেই বারবার দুবাইয়ে গিয়েছেন বিনয় মিশ্র। তিনি শেষবার দেশে এসেছিলেন ৯ সেপ্টেম্বর। এরপর তিনি ১৬ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে যান। এরপর তিনি সরকারিভাবে দেশে ফেরেননি। কিন্তু অন্য কোনওভাবে তিনি দেশে ফিরেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে আরও খবর দুবাইয়ে একটি রিসর্ট কেনার ব্যাপারে কথা চালাচ্ছিলেন বিনয় মিশ্র। তবে তা কি কোনও প্রভাবশালীর জন্য, তাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই। দুবাই ছাড়াই শেষবার দেশ ছাড়ার আগে বিনয় মিশ্র সিঙ্গাপুর এবং ব্যাঙ্ককেও গিয়েছেন। সিবিআই-এর দাবি গরু পাচার চক্রে শুধু রাজনৈতিক নেতাই নন, পুলিশ, আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের একাংশও যুক্ত।

দুবাই প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভাল
সিবিআই সূত্র জানাচ্ছে দুবাই প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে ভাল। ফলে প্রত্যর্পণ নিয়ে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কেননা ইতিমধ্যেই বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই প্রশ্ন তাহলে কি বিনয় মিশ্র কলকাতার মেহুল চোকসি কিংবা নীরব মোদী হয়ে উঠতে চলেছেন? তদন্তের পর সিবিআই সূত্রের দাবি, প্রাথমিক ভাবে কয়লা পাচার কাণ্ডে টাকার অঙ্কটা ১০ হাজার কোটির আশপাশে।

শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ
২০২০ সালের ২৩ জুলাই যুব তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিনয় মিশ্রের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই সময় যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকদের তালিকা দিয়ে টুইট করেছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, সিবিআই কাছাকাছি চলে গিয়েছে। একটা চৌকাঠ পেরোলেই তোলাবাজের বাড়ি। দুদিন আগেও তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এটাই হল ভাইপোর যোগ্য নেতৃত্ব এবং তার যোগ্য টিমের পরিচয়।
যদিও এর পাল্টা হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌগত রায় বলেছেন, শুভেন্দু অধিকারী তো সিবিআই-এর মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। প্রমাণ ছাড়া যেভাবে অভিষেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা অসভ্যতা বলে মন্তব্য করেছেন সৌগত রায়। বিনয় মিশ্র আদৌ তৃণমূলের কোনও পদে ছিলেন কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্ররা।