‘জেনারেশন’ তৈরি করতে গিয়েই শেষ মমতা! একুশের নির্বাচনেই ভবিষ্যৎ অন্ধকার
বামেরা কোনও 'জেনারেশন' তৈরি করতে পারেনি। তাতেই ৩৪ বছর টিকে ছিল সরকার। ৩৪ বছরের সেই 'জগদ্দল পাথর'কে সরিয়ে পরিবর্তনের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ২০১১-য়। তারপর ১০ বছর কাটতে না কাটতেই আসন্ন নির্বাচনেই ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছে শাসক তৃণমূল। 'জেনারেশন' তৈরি করতে গিয়েই শেষ হয়ে যেতে বসেছে তৃণমূল।

২০২১-এর নির্বাচনের প্রাক্কালেই খসে পড়ল ‘ধ্রুবতারা’
তৃণমূলের নিউক্লিয়াক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু নিউক্লিয়াস ছাড়াও দলের যে গুরুত্বপূর্ণ কোষ রয়েছে, তা একে একে ধসে যেতে বসেছে। মুকুল রায় নামক নক্ষত্র খসে পড়েছিল তিন বছর আগে। আর ২০২১-এর নির্বাচনের প্রাক্কালেই আর এক ধ্রুবতারা খসে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে।

অভিষেকের সঙ্গে শুভেন্দুও ছিলেন তৃণমূলের ভবিষ্যৎ
তৃণমূলের আকাশ থেকে সম্প্রতি যে ধ্রুবতারা খসে পড়ছে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর দলের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা তিনি। সম্প্রতি তিনি যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। একটা সময় দলের ভবিষ্যৎ বলতে অভিষেকের সঙ্গে শুভেন্দুর নামও বুঝিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু তারপর দলের জেনারেশন তৈরিই কাল হল তৃণমূলের।

সেকেন্ড ইন কম্যান্ড পোস্টের জন্যই ভবিষ্যৎ টলমল
মুকুল রায় থেকে শুরু করে হালে শুভেন্দু অধিকারীর দল ছাড়ার পিছনে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বর্তমানে তৃণমূলের অলিখিত সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। তাঁকে সেকেন্ড ইন কম্যান্ড করতে গিয়ে মুকুল রায়কে দল থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল। তারপর দলের তৎকালীন সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায়ের হাত ধরে আজ পর্যন্ত বহু তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল, ভবিষ্যৎ কি তবে অন্ধকারেই
এই দলের শেষতম সংযোজন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর হাত ধরে এবার প্রতিদিনই দলবদল ঘটছে। ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। শুভেন্দুর মতোই আরও এক তরুণ-তুর্কি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা চলছে। তাঁকে এদিন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। অথচ তিনি এখনও তৃণমূলে জেলা কো অর্ডিনেটর।

তৃণমূলের ভবিষ্যতে কোপ পড়ায় চাপে সুপ্রিমো মমতাও
এইভাবে দলের সক্রিয় নেতারা যদি নিষ্ক্রিয় হতে থাকে, তবে ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার হবে বলাই বাহুল্য। যতই কর্মীদের উপর ভরসা রাখুক তৃণমূল, নেতা চলে গেলে কর্মীও ফাঁকা হবে। আসন্ন ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ভবিষ্যতে কোপ পড়ায় দলের সুপ্রিমো হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চাপে পড়েছেন বেশ।

তৃণমূলে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি শুভেন্দু বা রাজীবদের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই ঘোষণা করেছেন, তাঁর দলের ভবিষ্যৎ তৈরি। এরপর তৃণমূল সুপ্রিমো ও তৃণমূল নেতৃত্ব যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে তুলে ধরা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। জেলার নেতা হওয়ায় সে অর্থে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি শুভেন্দু অধিকারী বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের। ফলে পরবর্তী প্রজন্মের নেতা হয়েও তাঁরা পিছিয়ে পড়েছেন।

মমতা-পরবর্তী সময় হাল ধরার মতো নেতারা দলছাড়া
মমতা-পরবর্তী সময় হাল ধরার মতো যোগ্যতা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু তাঁকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যখন যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি তা পালন করেছেন দল যখন সমস্যা পড়েছে, তখন সেই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। তারপরও গুরুত্ব পাননি শুভেন্দু। রাজীবরাও সেরকম গুরুত্ব পাননি।

তৃণমূলকে লড়াইয়ের ময়দানে ফিরিয়ে এনেও মর্যাদা নেই
অথচ শুভেন্দু-রাজীবরাই ২০১৯ লোকসভায় দল ধাক্কা খাওয়ার পর উপনির্বাচনে জিততে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিন-তিনটি উপনির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে ফের তৃণমূলকে লড়াইয়ের ময়দানে ফিরিয়ে এনেছিলেন। অথচ দল তারপরও তাঁদের উপর ভরসা রাখেনি, আস্থা রেখেছিল অভিষেক-পিকে জুটির উপর।
অধিকারী পরিবারকে 'মীরজাফর' তকমা ফিরহাদের! শিশির-দিব্যেন্দুদের নিয়ে জল্পনা থামার নাম নেই