চলছে গণতন্ত্র খতমের অভিযান! অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার বিরোধী শূন্য করার ডাকের পাল্টা দিল সিপিএম
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তথা ডায়মন্ড হারবার (diamond harbour) বিরোধী শূন্য করার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (abhishek banerjee) ডাকের কড়া সমালোচনা করল সিপিএম(cpim)। তথ্য দিয়ে সিপিএম-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ডায়মন্ড হারবারে অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। এলাকায় শান্তি ফেরাতে মাফিয়ারাজ খমতের ডাক দেওয়া হয়েছে জেলা সিপিএম-এর তরফে।

বিরোধী শূন্য করার ডাক অভিষেকের
সাতগাছিয়ার পর ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকেও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবারের পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে বিরোধী শূন্য করার ডাক দিয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি তাঁর চ্যালেঞ্জ, তাঁর কেন্দ্রের মধ্যে থাকা সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি অমিত শাহের হাতে তুলে দিয়ে দেখাক। পাশাপাশি তিনি বলেন, বিধানসভা নির্বাচনে জেলা হবে ৩১-০। এর দায়িত্ব তিনি নিচ্ছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩১ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ২৯ টি আর বামেরা ২ টি।

অভিষেককে কটাক্ষ সিপিএম-এর
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ডাককে কটাক্ষ করা হয়েছে সিপিএম-এর তরফে। বলা হয়েছে ২০১৮ সাল থেকেই সেখানে অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। তৃণমূল ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দল সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে না, কেননা সেটাই সাংসদের জারি করা অঘোষিত আইন। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে গণতন্ত্র খতমের অভিযান চলছে বলেও কটাক্ষ করা হয়েছে।

ভোটের ফল তুলনা সিপিএম-এর, পঞ্চায়েতে ৯৩.০৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়
২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ৫০৮৪৮১ এবং বিরোধীদের সম্মিলিত ভোট ৭০১০৮৮। এই বছরেই অভিষেক প্রথমবার ডায়মন্ড হারবার থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ৭০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে ডায়মন্ডহারবার লোকসভার ৭টি বিধানসভার ভোটের ফল, তৃণমূল ৬৫৫৯৯৬, বিরোধীদের সম্মিলিত ভোট ছিল- ৬৭২০৩১।
অন্যদিকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৭২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬৮ টি আসনে তৃণমূল কোনও বিরোধী প্রার্থীকে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে সিপিএম-এর তরফে। সেখানে থাকা ১০৮১ টি আসনের মধ্যে ১০০৬ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। একই পরিস্থিতি পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদেও। পঞ্চায়েত সমিতিতে ২০৮ টি আসনের মধ্যে ১৯৭ এবং জেলা পরিষদের ২০ টির মধ্যে ২০ টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ফলাফলের নিরিখে ৯৩.০৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিল তৃণমূল।

২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রার্থীর ওপরে হামলা
সিপিএম-এর তরফে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ৬ বার আক্রমণ করা হয়েছিল প্রার্থী ফুয়াদ হালিমের ওপরে। সিপিএম কর্মীদের ওপরে ১৭২ টি আক্রমণের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ২ বিধানসভা কেন্দ্র বাদ দিয়ে কোথাও বিরোধী এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি। তাদের অভিযোগ, ৪৬৪ টি বুথ সম্পূর্ণ লুঠ করা হয়েছিল। গোটা রাজ্যের মাফিয়া, গুণ্ডাদের ডায়মন্ড হারবারে জড়ো করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে সিপিএম-এর তরফে। কয়লা মাফিয়া অনুপ মাঝির দলবলও ভোট লুঠে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএম জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী।
পরবর্তী সময়ে ডায়মন্ড হারবারে সিপিএম-এর কর্মসূচিতে যাওয়া সুজন চক্রবর্তী এবং দলীয় কর্মীদের ওপরে হামলা করা হয় তৃণমূলের তরফে। সাম্প্রতিক সময়ে ২৬ নভেম্বর ভারত ধর্মঘটের সমর্থনে হওয়া সভায় হামলা করে স্টেজ ভেঙে দিয়েছিল তৃণমূল। এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে সিপিএম-এর তরফে।

মাফিয়ারাজ বন্ধের ডাক
সিপিএম-এর তরফে এলাকায় মাফিয়ারাজ খতমের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি কারখানা খোলার ডাকও দেওয়া হয়েছে। চোখে চোখ রেখে দম রেখে লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে সিপিএম-এর তরফে। ডায়মন্ড হারবারকে সন্ত্রাস মুক্ত করার ডাকও দেওয়া হয়েছে।